৫৯০৪ মোবাইল টাওয়ার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ

নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টি, দমকা হাওয়া ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। এতে সরাসরি প্রভাব পড়েছে টেলিযোগাযোগ খাতে, ফলে মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবাও ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শুক্রবার (৩০ মে) সকালে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে জানান, দুর্যোগজনিত পরিস্থিতিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার ৯০৪টি মোবাইল টাওয়ার বা সাইট সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে, যা দেশের মোট সাইটের প্রায় ৩৫ দশমিক ৮ শতাংশ।

গত মঙ্গলবার বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়, যা পরদিন বুধবার সুস্পষ্ট লঘুচাপে রূপ নেয়। এরপর বৃহস্পতিবার ভোরে এটি নিম্নচাপ থেকে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। এর প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এখনো বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। স্থল নিম্নচাপের কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে, ফলে দেশের সমুদ্রবন্দরসমূহ, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ঝড়ো হাওয়া বয়ে চলার সম্ভাবনা রয়েছে।

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মোবাইল নেটওয়ার্ক কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। এতে কল, এসএমএস ও ইন্টারনেট সেবায় মারাত্মক সমস্যায় পড়েছেন গ্রাহকরা।

ফয়েজ আহমদ জানান, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোর মধ্যে রয়েছে বরিশাল, দক্ষিণ সিলেট, টাঙ্গাইল, চাঁদপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা উত্তর, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও দক্ষিণ চট্টগ্রাম। তার দেয়া তথ্যানুসারে, দেশে এখন পর্যন্ত মোট ৮ হাজার ২৬২টি সাইট বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে ‘মেইনস ফেইলর’ অবস্থায় রয়েছে, যা মোট সাইটের ৪৪ শতাংশ। বর্তমানে দেশে মোট ৬৪ দশমিক ২ শতাংশ সাইট সচল রয়েছে।

টেলিকম অপারেটর ও টাওয়ার কোম্পানিগুলো বিকল্প উপায়ে নেটওয়ার্ক সচল রাখতে এখন পর্যন্ত ৬২৪টি সাইটে পোর্টেবল জেনারেটর স্থাপন করেছে। আরও ৫০৪টি জেনারেটর পথে রয়েছে, যেগুলো দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত সাইটগুলোতে স্থাপন করে পুনরায় সেবা চালু করার প্রচেষ্টা চলছে।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলায় মোবাইল অপারেটর, টাওয়ার কোম্পানি ও পল্লি বিদ্যুৎ কর্মকর্তারা নিরলসভাবে কাজ করছেন। সাইটগুলো সচল রাখতে পোর্টেবল জেনারেটর সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। তবে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই বিপর্যয় চলমান থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!