বিয়ের ওপর বিগত সরকারের আরোপ করা কর আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ‘সাধারণ ছাত্রজনতা’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম। রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিগত স্বৈরাচার সরকার বিয়ের ওপর কর আরোপ করে সামাজিক বন্ধন প্রতিষ্ঠা করাকে জটিল ও কঠিন করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি, বিয়ের ওপর আরোপিত কর অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
হাসান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, কর আরোপের মাধ্যমে সামাজিক সম্পর্কের বৈধতা অনিশ্চিত করে তুলেছিল শেখ হাসিনা সরকার। যার কারণে সমাজে অবৈধ সম্পর্ক ব্যক্তি জীবনে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছে। ‘সাধারণ ছাত্রজনতা’র দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম আইনি বলেন, হাসিনা সরকারের জুলুমের অন্যতম একটি নিদর্শন বিয়ের ওপর কর আরোপ। আমরা মনে করি এর মাধ্যমে বৈদেশিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা হয়েছে। কর্মসূচি থেকে দাবি আদায়ে সরকারকে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
সিটি কর্পোরেশন মডেল ট্যাক্স তফসিল ২০১৬ সালে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বিবাহের ওপর বিভিন্ন করের হারের বিধান করে। তফসিলের ১৫২ ধারায় বলা হয়, প্রথম বিবাহ বা প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পরে বিবাহের জন্য একজন পুরুষকে বিয়ের পিড়িতে বসার আগে ১০০ টাকা ফি দিতে হবে। প্রথম স্ত্রীর জীবদ্দশায় দ্বিতীয় বিয়ে করতে হলে ৫ হাজার টাকা, প্রথম দুই স্ত্রীর জীবদ্দশায় তৃতীয় বিয়ের জন্য ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। তফসিল অনুযায়ী, চতুর্থ বিয়ের জন্য ৫০ হাজার টাকা কর দিতে হবে। স্ত্রী মানসিকভাবে অসুস্থ বা নিঃসন্তান হলে এই নিয়ম কার্যকর হবে না। সেক্ষেত্রে ২০০ টাকা দিতে হবে।
সূত্রমতে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন ৭৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে কেউ বিয়ে করলে তাঁকে বিবাহ নিবন্ধন ফি (কর) দিতে হবে। আদর্শ কর তফসিল-২০১৬ অনুযায়ী এ কর দিতে হবে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে এ ব্যবস্থা কার্যকর করা হয়েছে।
ডিএসসিসি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তিন স্ত্রীর জীবদ্দশায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে চতুর্থ বিয়ে করতে হলে করপোরেশনকে ৫০ হাজার টাকা কর দিতে হবে। আর প্রথম দুই স্ত্রীর জীবদ্দশায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে তৃতীয় বিয়ের ক্ষেত্রে ২০ হাজার টাকা কর দিতে হবে। আদর্শ কর তফসিল অনুসরণ করে চলতি বছরের জানুয়ারিতে সংস্থার ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে ২৮টি বিবাহ নিবন্ধন করা হয়েছে। এতে সিটি করপোরেশনের ২ হাজার ৮০০ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।