অর্থনীতিএনবিআরকর্পোরেটবিশেষ সংবাদ

মোটরসাইকেল আমদানিতে ‘পাচার’ আর ‘ফাঁকি’

## প্রতি ইউনিটে ১০৪-১৭৪ ডলার এবং ৯.৪৩-৪৩৪ ডলার পর্যন্ত আন্ডার ইনভয়েসি করা হয়েছে
## চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস দিয়ে বেশি ও আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউস দিয়ে কম মূল্যে শুল্কায়ন করেছে
## জায়ান ট্রেডার্স এর আমদানি তথ্য ও বিআইএন-এ ব্যবহৃত ঠিকানায় প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব নেই

বিশেষ প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ঘোষিত মূল্য বেশি। আর আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউসে কম। আমদানিকারক, রপ্তানিকারক, কান্ট্রি অব অরজিন, কান্ট্রি অব এক্সপোর্ট, ব্র্যান্ড, সিসি, মডেল এক ও অভিন্ন। এরপরও চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের চেয়ে আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউসে প্রতি ইউনিট ১০৪ থেকে ১৭৪ ডলার এবং সাড়ে ৯ ডলার থেকে ৪৩৪ ডলার পর্যন্ত কম মূল্য ঘোষণা দিয়ে শুল্কায়ন করা হয়েছে।

মোটরসাইকেল আমদানিতে এমন তুঘলঘি কাণ্ড ঘটেছে। কম মূল্য ঘোষণা (আন্ডার ইনভয়েসিং) দিয়ে একদিকে শুল্ককর ফাঁকি দেয়া হয়েছে, অন্য দিকে অর্থপাচার হয়েছে। জায়ান ট্রেডার্স লিমিটেড ও মটো মোশান বিডি লিমিটেড নামে দুইটি প্রতিষ্ঠানের শুল্ককর ফাঁকি ও অর্থপাচারের প্রমাণ পেয়েছে ঢাকা কাস্টমস রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিশনারেট। সম্প্রতি দুইটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন চেয়ে এনবিআরকে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। রিস্ক ম্যানেজমেন্ট নতুন কমিশনারেট হিসেবে প্রথম এই দুইটি মামলা করেছে। এনবিআর সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

সূত্রমতে, সম্প্রতি কাস্টমস রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিশনারেট গঠিত হয়েছে। নতুন কমিশনারেট হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি পথচলা শুরু হয়েছে। নতুন কমিশনারেট থেকে প্রথম এই দুইটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শুল্ককর ফাঁকি ও আন্ডার ইনভয়েসিং এর তথ্য পেয়েছে। এতে শুল্ককর ফাঁকির অভিযোগে কাস্টমস আইনে ও অর্থ পাচারের অভিযোগ মানি লন্ডারিং আইনে মামলার অনুমোদনের সুপারিশ করে এনবিআরকে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। তবে জনবলের অভাবে প্রতিষ্ঠানটি পুরোপুরি কার্যক্রম শুরু করতে পারছে না বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

জায়ান ট্রেডার্স লিমিটেড এর মামলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রমনা কাকরাইল ৬৭/৯ জায়ান ট্রেডার্স লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ড থেকে ব্র্যান্ডনিউ হোন্ডা, ইয়াহামা ও সুজুকি ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল আমদানি করে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ও কমলাপুর আইসিডি কাস্টম হাউস দিয়ে আমদানি করে আসছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি আন্ডার ইনভয়েসিং এর মাধ্যমে এসব মোটরসাইকেল আমদানি করে আসছে বলে গোপন তথ্য পায় রিস্ক ম্যানেজমেন্ট। কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানটির ১১টি বিল অব এন্ট্রি পর্যালোচনা করে এর সত্যতা পায়। পরে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেয়া কর্মকর্তারা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমদানিকারক জায়ান ট্রেডার্স সম-সাময়িক সময়ে ৬-৭টি বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস দিয়ে একই পণ্য আমদানি করেছে। দুই কাস্টম হাউস দিয়ে ১১টি চালানে আমদানি করা পণ্যের ব্র্যান্ড, মডেল, সিসি, কান্ট্রি অব অরজিন, কান্ট্রি অব এক্সপোর্ট, রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এক ও অভিন্ন। আমদানিকারক চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস দিয়ে যে মূল্য ঘোষণা দিয়ে খালাস নিয়েছে, আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউস দিয়ে এর চেয়ে কম মূল্য ঘোষণা দিয়ে পণ্য খালাস নিয়েছে। অর্থাৎ আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউসের চেয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস দিয়ে খালাস নেয়া পণ্যের মূল্যের ঘোষণা বেশি ছিলো। শুল্কায়ন মূল্য প্রতি ইউনিট পণ্যে ১০৪ ডলার হতে ১৭৪ ডলার পর্যন্ত কম মূল্যের উপর শুল্ককর পরিশোধ করে খোলাস নেয়া হয়েছে। ১১টি চালানে প্রতিষ্ঠানটি মোট ৬৯৬ ইউনিট মোটরসাইকেল আমদানি করে প্রতিষ্ঠান। এতে এক কোটি ২২ লাখ ১৬ হাজার ৯৯৩ টাকা শুল্ককর কম আদায় করা হয়েছে। অর্থাৎ আন্ডার ইনভয়েসিং এর মাধ্যমে শুল্ককর ফাঁকি দেয়া হয়েছে।

অপরদিকে, দুই কাস্টম হাউস দিয়ে আমদানি করা একই পণ্য শুল্কায়ন ও শুল্ককর পরিশোধের ক্ষেত্রে পার্থক্য রয়েছে। দুই কাস্টম হাউস দিয়ে আমদানি করা মোটরসাইকেলের বিল অব এন্ট্রি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, জায়ান ট্রেডার্স ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চট্টগ্রাম কাস্টমস দিয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে ১০০ ইউনিট ব্র্যান্ড নিউ মোটরসাইকেল আমদানি করে। খালাসের জন্য ১০ ফেব্রুয়ারি বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে। প্রতি ইউনিট মোটরসাইকেলের মূল্য এক হাজার ৮৫৪ ডলার ঘোষণা দিয়ে শুল্কায়ন করে খালাস নেয়। একই আমদানিকারক ২০২১ সালের জুন মাসে আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউস দিয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে ৫০ ইউনিট মোটরসাইকেল আমদানি করে। খালাসের জন্য ২২ জুন বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে। প্রতি ইউনিট এক হাজার ৭৫০ ডলার ঘোষণা দিয়ে শুল্কায়ন শেষে খালাস নেয়। মোটর সাইকেলের দুইটি চালানের আমদানিকারক, রপ্তানিকারক, কান্ট্রি অব অরজিন, কান্ট্রি অব এক্সপোর্ট, ব্র্যান্ড, সিসি, মডেল এক ও অভিন্ন। এরপরও চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের চেয়ে আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউসে এই চালানে মূল্য কম দেখিয়ে প্রায় ৬ লাখ ৭৮ হাজার টাকার শুল্ককর ফাঁকি দেয়া হয়েছে। একইভাবে একই আমদানিকারক ২০২১ সালে আরো ৯টি চালানে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের চেয়ে আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউস দিয়ে কম মূল্য ঘোষণা দিয়ে শুল্ককর ফাঁকি দিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আমদানিকারক জায়ান ট্রেডার্স লিমিটেড অপর দুইটি চালানে আরো কম মূল্য ঘোষণা দিয়ে শুল্কায়ন করে মোটরসাইকেল খালাস নিয়েছে। দেখা গেছে, ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস দিয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে ২৪ ইউনিট মোটরসাইকেল আমদানি করে। ১ মে প্রতি ইউনিট এক হাজার ৮৫৪ ডলার ঘোষণা দিয়ে শুল্কায়ন শেষে খালাস নেয়। একই আমদানিকারক একই দেশ থেকে এপ্রিল মাসে আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউস দিয়ে ৯৬ ইউনিট মোটরসাইকেল আমদানি করে। ১৫ এপ্রিল প্রতি ইউনিট এক হাজার ৬৮০ ডলার ঘোষণা দিয়ে শুল্কায়ন শেষে খালাস নেয়। এই দুই চালানের মোটরসাইকেলেরও আমদানিকারক, রপ্তানিকারক, কান্ট্রি অব অরজিন, কান্ট্রি অব এক্সপোর্ট, ব্র্যান্ড, সিসি, মডেল এক ও অভিন্ন। এরপরও চট্টগ্রামের চেয়ে আইসিডি কমলাপুরের চালানে মূল্য কম ঘোষণা দিয়ে প্রায় ২১ লাখ ৮২ হাজার টাকার শুল্ককর ফাঁকি দিয়েছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।

