জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের খসড়া প্রতিবেদনে উপসচিব পদে পদোন্নতির জন্য লিখিত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যেখানে প্রশাসন ক্যাডার ও অন্যান্য ক্যাডার থেকে সমানসংখ্যক (৫০%) কর্মকর্তার পদোন্নতির বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া উপসচিব ও তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের সুদমুক্ত গাড়ি ঋণ সুবিধা বাতিল, প্রশাসন ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ বিভাগীয় কমিশনার এবং অন্য ক্যাডারের মহাপরিচালক (ডিজি) নির্ধারণ, আন্তঃক্যাডার বৈষম্য কমাতে সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিস চালু, ২৬টি ক্যাডারকে ১২টি ক্লাস্টারে বিন্যাসসহ প্রায় ২০০টি সুপারিশ করা হয়েছে। এসব বাস্তবায়ন হলে প্রশাসন ক্যাডারের একক কর্তৃত্ব হ্রাস পাবে এবং অন্যান্য ক্যাডারের সঙ্গে বৈষম্য কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বুধবার (৫ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালা হস্তান্তর করা হবে। মঙ্গলবার সচিবালয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন কমিশন প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী। তিনি জানান, সুপারিশগুলো বাস্তবায়নযোগ্য, তবে তা বাস্তবায়ন করা সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে। প্রতিবেদনে শতাধিক সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা জমার পর পাবলিক ডকুমেন্ট হিসেবে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলে জানান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান।
বুধবার দুপুর ১২টায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালা হস্তান্তর করা হবে। মঙ্গলবার সচিবালয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন কমিশন প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী। তিনি জানান, সুপারিশগুলো বাস্তবায়নযোগ্য, তবে তা বাস্তবায়ন করা সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে। প্রতিবেদনে শতাধিক সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা জমার পর পাবলিক ডকুমেন্ট হিসেবে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলে জানান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান।
সংস্কার কমিশন সূত্রে জানা যায়, কমিশনের সুপারিশে স্থায়ীভাবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন চালু রাখার সুপারিশ করতে পারে। জনপ্রশাসনে সৃষ্ট সমস্যা, বৈষম্য ওই কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে সমাধান হবে। স্থায়ী সংস্কার কমিশন সব সার্ভিস বা ক্যাডার নিয়ে গবেষণা করবে। কোথায় কী ধরনের সমস্যা হচ্ছে তা সরকারকে অবহিত করবে। তাহলে দেশের কোনো সার্ভিসে বা ক্যাডারে আর বৈষম্য থাকবে না।
সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, বিরাজমান আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করতে সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিস (এসইএস) নামে একটি সার্ভিস চালুর প্রস্তাব করতে পারে কমিশন। উপসচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব পর্যন্ত কর্মকর্তারা নতুন এই সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত হবে। এই সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত হতে পরীক্ষা দিতে হবে প্রশাসনসহ অন্য ক্যাডার কর্মকর্তারা। উত্তীর্ণ কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রশাসন ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ এবং অন্যান্য ক্যাডার বা সার্ভিস থেকে ৫০ শতাংশ পদ পূরণ করা হবে। পরীক্ষা নেবে সরকারি কর্মকমিশন। পরীক্ষায় সর্বনিম্ন ৭০ নম্বর পেলে উত্তীর্ণ বিবেচনা করা হবে। বিদ্যমান বিধিমালা অনুযায়ী, উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডার থেকে ৭৫ শতাংশ এবং অন্য ক্যাডার থেকে ২৫ শতাংশ নেওয়া হয়। এছাড়া শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারের জন্য আলাদা সার্ভিস কমিশন গঠনেরও প্রস্তাব করা হয়েছে খসড়া প্রতিবেদনে।
সংশ্লিষ্টরা আরও জানান,সংস্কার কমিশন আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করতে সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিস (এসইএস) নামে নতুন সার্ভিস চালুর সুপারিশ করতে পারে। এতে উপসচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব পর্যন্ত কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত হবেন এবং প্রশাসনসহ অন্যান্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পরীক্ষার মাধ্যমে নির্বাচন করা হবে। পিএসসি কর্তৃক নেওয়া এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্যে প্রশাসন ক্যাডার থেকে ৫০% ও অন্যান্য ক্যাডার থেকে ৫০% পদ পূরণ করা হবে, যেখানে পাস নম্বর হবে ৭০। বর্তমানে উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডার থেকে ৭৫% এবং অন্যান্য ক্যাডার থেকে ২৫% পদোন্নতি দেওয়া হয়। এছাড়া শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারের জন্য পৃথক সার্ভিস কমিশন গঠনের প্রস্তাবও রয়েছে।
সংস্কার কমিশনের খসড়া সুপারিশে উপজেলায় ইউএনও’র পাশাপাশি একজন সিনিয়র সহকারী সচিবকে উপজেলা পরিষদের সচিব হিসেবে নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা ইউএনও ও উপজেলা চেয়ারম্যানদের মধ্যে দ্বন্দ্ব কমাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহীকে প্রদেশে রূপান্তর এবং কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে নতুন বিভাগ করার সুপারিশ থাকতে পারে। ময়মনসিংহ বিভাগ পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে রংপুর ও ঢাকা বিভাগের কিছু এলাকা অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবও থাকতে পারে।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন সরকারি চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। ইতোমধ্যে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য ৩২ বছর নির্ধারণ করা হলেও অবসরের বয়সসীমা বাড়ানো হয়নি। আগে গঠিত কমিটি অবসরের বয়স বৃদ্ধির সুপারিশ করতে পারেনি, কারণ তাদের কার্যপরিধিতে এ বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত ছিল না। তাই সংস্কার কমিশন অবসরের বয়সসীমা যৌক্তিকভাবে বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে।