কৃষি ও প্রকৃতি

ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের অগ্রাধিকারভিত্তিক কৃষি-বাজেট চাই

নোয়াখালীতে কৃষি-বাজেট বিষয়ক

বার্তা প্রতিবেদক: করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে প্রভাবে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতি ও খাদ্য মূল্য বৃদ্ধি মোকাবেলা করতে দেশজ কৃষি উৎপাদান বাড়াতে হবে। সেই সাথে খাদ্য চাহিদার মূল যোগানদাতা ক্ষুদ্র-প্রান্তিক কৃষক এবং কৃষাণীদের সরাসরি প্রণোদনা প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। এই জন্য জাতীয় বাজেটে কৃষিখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং নীতি সুরক্ষা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষক এবং সংশ্লিষ্টখাতের ব্যক্তিরা। রোববার (২৯ মে) নোয়াখালীতে গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলন ও পার্টিসিপেটি রিসার্চ অ্যাকশান নেটওয়ার্ক-প্রান আয়োজিত ‘কেমন কৃষি বাজেট চাই’ শীর্ষক পরামর্শ সভায় বক্তারা এই প্রস্তাব করেন।

সভায় বক্তারা বলেন, জলবাযু পরিবর্তনের কারণে কৃষি আজ বিপদাপন্ন তাই আমাদের বৈরী আবহাওয়ার সাথে তাল মিলিয়ে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে হলে কৃষি আধুনিকায়নের বিকল্প নেই; এজন্য কৃষকদের মধ্যে তথ্য এবং যোগাযোগ বাড়াতে হবে। একই সাথে কৃষক তার উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে গিয়ে ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। এর সাথে রয়েছে নিজের পুঁজির অভাব, তেমনি ভূমির অভাব। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে সরকারিভাবে যে সহায়তা দেয়া হয়ে, কৃষকদের সমস্যা আর প্রয়োজনের তুলনায় তা নিতান্তই অপ্রতুল। অনেক ক্ষেত্রে দেয়া যায় এই সহায়তাগুলো চলে যাচ্ছে, ফলে এই সয়াহতা আমদের প্রান্তিক কৃষক যারা প্রকৃত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন, তাদের কাজে আসছেনা। বীজ সহায়তার ক্ষেত্রেও দেখা যায় ফলনের পরিমাণ সন্তষজনক নয়, ফলে কৃষক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।

বক্তারা বলেন, কৃষকরা প্রাইভেট কোম্পানি থেকে বীজ কিনে চাষাবাদ করে, ফলে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এসকল ক্ষেত্রে বাজেট বৃদ্ধি করা গেলে উৎপাদন বাড়বে, উৎপাদন  বাড়লে রপ্তানির সুযোগ তৈরি হবে, এতে করে দেশের অর্থনীতির পাশাপাশি কৃষকরাও লাভবান হবেন। কৃষি বিপনণ কেন্দ্রগুলো ব্যাপকভাবে বৃদ্ধির জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখা জরুরী যা প্রান্তিক কৃষককে তার উৎপাদিত পণ্য সময়মতো বিক্রির সুযোগ তৈরি করে দেবে। অঞ্চলভেদে উপযুক্ত পরিবেশ বিবেচনায় নির্দিষ্ট ফসল ফলন এবং বীজ উৎপাদনের পরিকল্পনা এবং বরাদ্দ জরুরি। প্রতি জেলায় গোডাউনভিত্তিক ঋণ চালু করা, স্থানীয় বাজার ব্যবস্থাকে রিমডেলিং করতে এবং বাজেটে নারী কৃষকদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

পার্টিসিপটরি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক-প্রানের প্রধান নির্বাহী নুরুল আলম মাসুদের সঞ্চালনায় পরামর্শ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শহীদুল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন, নোয়াখালী বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মহিনুজ্জামান এবং এগ্রিকালচার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.মেহেদী হাসান রুবেল। এছাড়াও সভায় অংশ নেন গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট নির্বাহী পরিচালক রাহা নব কুমার, এনআরডিএস নির্বাহী পরিচালক আবদুল আউয়াল, চৌমুহনী সরকারি এসএ কলেজ অধ্যাপক আবুল বাশার, কেন্দ্রিয় কৃষক মৈত্রীর সভাপতি মনির আহমেদ, ইউপি সদস্য রওশন আক্তার লাকী প্রমুখ। সভায় মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করে প্রানের কর্মসূচি সমন্বয়ক উম্মে সালমা। সভায় শিক্ষক, কৃষিবিদ, কৃষক, নারী কৃষক, তরুণ উদ্যোক্তা, শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ নাগরিক সমাজের ব্যক্তিরা অংশ নেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button