৬ টাকা ভ্যাটে মুন্না ৭ টাকা ভ্যাটে সাব্বির-অলি বিজয়ী

বার্তা প্রতিবেদক: চিকেন ফ্রাই আর বার্গার খেয়ে ৬ টাকা ভ্যাট দিলেন সাতকানিয়ার মো. নাঈম হোসেন মুন্না। ভ্যাট দিয়েই পুরস্কার জিতলেন ১০ হাজার টাকা। ডবলমুরিং এলাকার ছাব্বির আহমেদ কিনলেন বয়েজ জেন্টস শার্ট কিনে ভ্যাট দিলেন ৭ টাকা। তিনিও ১০ হাজার টাকা পুরস্কার জিতেছেন। আবার কোতোয়ালী এলাকার অলি উল্যাহ ছমুচা খেয়ে ভ্যাট দিলেন ৭ টাকা। যার মাধ্যমে তিনিও জিতে নিলেন ১০ হাজার টাকা পুরস্কার। তিনজন ক্রেতাই কেনাকাটার ক্ষেত্রে ইএফডি চালানে ভ্যাট পরিশোধ করেই নগদ ১০ হাজার টাকা করে পুরস্কার জিতেছেন।

EFD Lottery CTG 1

শুধু মুন্না, ছাব্বির আর অলি নয়-ইএফডি চালানে ভ্যাট দিয়ে চতুর্থ পুরস্কার হিসেবে ১০ হাজার টাকা করে পুরস্কার জিতেছেন ডবলমুরিং এলাকার মো. আব্দুল মান্নান পাটোয়ারী ও মহেশখালীর মোহাম্মদ নুরুল হক মেহেদী। চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেটের আওতাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জুন মাসে ইএফডি মেশিনে কেনাকাটা করে ভ্যাট দিয়ে লটারি বিজয়ী হয়ে তারা পুরস্কার জিতেছেন। মঙ্গলবার (৫ জুলাই) ভ্যাট কমিশনারেটের সম্মেলন কক্ষে পুরস্কারের চেক হস্তান্তর করা হয়। অতিরিক্ত কমিশনার হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার বিজয়ীদের হাতে চেক তুলে দেন। ইএফডিএমএস হতে ইস্যুকৃত চালানের ভিত্তিতে লটারির মাধ্যমে আর্থিক পুরস্কার প্রদান নীতিমালা, ২০২১ অনুযায়ী বিজয়ীদের ইনভয়েস নম্বর, চালানের কপি, আইডি যাচাই করে তাৎক্ষণিকভাবে এই পুরস্কারের চেক হস্তান্তর করা হয়। অনুষ্ঠানে ভ্যাট কমিশনারেটের কর্মকর্তা এবং চালান ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত কমিশনার হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার সবাইকে কেনাকাটার সময় চালান সংগ্রহ করে তা লটারির জন্য সংরক্ষণ করার অনুরোধ করেন।

EFD Lottery CTG 3

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া এলাকার মো. নাঈম হোসেন মুন্না। তিনি লোহাগড়া এলাকার ‘ওকেএম মিডওয়ে ইন লিমিটেড’ থেকে ১৩০ টাকার চিকেন ফ্রাই ও বার্গার ক্রয় করেন। যাতে ইএফডিএমএস সিস্টেমে ৬ টাকা ১৯ পয়সা ভ্যাট দিয়েছেন। আর তাতেই তিনি জুন মাসে ইএফডিএম ইনভয়েসে লটারি বিজয়ী হয়ে চতুর্থ পুরস্কার হিসেবে জিতলেন ১০ হাজার টাকা। একইভাবে ডবলমুরিং এলাকার ছাব্বির আহমেদ। তিনি চট্টগ্রামের ক্র্যাপট ক্যাসেল লিটল নামের প্রতিষ্ঠান থেকে ১০০ টাকা দিয়ে বয়েজ জেন্টস শার্ট কিনেছেন। ইএফডিতে ভ্যাট দিয়েছেন ৬ টাকা ৯৭ পয়সা। তিনিও লটারিতে জিতেছেন ১০ হাজার টাকা।

