২.৭০ কোটি টাকা আত্মসাত, ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে প্রতারণা

** ছয় ব্যক্তি স্বর্ণ চোরাচালানসহ ৬০৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকার মানিলন্ডারিং ও অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন

যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে প্রতারণা, ভারতে সোনা চোরাচালান এবং ৬০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সিআইডি। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় এই মামলা করে। এতে মনীন্দ্র নাথ বিশ্বাস (৫০), ওয়াহিদুজ্জামান (৫২), মো. গোলাম সারওয়ার আজাদ (৫১), মো. তরিকুল ইসলাম ওরফে রিপন ফকির (৪৯), রাজীব সরদার (৩৭) ও উজ্জ্বল কুমার সাধু (৩৮) নামের ছয়জনকে আসামি করা হয়। বুধবার (১ অক্টোবর) সিআইডির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সিআইডি বলছে, প্রতারণার ঘটনা অনুসন্ধানে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে। সিআইডির অনুসন্ধানে উঠে আসে ডেবোরাহ জন্সটন রামলো ডেবি নামের এক মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে এই প্রতারক চক্র বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ তৈরি করে। অভিযোগকারীর ভাষ্য, এই প্রতারক চক্র ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট এজেন্সির (ডিইএ) সদস্য পরিচয় দিয়ে ২ লাখ ২২ হাজার মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ ১৬ হাজার ৩৫১ টাকা আত্মসাৎ করে। প্রতারক চক্র ছলচাতুরী ও ব্ল্যাকমেলের মাধ্যমে ওই মার্কিন নাগরিককে বাধ্য করে যেন তিনি এই বিপুল অর্থ আমেরিকায় অবস্থিত বিভিন্ন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের কাছে দেন।

সিআইডি আরও জানায়, শিক্ষার্থীদের কাছে টাকা পৌঁছে দেওয়ার পর বাংলাদেশ থেকে ওই সব শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের কাছ থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাঁদের নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা গ্রহণ করে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা সংঘবদ্ধ প্রতারণা ছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে হুন্ডি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে আইনক্স ফ্যাশন, ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজ, জামান এন্টারপ্রাইজ ও নোহা এন্টারপ্রাইজ।

মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে সিআইডি জানতে পারে চক্রটি সোনা চোরাচালানের সঙ্গেও জড়িত। তারা বিশেষ যোগাযোগের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা ব্যক্তিদের কাছ থেকে এবং ঢাকার তাঁতীবাজারসহ অন্যান্য স্থানের বিভিন্ন দোকান থেকে ভাঙারি সোনা সংগ্রহ করে তা গলিয়ে পাকা সোনার বার আকারে রূপান্তরিত করে দীর্ঘদিন ধরে পাচার করে আসছে। এসব সোনার বার মূলত সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করা হয় বলে সিআইডির দাবি।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রায় ৬০৮ কোটি ৩৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকা হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করে ভোগবিলাস, অর্থ পাচারসহ নামে-বেনামে সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। এসব অপরাধ মানি লন্ডারিং আইনে হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে সিআইডি।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!