১৩৩৯ গাড়ি রিটার্নে নেই, ৪০৯ মালিক রিটার্ন দেন না

বিলাসবহুল ৫২৮৮ গাড়ির সন্ধান

** ৫২৮৮ বিলাসবহুল গাড়ির মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিখ্যাত ল্যাম্বারগিনি, ফেরারি, টেসলা, মাসেরাতি, ক্যাডলি, রোলস রয়েস, বেন্টলি, জাগুয়ার, পোরশে, রেঞ্জ রোভার, অডি, ল্যান্ড রোভার, মার্সেডিজ, বিএমডব্লিউ ও টয়োটা
** ১৩৩৯ গাড়ি মালিক আয়কর রিটার্নে এসব গাড়ি ও গাড়ির বিনিয়োগ প্রদর্শন করেননি, ৪০৯টি গাড়ির মালিক আয়কর রিটার্ন দাখিল করেননি
** ৪৪২টি গাড়ির মালিকানা হস্তান্তর হলেও আয়কর ফাইলে গাড়ির বিনিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে, ১৮৮টি গাড়ি মালিক সঠিকভাবে গাড়ির বিনিয়োগ প্রদর্শন না করায় নথি পুন:উম্মোচন করা হয়েছে
** ১৪৮টি বিলাসবহুল গাড়ি ও গাড়ির বিনিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য গাড়ি নিবন্ধন নেয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান চলতি ২০২৫-২৬ করবর্ষের রিটার্নে প্রদর্শনের কথা
** ৪৩টি গাড়ি মালিক পেইড অ্যাপ ক্যাপিটালের চেয়ে অনেক বেশি দামের গাড়ি কিনলেও সঠিকভাবে কর পরিশোধ করেননি

চট্টগ্রামের একটি কর অঞ্চলের করদাতারা ১৫২টি বিলাসবহুল গাড়ি বিআরটিএ থেকে নিবন্ধন নিয়েছেন। যার মধ্যে ৭০টি গাড়ির মালিক (ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান) এসব গাড়ি কেনার বিষয়টি আয়কর ফাইলে প্রদর্শন করেননি বা দেখাননি। এমনকি আয়কর ফাইলে গাড়িতে বিনিয়োগের বিষয়টিও উল্লেখ করেনি। আবার এই ৭০টি গাড়ির মধ্যে ২১টি গাড়ি নিবন্ধন নিয়েছে বহুজাতিক একটি স্বনামধন্য ও দেশের এক নাম্বার রং উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান। এছাড়া ১৫২টি গাড়ির মধ্যে ২৯টি বিলাসবহুল গাড়ি নিবন্ধন নিয়েছে ওই কর অঞ্চলের আওতাধীন স্বনামধন্য রড়, সিমেন্ট ও তৈরি পোশাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। শুধু চট্টগ্রামের এই কর অঞ্চল নয়, দেশের ৪১টি কর অঞ্চলের একই অবস্থা। এই ৪১টি কর অঞ্চলের ৫ হাজার ২৮৮টি নিবন্ধিত বিলাসবহুল গাড়ির সন্ধান পেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)। বিআরটিএ এর ডাটাবেজ ও আয়কর নথি যাচাই এবং অনুসন্ধানে সিআইসি এসব তথ্য পেয়েছে। ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যে ৪১টি কর অঞ্চলকে গাড়ি ও গাড়ির মালিকের নাম, সার্কেলসহ যাবতীয় তথ্য দেওয়া হয়েছে।