EFD Lottery CTG 4

আরো জানিয়েছেন, কোতোয়ালী এলাকার মো. অলি উল্যাহ। তিনি হালিশহর এলাকার হোটেল আল বোস্তান থেকে ১৫০ টাকায় কিনেছেন ১৫টি ছমুছা। ইএফডিতে ৭ টাকা ১৪ পয়সা ভ্যাট দিয়েই পুরস্কার জিতেছেন ১০ হাজার টাকা। ডবলমুরিং এলাকার মো. আব্দুল মান্নান পাটোয়ারী। তিনি কক্সবাজারের কলাতলী এলাকার আবাসিক হোটেলে গ্যালাক্সি রিসোর্ট লিমিটেডে রাত্রিযাপন করে ভাড়া দিলেন ৫০০ টাকা। তাতে ৬৫ টাকা ২১ পয়সা ভ্যাট দিয়ে তিনি জিতলেন ১০ হাজার টাকা। কক্সবাজারের মহেশখালীর মোহাম্মদ নুরুল হক মেহেদী। তিনি কলাতলী এলাকার আবাসিক হোটেল শাহজাদী রিসোর্টে চারটি রুম ভাড়া নিলেন। ভাড়া দিলেন ৩ হাজার ২০০ টাকা। ইএফডিতে ভ্যাট দিলেন ৪১৭ টাকা ৩৯ পয়সা ভ্যাট দিয়ে পুরস্কার জিতলেন ১০ হাজার টাকা।

EFD Lottery CTG 5

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইএফডি ও এসডিসি বিষয়ে ব্যবসায়ী ও ভোক্তার সচেতনতা বাড়াতে নানা উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেট। ভ্যাট মেলা, ভ্যাট বুথ, ভ্যাট স্ট্যান্ডের মাধ্যমে ইএফডি প্রচারণার পাশাপাশি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা ও প্রমিত বাংলায় ক্রিকেট সেলিব্রেটি আকরাম খানকে দিয়ে প্রচারণামূলক পোষ্টার জনগণকে ইএফডি চালান নিতে উদ্বুদ্ধ করছে। জনগণ সচেতন হয়ে ইএফডি চালান সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে একদিকে যেমন নিজেদের দেয়া মূসক সরকারি কোষাগারে জমা নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে লটারি বিজয়ী হয়ে পুরস্কার জিতে নিচ্ছেন। যথাযথ নিয়মে ইএফডি চালান ইস্যু করে ব্যবসায়ীরাও সুনাগরিকের দায়িত্ব পালন করছেন।

উল্লেখ্য, ভোক্তা বা ক্রেতা কর্তৃক প্রদত্ত মূসক/ভ্যাট যাতে সরকারি কোষাগারে জমা নিশ্চিত হয়, সে লক্ষ্যে বিভিন্ন দোকানে ইএফডি স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি কেনাকাটার পর ইএফডি মেশিন হতে চালান গ্রহণ করলে ক্রেতার পরিশোধিত ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা নিশ্চিত হবে। বন্দর নগরী চট্টগ্রামে ইতোপূর্বে স্থাপিত ৫২০টি  মেশিনের পাশাপাশি আরও ৫০০টি মেশিন স্থাপনের কাজ চলছে। প্রতিটি ইএফডি মেশিন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় সার্ভারের সাথে অনলাইনে সংযুক্ত রয়েছে। এর ফলে ক্রেতাদের পরিশোধিত ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান নিশ্চিত হচ্ছে। এ ছাড়াও ক্রেতাদের উৎসাহিত করতে প্রতি মাসের ৫ তারিখে এনবিআর একটি বিশেষ লটারির আয়োজন করেছে। এ লটারিতে ১০১টি পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

###

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!