অনলাইনে প্রতিদিন ২৮৪০ রিটার্ন দাখিল হচ্ছে

** কলসেন্টারে প্রতিদিন কলের সংখ্যা বাড়ছে। কলসেন্টারের কলোবর বাড়ানোর চেষ্টা করছে এনবিআর

অনলাইনে রিটার্ন বা ই-রিটার্ন দাখিল জনপ্রিয় হচ্ছে। ঝামেলামুক্ত ও সহজে পূরণ করতে পারায় করদাতারা ই-রিটার্ন দাখিল করতে আগ্রহী হচ্ছেন। ই-রিটার্ন সিস্টেম আপডেট করার পর ৯ সেপ্টেম্বর করদাতাদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত অর্থাৎ মাত্র ৫১ দিনে ই-রিটার্ন দাখিল হয়েছে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮২৯টি। হিসাব অনুযায়ী, প্রতিদিন গড়ে ২৮৪০ জন করদাতা অনলাইনে বা ই-রিটার্ন সিস্টেমে আয়কর দাখিল করছেন। করদাতাদের আস্থা তৈরি হওয়ায় এই সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে বলে জানিয়েছেন কর বিভাগের কর্মকর্তারা।

আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ই-রিটার্ন পদ্ধতি প্রতিনিয়ত করদাতাদের কাছে জনপ্রিয় হচ্ছে। আরও জনপ্রিয় করতে চার শ্রেণির করদাতাদের অনলাইন রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সম্প্রতি এই সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে। চার শ্রেণির মধ্যে রয়েছে—ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে অবস্থিত আয়কর সার্কেলসমূহের অধিক্ষেত্রভুক্ত সকল সরকারী কর্মচারী। দেশের সকল তফসিলি ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারী, সকল মোবাইল অপারেটর বা মোবাইল টেলিকম সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী। এছাড়া ছয়টি বহুজাতিক কোম্পানিতে কর্মরত কর্মকর্তা-করচারীর অনলাইন রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কোম্পানিগুলো হলো—ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড, ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেড, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড, বাটা স্যু কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড ও নেসলে বাংলাদেশ পিএলসি।
Online Return

সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেছেন, এখন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ নির্বাহীরা তাদের কর্মকর্তাদের অনলাইনে রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক করার জন্য বলছেন। বেসরকারি খাতের এসব কর্মকর্তা সব সময় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কাজ করেন। তাদের জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল তুলনামূলক সহজ। তবে যারা ইতিমধ্যে সনাতনী পদ্ধতিতে রিটার্ন দিয়ে ফেলেছেন, তারা আগামী বছর থেকে অনলাইন রিটার্ন দেবেন। অনলাইনে রিটার্ন জমা দিলে করদাতাদের সঙ্গে কর কর্মকর্তাদের দেখা–সাক্ষাৎ বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা এভাবে ধীরে ধীরে সব খাতের করদাতাদের জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করব। চেয়ারম্যান বলেন, অনলাইনে রিটার্নের সঙ্গে কোন ডকুমেন্টযুক্ত করা লাগবে না। ডকুমেন্ট দেখে ই-রিটার্ন পূরণ করবেন। সেই ডকুমেন্ট নিজের কাছে রেখে দেবেন—যদি কখনো প্রয়োজন হয়।

এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, ২০২৪-২৫ করবর্ষের রিটার্ন দাখিল ও কর পরিপালন সহজীকরণের লক্ষ্যে এনবিআর ৯ সেপ্টেম্বর হতে অনলাইন রিটার্ন দাখিল সিস্টেম করদাতাদের জন্য উন্মুক্ত করেছে। এনবিআরের www.etaxnbr.gov.bd ওয়েবসাইট ব্যবহার করে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা সহজে নিজের রিটার্ন তৈরি করে অনলাইনে দাখিল করতে পারছেন। এ সিস্টেম হতে ইন্টারনেট ব্যাংকিং, কার্ড পেমেন্ট (ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড) ও মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে করদাতারা কর পরিশোধ করতে পারছেন। একইসঙ্গে দাখিলকৃত রিটার্নের কপি, প্রাপ্তি স্বীকারপত্র, আয়কর সনদ, ই-টিআইএন সনদ ডাউনলোড ও প্রিন্টের সুবিধা পাচ্ছেন। এছাড়া পূর্ববর্তী করবর্ষের দাখিলকৃত ই-রিটার্ন ডাউনলোড ও প্রিন্ট করতে পারছেন।

সূত্র আরও জানিয়েছে, ই-রিটার্ন সংক্রান্ত যেকোন সমস্যায় করদাতাদের সহায়তা প্রদানের জন্য এনবিআর একটি কল সেন্টার স্থাপন করেছে। ১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার হতে এই কল সেন্টারের ০৯৬৪৩ ৭১ ৭১ ৭১ নম্বরে ফোন করে করদাতারা ই-রিটার্ন সংক্রান্ত প্রশ্নের তাৎক্ষণিক টেলিফোনিক সমাধান পাচ্ছেন। এছাড়া www.etaxnbr.gov.bd এর eTaxService অপশন হতে করদাতারা ই-রিটার্ন সংক্রান্ত যেকোন সমস্যা লিখিতভাবে জানাতে পারবেন এবং সমাধান পাচ্ছেন। ইতোমধ্যেই ই-রিটার্ন রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াটি অধিকতর করদাতা বান্ধব করা হয়েছে। ই-রিটার্নে সফলভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে করদাতার নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে নিবন্ধিত ‘বায়োমেট্রিক্স সিম’ এর প্রয়োজন হয়। করদাতার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে ‘বায়োমেট্রিক্স রেজিস্ট্রেশন’ কি না-তা যাচাই করার জন্য *16001# নম্বরে ডায়াল করতে হবে।

** অনলাইনে যেভাবে আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন
** অনলাইনে প্রতিদিন ২০০০ আয়কর রিটার্ন দাখিল হচ্ছে
** ২৩ দিনে ৫০ হাজার, জনপ্রিয় হচ্ছে ই-রিটার্ন
** চার শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর অনলাইন রিটার্ন ‘বাধ্যতামূলক’
** করদাতাদের কর অফিস ভিজিট জিরো করাই লক্ষ্য

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!