দুই কাস্টম হাউস দিয়ে জায়ান ট্রেডার্স এর আমদানিকারক মোটরসাইকেলের ১১টি চালানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস দিয়ে ১১টি চালানে প্রতি ইউনিট মোটরসাইকেল এক হাজার ৮৫৪ ডলার ঘোষণা দিয়ে খালাস নিয়েছে। কিন্তু একই মোটরসাইকেল আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউস দিয়ে প্রতি ইউনিট ১৮৫৪ ডলার, ১৬৭০ ডলার, ১৬২০ ডলার, ১৫৭০ ডলার ঘোষণা দিয়ে খালাস নিয়েছে। ১১টি চালানে মোট এক লাখ ৪৩ হাজার ৭০৪ ডলার কম মূল্য (আন্ডার ইনভয়েসিং) ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আন্ডার ইনভয়েসিং এর মাধ্যমে এই অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে।

অপরদিকে, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ৯, বড় মগবাজার (নিউ ইস্কাটন রোড, রমনা ঠিকানার মোটরসাইকেল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মটো মোশান বিডি লিমিটেডের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ পায়। এরই ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানটির চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস দিয়ে আমদানি করা ৫টি ও কমলাপুর কাস্টম হাউস দিয়ে আমদানি করা আটটি বিল অব এন্ট্রি পর্যালোচনা করে। এতে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি ২০২২ সালে ছয়টি ও ২০২১ সালে দুইটি বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে মোটরসাইকেল আমদানি করেছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তুলনায় আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউস দিয়ে আমদানি করা মোটরসাইকেল প্রতি ইউনিট ৯ দশমিক ৪৩ ডলার থেকে ৪৩৪ দশমিক শূন্য ৫ ডলার কম মূল্যে শুল্কায়ন করে খালাস নেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস দিয়ে আটটি চালানে প্রতি ইউনিট ৯৭২ দশমিক ৯১ ডলার, ১১০৩ দশমিক শূন্য ৬ ডলার, ৮৮৫ দশমিক ৬২ ডলার, ১১৮৪ দশমিক শূন্য ৮ ডলার, ৮০০ ডলার, ৮৫০ ডলারে খালাস নেয়া হয়েছে। একই মোটরসাইকেল আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউস দিয়ে প্রতি ইউনিট ৮৮৫ দশমিক ৫৬ ডলার, ৮৭০ দশমিক শূন্য ২ ডলার, ৮৭৬ দশমিক ১৯ ডলার, ৭০০ দশমিক শূন্য ৪ ডলার, ৬৯০ ডলার, ৬৭০ ডলার, ৭৫০ ডলার, ৮৭৫ ডলার, ৮৬৪ ডলারে শুল্কায়ন করে খালাস নেয়া হয়েছে। আটটি চালানে প্রতিষ্ঠানটি ২০০ ইউনিট মোটরসাইকেলে ৩৩ হাজার ৮ দশমিক ৫১ ডলার আন্ডার ইনভয়েসিং এর মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেছে। আর আটটি চালানে শুল্ককর ফাঁকি দেয়া হয়েছে ৪৫ লাখ ৬৫ হাজার ৮৬৫ টাকা।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান জায়ান ট্রেডার্স লিমিটেড বিল অব এন্ট্রি ও ভ্যাট রিটার্নে ঠিকানা দেখিয়েছে ৬৭/৯, কাকরাইল, রমনা, ঢাকা-১২১৭। কিন্তু গত বুধবার ওই ঠিকানায় গিয়ে জেহান ট্রেডার্স লিমিটেড এর কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। ইস্টার্ন প্যালেস নামের এই অ্যাপার্টমেন্টের একজন সিকিউরিটি গার্ড জানিয়েছে, জেহান ট্রেডার্স ৬ বা ১৩ তলায় থাকতে পারে। ৬ ও ১৩ তলায় গিয়ে এই ধরনের কোন প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। ওই সিকিউরিটি গার্ড আরো জানিয়েছেন, এই নামে কোন প্রতিষ্ঠান এই ভবনে ছিলো বলে আমার মনে পড়ে না।

অপরদিকে, প্রতিষ্ঠানের বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (বিআইএন) নেয়ার সময় একই ঠিকানা ব্যবহার করেছে। সেখানে মো. রফিকুল ইসলামকে চেয়ারম্যান, রাজিব আহমেদকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পেয়ারা বেগম ও নাজমুন নাহারকে জেহান ট্রেডার্সের পরিচালক হিসেবে দেখানো হয়েছে। চেয়ারম্যান ২০ শতাংশ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ৭০ শতাংশ ও দুই পরিচালকের ৫ শতাংশ করে শেয়ার দেখানো হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স ও আরজেএসসি থেকে নিবন্ধন নেয়া হয়েছে ২০২০ সালে।

প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট ম্যানেজার হিসেবে নাম রয়েছে মো. সাইফুর রহমান। প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সম্পর্কে সাইফুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে আমি এই প্রতিষ্ঠানে নেই। প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা তো জানি না। আমি ছোট চাকরি করতাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে জানতাম না।’ ভ্যাট নিবন্ধনে দেয়া শিমুল নামের একজন কর্মকর্তার নাম দেয়া আছে। কাকরাইলে অফিসের অস্তিত্ব নেই-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অফিস এখন বাংলামটর। আমদানি নেই, ব্যবসা নেই। তাই অফিস নেই। রপ্তানির আড়ালে শুল্ককর ফাঁকি ও অর্থপাচার বিষয়ে বক্তব্য চাইলে তিনি অফিসে যেতে বলেন। এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে জায়ান ট্রেডার্স লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজিব আহমেদ এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। মামলার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি ফোনে এসব কথা বলি না। মামলা হলে সমস্যা নেই, দেখবো।’ টাকা পাচারের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি এটা দেখবো। এ রকম কিছুই করিনি কখনো। এমন কিছু করি নাই……করতে হবে। ওভার ফোনে আমি কথা বলবো না।’

অপরদিকে, শুল্ককর ফাঁকি ও অর্থপাচারের বিষয়ে মটো মোশান বিডি লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী মো. রেজাউল করিম আন্ডার ইনভয়েসিং এর বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আন্ডার ইনভয়েসিং হয়নি। অনেক সময় দেখা যায়, একেক জন সাপ্লাইয়ার একেক রকমভাবে গাড়ি আনা হয়। সেখানে কম-বেশি হয়। আর সেভাবে আমরা ভ্যালু দেখায়। আমরা ইচ্ছে করে আন্ডার ইনভয়েসিং করি না।’

অপরদিকে, জায়ান ট্রেডার্ড বর্তমানে কোন মোটরসাইকেল আমদানি করছে বলে জানিয়েছেন। তবে অ্যাসাইকুডা থেকে প্রতিষ্ঠানের আমদানি তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি মোটরসাইকেল ছাড়াও মোবাইল ফোন (ওয়ান প্লাস), গিফট আইটেম, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও খেলনা সামগ্রী আমদানি করেছে। সর্বশেষ ২০২২ সালের ২৪ মার্চ মাসে ব্র্যান্ড নিউ ১৫০ সিসির ২৪টি হোন্ডা, ৬টি ইয়াহামা ও ১৪টি সুজুকি ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল আমদানি করেছে। ১০ মার্চ ১৫০ সিসির ৩৫টি ইয়াহামা, ১৫৫ সিসির ৮টি ও ৯টি হোন্ডা ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল আমদানি করেছে। এছাড়া ৯ জানুয়ারি ৪৫টি ১৫ সিসির হোন্ডা ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল আমদানি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

মোটরসাইকেল আমদানির আড়ালে শুল্ককর ফাঁকি ও আন্ডার ইনভয়েসিং বিষয়ে এনবিআরের একজন কর্মকর্তা বলেন, শুধু মোটরসাইকেল নয়, অন্যান্য পণ্যের ক্ষেত্রে কম মূল্য ঘোষণা দিয়ে আমদানি করার প্রবণতা বেশি। তবে মোটরসাইকেল এর বিষয়টি গুরুত্বে সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রিস্ক ম্যানেজমেন্ট পুরোপুরি কাজ শুরু করতে পারলে আন্ডার ইনভয়েসিং, শুল্ককর ফাঁকি কমে যাবে।

###

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button