বাড়তি সম্পূরক শুল্ক আগামী সোমবারের মধ্যে প্রত্যাহার করা না হলে পরদিন থেকে ফল আমদানি বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ফারুক সিদ্দিকী ।
তিনি বলেন, সম্পূরক শুল্কের কারণে তাদের ব্যবসা চালানো সম্ভব হচ্ছে না, প্রতি চালানে ‘আর্থিক লোকসানে’ পড়তে হচ্ছে। বিগত সময়ে প্রতি ট্রাক ফল যেখানে একদিনে বিক্রি করা সম্ভব ছিল, এখন ৩-৪ দিনেও বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে পোর্ট থেকে পণ্য খালাস করা সম্ভব হচ্ছে না। আবার শিপিং ও পোর্টে ডেমারেজ গুনতে হচ্ছে। তাই সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার না করলে মঙ্গলবার থেকে বাংলাদেশের সব স্থল ও নৌ বন্দর হতে আমদানিকৃত তাজা ফল খালাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে।
গত ৯ জানুয়ারি এনবিআর ফল আমদানির ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ নির্ধারণ করে। এর ফলে প্রতি কেজি ফলের শুল্ক ১০১ টাকা থেকে বেড়ে ১১৬ টাকায় দাঁড়িয়েছে। ফল আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধির ফলে বছরে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হবে বলে মনে করে এনবিআর। দুই মাসের ব্যবধানে কেজি প্রতি ফলের দাম ৩০-৪০ টাকা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন খুচরা পর্যায়ের ক্রেতারা।
ফারুক সিদ্দিকী বলেন, দেশে ফল উৎপাদন হয় চাহিদার ৩৫-৪০ শতাংশ। বাকি ৬০-৬৫ শতাংশ তাজা ফল বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। সাধারণত ব্যবসায়ীরা ব্যাংক লোনের মাধ্যমে ব্যবসা করেন। বর্তমানে ব্যাংকের সুদ হার সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। মূল্যস্ফিতি ও ডলারের মানও উচ্চ পর্যায়ে। এ অবস্থায় তাজা ফলের ওপর বর্ধিত শুল্ক আরোপ হঠকারী সিদ্ধান্ত ছাড়া আর কিছু না।
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে তারা স্বাভাবিকের তুলনায় অর্ধেক ফল আমদানি করতে পারছেন, এর মধ্যে বিক্রি হচ্ছে ২০ শতাংশ। ফলতো বিলাস পণ্য না, এটা পথ্য। আমি ব্যবসাটা করতে পারতেছি না, আমি টাকাটা কই পাব? চাহিদা না থাকলে এনে কী করব? সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করলে আপাতত ব্যবসাটা চালায় যেতে পারব।
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন প্রায় ১৫০টি ট্রাকে বিভিন্ন খাদ্যপণ্য ও কাঁচামাল আমদানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাকের পণ্য থাকত আপেল, আঙুর, কেনু, মালটা ও ডালিম। তবে নতুন শুল্ক আরোপের পর আমদানি কমে গেছে। খুচরা বাজারেও ফলের দাম বেড়ে গেছে। বর্তমানে আপেল প্রকারভেদে প্রতি কেজি ৩০০-৩৬০ টাকা, মালটা ৩০০-৩২০ টাকা, কমলা ২৫০-৩০০ টাকা, আঙুর ৪৫০-৫০০ টাকা এবং ডালিম ৪৫০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।