এনবিআর কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিটি গাড়িতে কোটি কোটি টাকার করফাঁকি দেওয়া হয়েছে। বিলাসবহুল গাড়ি কেনা হয়েছে, অথচ রিটার্নে দেখানো হয়নি। আবার অনেক মালিক রিটার্নও দেন না। কিছু গাড়ি রিটার্নে দেখানো হলেও নামমাত্র বিনিয়োগ দেখিয়ে কর পরিশোধ করেছেন। অনুসন্ধানে উঠে আসা সব বিলাসবহুল গাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সিআইসির অনুসন্ধান বলছে, গাড়ির মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিখ্যাত ল্যাম্বরগিনি গাড়ি, বাংলাদেশে শুল্ককরসহ এই গাড়ির মূল্য প্রায় ৩০ কোটি টাকা। এছাড়া গাড়ির তালিকায় আরো রয়েছে- ফেরারি, টেসলা, মাসেরাতি, ক্যাডলি, রোলস রয়েস, বেন্টলি, জাগুয়ার, পোরশে, রেঞ্জ রোভার, অডি, ল্যান্ড রোভার, মার্সেডিজ, বিএমডব্লিউ ও টয়োটা। এই ৫ হাজার ২৮৮টি গাড়ির মধ্যে এক হাজার ৩৩৯টি বিলাবহুল গাড়ির মালিক তাদের আয়কর রিটার্নে গাড়ি কেনা ও গাড়ির বিনিয়োগের তথ্য প্রদর্শন করেননি। ৪০৯টি বিলাসবহুল গাড়ির সন্ধান পেয়েছে, যার মালিকরা আয়কর রিটার্ন-ই দাখিল করেননি। এছাড়া ৪৪২টি গাড়ির মালিকানা হস্তান্তর করা হলেও তা সঠিকভাবে রিটার্নে দেখানো হয়নি। অনুসন্ধানে উঠে আসার পর তালিকা অনুযায়ী ১৮৮টি গাড়ির মালিকের গাড়ি কেনা ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত তথ্যের গরমিল থাকায় আয়কর ফাইল পুন:উম্মোচন বা রি-ওপেন করা হয়েছে। আর সম্প্রতি কেনা ও নিবন্ধন নেয়া ১৪৮টি গাড়ির সন্ধান পেয়েছে সিআইসি, যা চলতি ২০২৫-২৬ করবর্ষের রিটার্নে প্রদর্শনের কথা।

এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, বিভিন্ন করদাতা ও প্রতিষ্ঠান উচ্চ মূল্যের গাড়ি ক্রয় করে বিনিয়োগ গোপন করেছে বা গাড়ির বিনিয়োগ আয়কর ফাইলে দেখাননি বা প্রদর্শন করেননি বলে সিআইসির কাছে অভিযোগ ছিল। এরই প্রেক্ষিতে এনবিআরের এই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা উচ্চ মূল্যের কিছু গাড়ির নিবন্ধন সংক্রান্ত তথ্য বিআরটিএ এর ডাটাবেজ হতে সংগ্রহ করে। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, এসব গাড়ির বিনিয়োগ করদাতা আয়কর নথিতে যথাযথভাবে প্রদর্শন করেছে কিনা-তা যাচাইয়ের জন্য প্রতিটি কর অঞ্চলে পাঠানো হয়েছে।

অনুসন্ধান বলছে, কর অঞ্চল-১, চট্টগ্রামের অধীনে বিআরটিএ থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী বিলাসবহুল গাড়ি নিবন্ধন নিয়েছে ১৫২টি। এর মধ্যে ৭০টি গাড়ির মালিক (ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান) গাড়ি ও গাড়ির বিনিয়োগ আয়কর নথিতে প্রদর্শন করেননি। এই ৭০টি গাড়ির মধ্যে ২১টি গাড়ি নিবন্ধন নিয়েছে একটি বহুজাতিক পেইন্ট বা রং কোম্পানি। ২১টি গাড়ি বিআরটিএ থেকে নিবন্ধন নিলেও ওই কর অঞ্চলের সার্কেল-২ এর করদাতা কোম্পানিটি তাদের আয়কর রিটার্ন প্রদর্শন করেননি। গাড়িগুলোর বেশিরভাগ বিলাসবহুল গাড়ি। এছাড়া এই কর অঞ্চলের আওতাধীন কয়েকটি সার্কেলের কোম্পানি করদাতা প্রতিষ্ঠান ২৯টি গাড়ি নিবন্ধন নিলেও তাদের আয়কর রিটার্নে তা প্রদর্শন করেননি। কোম্পানির মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামভিত্তিক স্বনামধন্য রড় ও ষ্টীল প্রস্তুতকারী কোম্পানি, সিমেন্ট কোম্পানি, পোশাক কারখানা, ফাইন্যান্স কোম্পানি ইত্যাদি। বাকি ২০টি গাড়ির মালিক কয়েকজন ব্যক্তি করদাতা, যাদের বেশিরভাগই ব্যবসায়ী। এই কর অঞ্চলের সাতটি গাড়ি নিবন্ধন হয়েছে, এসব গাড়ির মালিক রিটার্ন দাখিল করেননি। যাদের মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামভিত্তিক একটি কোম্পানির দুইটি গাড়ি ও পাঁচজন ব্যবসায়ীর গাড়ি। ৩টি গাড়ি বিআরটিএ-তে নিবন্ধন হয়েছে, তবে তা ২০২৫-২৬ করবর্ষের রিটার্নে দেখানো হতে পারে।
NBR CIC

সিআইসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, অনুসন্ধানে বিলাসবহুল ৫ হাজার ২৮৮টি গাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি বিলাসবহুল ল্যাম্বরগিনি গাড়ির তথ্য পাওয়া গেছে। ল্যাম্বরগিনি গাড়ির দাম এর মডেল এবং দেশের উপর নির্ভর করে। ভারতে এর দাম প্রায় ৪.৫৭ কোটি রুপি থেকে শুরু করে ৮.৮৯ কোটি রুপি পর্যন্ত হতে পারে। বাংলাদেশে, শুল্ক ও করের কারণে এই গাড়ির দাম অনেক বেশি হয় এবং একটি ল্যাম্বরগিনির দাম সাধারণত ৩০ কোটি টাকার বেশি হতে পারে। এছাড়া বিআরটিএ ডাটাবেজ হতে চারটি ফেরারি গাড়ির নিবন্ধনের তথ্য পাওয়া গেছে। মডেল ও বছর ভেদে একটি ফেরারি গাড়ি ৪ কোটি থেকে ২৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে। পাঁচটি টেসলা গাড়ি নিবন্ধন হয়েছে, প্রতিটি টেসলা গাড়ি মানভেদে ৩৯ থেকে ৪২ হাজার ডলার। এছাড়া ১২টি মাসেরাতি, ১২টি ক্যাডিলাক, ২৫টি রোলস রয়েস, ২৯টি বেন্টলি, ৭১টি জাগুয়ার, ৮১টি পোরশে, ২১৯টি রেঞ্জ রোভার, ৪৮৬টি অডি, ৫০৮টি ল্যান্ড কুজার, ৬৯৫টি জিপ, ৭৭৪টি মার্সিডিজ বেঞ্চ, এক হাজার ২২৭টি বিএমডব্লিউ, ৩ হাজার সিসির উপরে ১ হাজার ৩৩৫টি টয়োটা গাড়ির নিবন্ধনের তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ৫২৮৮টি দামি ও বিলাসবহুল গাড়ির মধ্যে ২ হাজার ৭১৯টি গাড়ি ও গাড়ির বিনিয়োগ করদাতা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন বা দেখিয়েছে। ১ হাজার ৩৩৯টি গাড়ি আয়কর রিটার্নে দেখানো হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর অঞ্চলের সার্কেল থেকে গাড়ি ও গাড়ির বিনিয়োগ না দেখানো এসব আয়কর নথি রি-ওপেন বা পুন:উম্মোচন করা হয়েছে। ৪০৯টি গাড়ির মালিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান রিটার্ন-ই দাখিল করেননি। ৪৪২টি গাড়ির মালিক গাড়ির মালিকানা হস্তান্তর করেছেন। তবে তারা সঠিকভাবে গাড়ির বিনিয়োগ করফাইলে দেখিয়েছে কিনা-তা যাচাই করা হচ্ছে। ১৮৮টি গাড়ির মালিক রিটার্নে গাড়ি প্রদর্শন করলেও, তাতে কোনো করফাঁকি হয়েছে কিনা-তা পুন:তদন্ত করা হচ্ছে। আর ১৪৮টি গাড়ি চলতি করবর্ষে আয়কর রিটার্নে দেখানোর কথা। অর্থাৎ এসব গাড়ি ২০২৪-২৫ করবর্ষে কেনা ও নিবন্ধন হয়েছে। যার ফলে এসব গাড়ি কেনা ও গাড়ির বিনিয়োগ চলতি ২০২৫-২৬ করবর্ষের রিটার্নে দেখানোর কথা। তবে সংশ্লিষ্ট সার্কেলকে বিষয়টি মনিটর করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ৬৭(১২) অনুযায়ী ৪৩টি গাড়ির আয় খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট করদাতার আয়কর নথি পুন:উম্মোচন করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিআরটিএ থেকে নিবন্ধন নেওয়া ঢাকার বৃহৎ করদাতা ইউনিটের করদাতা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ৩০৯টি বিলাসবহুল গাড়ির সন্ধান মিলেছে। এর মধ্যে ১৬৩টি গাড়ি মালিক (ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান) আয়কর রিটার্নে গাড়ি ও গাড়ির বিনিয়োগ প্রদর্শন করেছেন। ১২৩টি গাড়ির মালিক রিটার্নে গাড়ি ও গাড়ির বিনিয়োগ প্রদর্শন করেননি। বিলাসবহুল ১৮টি গাড়ির মালিক রিটার্নই দাখিল করেননি। আর মালিকানা হস্তান্তর করলেও হদিস মিলছে না ২৩টি গাড়ির।

কর অঞ্চল-১, ঢাকার মোট ২২৬টি বিলাসবহুল গাড়ির সন্ধান মিলেছে। এর মধ্যে আয়কর রিটার্ন ফাইলে দেখানো হয়েছে ১২২টি গাড়ি। আর ৬৩টি গাড়ি মালিক তাদের রিটার্নে গাড়ি ও গাড়ির বিনিয়োগ গোপন করেছেন বা গাড়ির তথ্য প্রদর্শন করেননি। বিলাসবহুল ১৮টি গাড়ির মালিক রিটার্নই দাখিল করেননি। মালিকানা হস্তান্তর করলেও হদিস মিলছে না ১৮টির এবং নিবন্ধন নেয়া পাঁচটি গাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে, যা ২০২৫-২৬ করবর্ষে রিটার্নে দেখাতে হবে।

একইভাবে কর অঞ্চল-২, ঢাকার আওতায় ২২৮টি বিলাসবহুল গাড়ির খোঁজ পেয়েছে গোয়েন্দা দল। যার মধ্যে রিটার্ন ফাইলে দেখানো এমন গাড়ির সংখ্যা ১২৪টি। আর ৪৩টি গাড়ির মালিক রিটার্ন দিলেও গাড়ি ও গাড়ির বিনিয়োগ রিটার্নে গোপন করেছে। বিলাসবহুল ১৯টি গাড়ির মালিক রিটার্নই দাখিল করেননি। মালিকানা হস্তান্তর করলেও হদিস মিলছে না ১১টি গাড়ির। নিবন্ধন নেয়া পাঁচটি গাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে, যা ২০২৫-২৬ করবর্ষে রিটার্নে দেখাতে হবে। এবং ১১টি কোম্পানির বিলাসবহুল গাড়ি পাওয়া গেছে, যারা কর ফাঁকি দিয়েছে। কর অঞ্চল-৩, ঢাকার আওতায় মোট ২০৪টি গাড়ির সন্ধান পাওয়া গেয়েছে। এর মধ্যে আয়কর রিটার্ন ফাইলে দেখানো হয়েছে ১০৯টি গাড়ি। আর ৩৩টি গাড়ির মালিক রিটার্নে গাড়ি ও গাড়ির বিনিয়োগের তথ্য গোপন করেছেন। বিলাসবহুল ২০টি গাড়ির মালিক রিটার্ন-ই দাখিল করেননি। মালিকানা হস্তান্তর করেছেন ৮টি, আরও যাচাই প্রয়োজন ১৯টির এবং নিবন্ধন নেয়া সাতটি গাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে, যা ২০২৫-২৬ করবর্ষে রিটার্নে দেখাতে হবে। কর ফাঁকি দেওয়া কোম্পানির ৮টি গাড়ির খোঁজ মিলেছে। কর অঞ্চল-৪, ঢাকার আওতায় সন্ধান পাওয়া মোট ১৭৩টি বিলাসবহুল গাড়ির মধ্যে রিটার্ন ফাইলে দেখানো হয়েছে ১২৬টি গাড়ি। আর ২৮টি গাড়ির মালিক রিটার্নে তথ্য গোপন করেছেন। বিলাসবহুল ৮টি গাড়ির মালিক রিটার্ন-ই দাখিল করেননি। মালিকানা হস্তান্তর করেছেন ৭টির এবং নিবন্ধন নেয়া চারটি গাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে, যা ২০২৫-২৬ করবর্ষে রিটার্নে দেখাতে হবে।

