বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ দায়িত্ব নেওয়ার পর শেয়ারবাজারের ৯০ শতাংশ বিনিয়োগকারী পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন, দাবি করেছে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমআইএ)। এর জন্য তারা দ্রুত বিএসইসি চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি করেছে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত এক জরিপে বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের প্রতি ৯৫ শতাংশের বেশি অনাস্থা প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেওয়ার পর বাজার মূলধন প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা কমেছে এবং মার্কেট সূচক প্রায় ১ হাজার ১০০ পয়েন্ট হারিয়েছে। শনিবার (১০ মে) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন বিসিএমআইএ’র নেতারা।
বিসিএমআইএ সভাপাতি বলেন, পুঁজিবাজার উন্নয়ন ও শক্তিশালীকরণ’ এর লক্ষ্যে রোববার (১১ মে) অর্থ উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ও বিএসইসির চেয়ারম্যানকে নিয়ে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এখন পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে শেয়ারবাজার বুঝে এবং উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে এমন কাউকে রাখা হয়নি।তিনি বলেন, যেখানে স্টক এক্সচেঞ্জ, মার্চেন্ট ব্যাংকার, ব্রোকার, সম্পদ ব্যবস্থাপক, বিনিয়োগকারীদের প্রতিনিধিসহ এসব স্টেকহোল্ডারদের কেউ থাকবে না। অথচ এরাই শেয়ারবাজারের বিদ্যমান সমস্যার কারণ বুঝে। বিপরীতে যাদের নিয়ে অভিযোগ, তাদেরকেই রাখা হয়েছে বৈঠকে। তাই স্বাভাবিকভাবেই তারা তাদের ব্যর্থতা তুলে ধরবেন না প্রধান উপদেষ্টার কাছে।
বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেওয়ার পর শেয়ারবাজারের চিত্র তুলে ধরেন বিনিয়োগকারীদের নেতা। তিনি বলেন, চেয়ারম্যানের যোগদানের পর বাজারের মূলধন প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা কমেছে এবং মার্কেট সূচক প্রায় ১ হাজার ১০০ পয়েন্ট হারিয়েছে। ৯০ শতাংশ বিনিয়োগকারী পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। তিনি আরও জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত একটি জরিপে বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের প্রতি ৯৫ শতাংশ বিনিয়োগকারীর অনাস্থা প্রকাশ হয়েছে এবং তারা তার অপসারণ চান। এছাড়া, মার্কেটের আরএসআই ১১ পয়েন্টে পৌঁছেছে, যা বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের ইতিহাসে সর্বনিম্ন এবং বিশ্ব রেকর্ডও বটে। তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এখন ক্লিনিক্যালি ডেড।
এই বিনিয়োগকারী নেতা বলেন, পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সবাই ইতোমধ্যেই মন্তব্য করেছেন যে, বর্তমান কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পুঁজিবাজার সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই এবং বাস্তব অভিজ্ঞতাও নেই। তার মধ্যে পুঁজিবাজারের উন্নতি ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার কোন সদিচ্ছাও দেখা যাচ্ছে না। একটি প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে পরিচালনা করতে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বের যোগ্যতা ও গুণাবলি থাকা জরুরি, কিন্তু তার মধ্যে সেগুলোর কোনো চিহ্নও নেই।
এস এম ইকবাল হোসেন বলেন, বর্তমান কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা পুঁজিবাজারে অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরই কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই অনেক কোম্পানিকে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করেছেন, যার ফলে লক্ষাধিক বিনিয়োগকারী পথে বসে গেছেন। এই তথ্যের ভিত্তিতে স্পষ্টভাবে বলা যায় যে, বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে অপসারণ করা অতি জরুরি ও অনিবার্য।