কর অঞ্চল-৫, ঢাকার আওতায় সন্ধান পাওয়া মোট ২৭৫টি বিলাসবহুল গাড়ির মধ্যে রিটার্ন ফাইলে দেখানো হয়েছে মাত্র ১৫৪টি গাড়ি। আর ৬৫টি গাড়ির মালিক রিটার্নে তথ্য গোপন করেছেন। বিলাসবহুল ১২টি গাড়ির মালিক রিটার্ন-ই দাখিল করেননি। মালিকানা হস্তান্তর করেছেন ৩৩টির এবং নিবন্ধন নেয়া ১১টি গাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে, যা ২০২৫-২৬ করবর্ষে রিটার্নে দেখাতে হবে। কর অঞ্চল-৬, ঢাকার আওতায় সন্ধান পাওয়া মোট ২৯১টি বিলাসবহুল গাড়ির মধ্যে রিটার্ন ফাইলে দেখানো হয়েছে ১৫৩টি গাড়ি। আর ৭৩টি গাড়ির মালিক রিটার্নে তথ্য গোপন করেছেন। বিলাসবহুল ৩৪টি গাড়ির মালিক রিটার্ন-ই দাখিল করেননি। মালিকানা হস্তান্তর করেছেন ১৯টির, যাচাইয়ের আওতায় রয়েছে একটি বিলাসবহুল গাড়ি। নিবন্ধন নেয়া ১১টি গাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে, যা ২০২৫-২৬ করবর্ষে রিটার্নে দেখাতে হবে।

কর অঞ্চল-৭, ঢাকার আওতায় সন্ধান পাওয়া মোট ১৯৯টি বিলাসবহুল গাড়ির মধ্যে রিটার্ন ফাইলে দেখানো হয়েছে ১০৫টি গাড়ি। আর ৪৯টি গাড়ির মালিক রিটার্নে তথ্য গোপন করেছেন। বিলাসবহুল ২৮টি গাড়ির মালিক রিটার্ন-ই দাখিল করেননি। মালিকানা হস্তান্তর করেছেন ১৩টির এবং নিবন্ধন নেয়া চারটি গাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে, যা ২০২৫-২৬ করবর্ষে রিটার্নে দেখাতে হবে। কর অঞ্চল-৮, ঢাকার আওতায় সন্ধান পাওয়া মোট ৩৭৫টি বিলাসবহুল গাড়ির মধ্যে রিটার্ন ফাইলে দেখানো হয়েছে ১৫৭টি গাড়ি। আর ৭০টি রিটার্নে তথ্য গোপন, ৪১টি গাড়ির রিটার্ন দাখিল হয়নি। পুন:যাচাইয়ের আওতায় ৮৯টি বিলাসবহুল, নতুন ১৪টি গাড়ির নিবন্ধন এবং কর ফাঁকি সংক্রান্ত কোম্পানি গাড়ি ৪টি। কর অঞ্চল-১০, ঢাকার আওতায় ১৩৬টি বিলাসবহুল গাড়ির মধ্যে রিটার্ন ফাইলে দেখানো ৮৭টি গাড়ি। আর ৩১টি গাড়ির তথ্য রিটার্নে গোপন, ৯টি গাড়ির রিটার্ন নেই, মালিকানা হস্তান্তর ৬টির এবং নতুন ৩টি গাড়ির নিবন্ধনের তথ্য পাওয়া গেছে।

কর অঞ্চল-১১, ঢাকার আওতায় সন্ধান পাওয়া ১৬২টি বিলাসবহুল গাড়ির মধ্যে রিটার্ন ফাইলে দেখানো হয়েছে মাত্র ৪৬টি। ৬১টি রিটার্নে অপ্রদর্শিত, ২৬টি গাড়ির মালিক রিটার্ন দেন না, মালিকানা হস্তান্তর ২১টি, পুন:যাচাইয়ের আওতায় ৫টি বিলাসবহুল এবং নতুন ৩টি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন। কর অঞ্চল-১২, ঢাকার আওতায় খোঁজ পাওয়া ২১৩টি বিলাসবহুল গাড়ির মধ্যে রিটার্ন ফাইলে দেখানো হয়েছে মাত্র ১৩৩টি গাড়ি। ৪৮টি গাড়ি রিটার্নে অপ্রদর্শিত, ২২টি গাড়ির মালিক রিটার্ন দেননি, মালিকানা হস্তান্তর ৫টি এবং নতুন ৫টি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন। কর অঞ্চল-১৩, ঢাকার আওতায় ১২৬টি বিলাসবহুল গাড়ির মধ্যে রিটার্ন ফাইলে দেখানো মাত্র ৬৮টি গাড়ি। ৩০টি রিটার্নে অপ্রদর্শিত, ১২টি গাড়ির মালিক রিটার্ন দেন না, মালিকানা হস্তান্তর ৮টি এবং নতুন ৮টি গাড়ির নতুন রেজিস্ট্রেশন।

একইভাবে কর অঞ্চল-১৪, ঢাকার আওতায় ১৬০টি বিলাসবহুল গাড়ির মধ্যে রিটার্ন ফাইলে দেখানো মাত্র ৮৫টি গাড়ি। ৪৫টি রিটার্নে অপ্রদর্শিত, ২১টি গাড়ির মালিক রিটার্ন দেন না, মালিকানা হস্তান্তর চারটি এবং নতুন ৫টি গাড়ির নতুন রেজিস্ট্রেশন। কর অঞ্চল-১৫, ঢাকার আওতায় ১৪৬টি বিলাসবহুল গাড়ির মধ্যে রিটার্ন ফাইলে দেখানো মাত্র ৮৪টি গাড়ি। ১৯টি রিটার্নে অপ্রদর্শিত, ১০টি গাড়ির মালিক রিটার্ন দেন না, মালিকানা হস্তান্তর ১২টি, পুন: যাচাইয়ের আওতায় ৩টি গাড়ি, নতুন ৯টি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন এবং কর ফাঁকি সংক্রান্ত কোম্পানি গাড়ি ৯টি। কর অঞ্চল-১৬, ঢাকার আওতায় ১২০টি বিলাসবহুল গাড়ির মধ্যে রিটার্ন ফাইলে দেখানো মাত্র ৬৬টি গাড়ি। ১৯টি রিটার্নে অপ্রদর্শিত, ১০টি গাড়ির মালিক রিটার্ন দেন না, মালিকানা হস্তান্তর ১২টি, পুন: যাচাইয়ের আওতায় ৩টি গাড়ি, নতুন ৯টি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন এবং কর ফাঁকি সংক্রান্ত কোম্পানি গাড়ি ৯টি। কর অঞ্চল-১৭, ঢাকার অধীনে ৭৮টি বিলাসবহুল গাড়ির মধ্যে রিটার্ন ফাইলে দেখানো ৪৬টি গাড়ি। ২১টি গাড়ি রিটার্নে অপ্রদর্শিত, ৭টি গাড়ির মালিক রিটার্ন দেন না, নতুন দুইটি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন এবং কর ফাঁকি সংক্রান্ত কোম্পানি গাড়ি দুইটি।

একইভাবে কর অঞ্চল-১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৪ ও ২৫ এর আওতায় যথাক্রমে ৬২, ১০২, ৮৩, ৮৯, ১২৩, ১৬৫, ৪৭ ও ১২৭টিসহ মোট ৭৯৮টি বিলাসবহুল গাড়ির মধ্যে রিটার্ন ফাইলে প্রদর্শিত পাওয়া গেছে মাত্র ৩৩০টি গাড়ি। ২০৬টি গাড়ি রিটার্নে অপ্রদর্শিত এবং ৫৩টি গাড়ির মালিক রিটার্ন দেন না। বাকিগুলোতে অন্যান্য সমস্যা পেয়েছে গোয়েন্দা দল। একইভাবে চট্টগ্রাম, বগুড়া, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, কুমিল্লা, সিলেট, নারায়নগঞ্জ ও গাজীপুর কর অঞ্চলের আওতায় মোট এক হাজার ২৬টি বিলাসবহুল গাড়ির খোঁজ পেয়েছে গোয়েন্দা দল। এর মধ্যে রিটার্ন ফাইলে দেখানো মাত্র ৫৪০টি গাড়ি। গোপন করা হয়েছে এমন গাড়ি সংখ্যা ২৮৭টি এবং ৬৩টি গাড়ির মালিক রিটার্ন-ই দাখিল করেননি। বাকিগুলোতে মালিকানা হস্তান্তর, পুন:যাচাই ও কর ফাঁকিসহ অন্যান্য সমস্যা পাওয়া গেছে।

** ‘ব্র্যান্ডনিউ’ ঘোষণায় ৪৩১ বিলাসবহুল পুরাতন গাড়ি আমদানি!
** শুল্কমুক্ত ২৪ গাড়ি হাতিয়ে নিতে সিন্ডিকেটের ফাঁদ
** আইসিডি কাস্টম হাউস: অডি গাড়ির দামের চেয়ে শুল্ক কম, ঘোষিত মূল্যে শুল্কায়ন
** ইউএনএইচসিআর: ৪৬ গাড়িতে ৫০ কোটি অর্থদণ্ড, গাড়ি চালায় কে?
** ব্র্যান্ড নিউ গাড়িতে অর্থ পাচার, শুল্কায়নে ‘দ্বিচারিতা
** সড়ক দুর্ঘটনার কবলে রোলস রয়েস
** শুল্ক সুবিধায় আনা দামি গাড়ি পড়ে আছে রাস্তায়
** জালিয়াতির ‘ষ্পোর্টস কারের’ দাম মাত্র ৬০ হাজার টাকা!
** তিন শিল্প গ্রুপ ও পাঁচ প্রতিষ্ঠান এনেছে ৮ রোলস রয়েস
** ‘মেঘনা’ ১০ কোটির নিশান দেড় কোটিতে বিক্রি করেছে
** বিএমডব্লিউ আমদানিতে ‘চতুরমুখী’ জালিয়াতি
** মোংলা কাস্টম হাউস: অর্ধেক দামে আমদানি হচ্ছে সুজুকি, হাভাল, এমজি, মিৎসুবিশি
** শুল্কায়ন হয়নি, কিভাবে চললো ৩০০ কিলোমিটার?
** শুল্ককর না দিয়েই ‘রোলস রয়েস’ লুকালেন ব্যবসায়ী শরিফ
** রেঞ্জ রোভার-বিএমডব্লিউতে ১৩ কোটি টাকা জরিমানা
** ৯১ গাড়ির মালিক হিসাব রক্ষক ইকবালের সম্পদ জব্দ
** চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস: অর্ধেক মূল্যে আমদানি ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!