ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে ঘোষিত কর্মসূচি-
০১. ইতোমধ্যে জারি করা সকল বদলি আদেশ ২৩ জুন সোমবারের মধ্যে বাতিল না হলে ২৪ জুন মঙ্গলবার ‘আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি ব্যতীত’ কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সকল দপ্তরে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজস্ব ভবনে অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতি পালন। ঢাকার বাইরে স্ব-স্ব দপ্তরে অবস্থান কর্মসূচি, কলম বিরতি এবং চেয়ারম্যান ও তাঁর দোসরদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ
০২. ইতোমধ্যে জারি করা প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক সকল বদলি আদেশ বাতিল না করা হলে এবং ২৩ জুন ও তৎপরবর্তীতে প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক নতুন কোনো বদলি আদেশ জারি করা হলে ২৫ ও ২৬ জুন দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত একইভাবে কলম বিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি চলবে
০৩. আগামী ২৭ জুনের মধ্যে প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক সকল বদলি আদেশ বাতিল না করা হলে এবং বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ না করা হলে আগামী ২৮ জুন থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ব্যতীত কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সকল দপ্তরে লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউন চলবে
ঐক্য পরিষদের চারটি দাবি-
এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ; ইতোমধ্যে জারি করা প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক সকল বদলি আদেশ বাতিল; প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক নতুন কোনো বদলি আদেশ জারি করা যাবে না; রাজস্ব অধ্যাদেশ সংস্কার বিষয়ক কমিটি বাতিল, এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ এনবিআর সদস্যদেরকে বাদ দিয়ে নতুন করে কমিটি গঠনের আদেশ জারি করা
চেয়ারম্যানকে অপসারণ করা, বদলির নামে নিপীড়ন ও হয়রানি বন্ধ না হলে আগামী ২৮ জুন থেকে এনবিআরসহ ভ্যাট কমিশনারেট, কর অঞ্চল ও কাস্টম হাউসে লাগাতার শাটডাউনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনরত এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দাবি আদায়ে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২৩ জুন) বিকেলে আগারগাঁও এনবিআরের নিচে সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ হুঁশিয়ারি দিয়ে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
এর আগে ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার সকাল থেকে এনবিআরের নিচে এনবিআর ও ঢাকাস্থ সকল ভ্যাট, কাস্টমস ও কর অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কলম বিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তারা গায়ে কাফনের কাপড় পরিধান ও হাতে বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্লে-কার্ড হাতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। ঢাকার বাইরে সকল ভ্যাট, কাস্টমস ও কর অফিসে একইভাবে কলম বিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও অতিরিক্ত কমিশনার হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার, ‘এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যানকে দায়িত্বে রেখে রাজস্ব সংস্কার সম্ভব নয়। কারণ তিনি এটি বাস্তবায়ন হতে দেবেন না। পলাতক আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী যে ৪৪ জন আমলার (এর মধ্যে ছয়জনকে ইতোমধ্যে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান করা হয়েছে) তালিকা করা হয়েছে, তার মধ্যে এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যান তিন নম্বরে রয়েছেন। সংস্কার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে তিনি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা করবেন, এটাই বরং স্বাভাবিক। সামগ্রিক অবস্থাদৃষ্টে এটা প্রমাণিত যে, তিনি-ই এনবিআর বিলুপ্তি প্রচেষ্টার মূল হোতা। তিনি নিপীড়নমূলক বদলীসহ বিভিন্ন ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কারের পরিবেশ বিনষ্টকারী, সরকারের মেনে নেওয়া দাবি এক রকম অস্বীকার করে এনবিআর বিলুপ্তির পাঁয়তারা অব্যাহত রাখার ষড়যন্ত্রকারী, সরকারকে বিভিন্ন ভুল তথ্য দিয়ে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সাথে সরকারের দূরত্ব সৃষ্টির অপচেষ্টাকারী।’
ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে তিনি চারটি দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হচ্ছে-প্রথমত, অনতিবিলম্বে পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী ৪৪ আমলার তালিকায় তিন নম্বরে থাকা এবং দেশ ও রাজস্ব ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে। উল্লেখ্য, পূর্ব থেকেই ঐক্য পরিষদ রাজস্ব ভবনে চেয়ারম্যানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে অসহযোগ কর্মসূচি যথারীতি চলবে। দ্বিতীয়ত, ইতোমধ্যে জারি করা প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক সকল বদলি আদেশ আজ ২৩ জুনের মধ্যে বাতিল করতে হবে। তৃতীয়ত, প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক নতুন কোনো বদলি আদেশ জারি করা চলবে না। চতুর্থত, প্রেস বিজ্ঞপ্তি মারফত সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী এনবিআরকে বিলুপ্ত না করে বরং বিভাগের মর্যাদায় শক্তিশালী করাসহ রাজস্ব অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সকল সংশোধনীর লক্ষ্যে এনবিআর কর্তৃক গঠিত রাজস্ব অধ্যাদেশ সংস্কার বিষয়ক কমিটি বাতিল করে ২৩ জুনের মধ্যে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব অন্তর্ভুক্ত করে এবং বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ এনবিআর সদস্যদেরকে বাদ দিয়ে নতুন করে কমিটি গঠনের আদেশ জারি করতে হবে।
ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে কর্মসূচি তুলে ধরেন সভাপতি। বলেন, ইতোমধ্যে জারি করা প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক সকল বদলি আদেশ আজ ২৩ জুনের মধ্যে বাতিল না করা হলে আগামীকাল ২৪ জুন মঙ্গলবার ‘আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি ব্যতীত’ কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সকল দপ্তরে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ঢাকাস্থ কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সকল দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজস্ব ভবনে অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতি এবং ঢাকার বাইরে স্ব-স্ব দপ্তরে অবস্থান কর্মসূচি, কলম বিরতি এবং চেয়ারম্যান ও তাঁর দোসরদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ চলবে। ইতোমধ্যে জারি করা প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক সকল বদলি আদেশ বাতিল না করা হলে এবং ২৩ জুন ও তৎপরবর্তীতে প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক নতুন কোনো বদলি আদেশ জারি করা হলে আগামী ২৫ ও ২৬ জুন দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি ব্যতীত কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সকল দপ্তরে কলম বিরতি, অবস্থান কর্মসূচি এবং চেয়ারম্যান ও তাঁর দোসরদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ চলবে। আগামী ২৭ জুনের মধ্যে প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক সকল বদলি আদেশ বাতিল না করা হলে এবং পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী ৪৪ আমলার তালিকায় তিন নম্বরে থাকা এবং দেশ ও রাজস্ব ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ না করা হলে আগামী ২৮ জুন থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ব্যতীত কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সকল দপ্তরে লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউন চলবে।
সভাপতি বলেন, বিচিত্র সব বাধা ও নানাবিধ অসহযোগিতার কারণে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ কর্তৃক পরিকল্পিত ‘কেমন এনবিআর চাই’-শীর্ষক সেমিনার আয়োজনের কোনো সম্ভাবনা দেখতে না পাওয়ায় আগামী ৭ জুলাই প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে একটি জনবান্ধব ও সেবাধর্মী এনবিআরের রূপরেখা (আইন সংক্রান্ত, প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চা, অটোমেশন, সার্ভিস ডেলিভারি, ইন্টেগ্রিটি, জবাবদিহিতা, চ্যালেঞ্জ ও সীমাবদ্ধতা, প্রভৃতি বিষয়ে) আমরা দেশবাসীর সামনে তুলে ধরা হবে।
ঐক্য পরিষদের মহাসচিব ও অতিরিক্ত কর কমিশনার সেহেলা সিদ্দিকা বলেন, আজ সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঢাকাস্থ কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সকল দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজস্ব ভবনে অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতি এবং ঢাকার বাইরে স্ব-স্ব দপ্তরে অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতি চলছে। তবে, সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকা সত্ত্বেও রাজস্ব ভবন ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার ব্যবস্থা করে উস্কানিমূলক পরিস্থিতির সৃষ্টি করার প্রতিবাদে আমরা আজ কাফনের কাপড় পরিধান করেছি। তিনি বর্তমান এনবিআর চেয়ারম্যান রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কার বাস্তবায়নে সরকারের সদিচ্ছাকে পদে পদে বাধাগ্রস্ত করে সামগ্রিক পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করতে ইতোমধ্যে যে সকল কর্মকান্ড করেছেন তুলে ধরেন তিনি। সংগঠনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনদের নিয়ে তাদের পূর্বঘোষিত ‘কেমন এনবিআর চাই’-শীর্ষক সেমিনার আয়োজনের লক্ষ্যে অফিস সময়ের পর প্রস্তুতিমূলক সভা আয়োজনের জন্য কক্ষ বরাদ্দ চেয়ে প্রথমে মৌখিকভাবে ও পরে লিখিতপত্র প্রদানের পরও কক্ষ বরাদ্দ প্রদান করা হয়নি। অফিস সময়ের পর অধ্যাদেশ সংশোধনে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদকে তাদের মতামত প্রস্তুতের লক্ষ্যে কোনো ধরনের সভা করার জন্যও কক্ষ বরাদ্দ দিতে নিষেধ করা হয়েছে। এমনকি কক্ষ বরাদ্দ চেয়ে দেওয়া চিঠি তিনি ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন। এতে ২, ১৯ ও ২১ জুন রাজস্ব ভবনের নিচ তলার মেঝেতে কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সভাগুলো করা হয়। অন্যদিকে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকা সত্ত্বেও রাজস্ব ভবন ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার ব্যবস্থা করে এক ধরনের উস্কানিমূলক পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে।
আরও বলা হয়, এনবিআর কর্তৃক গত ১৯ জুন রাজস্ব অধ্যাদেশ সংশোধনের লক্ষ্যে এনবিআরের কর এবং কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগের ছয়জন সদস্যের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়, এই কমিটিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের কোনো প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এমনকি কমিটি গঠন বিষয়ে তাদের সাথে কোনোরূপ আলোচনাও করা হয়নি। আবার এনবিআর চেয়ারম্যান বিভিন্ন সভায় ও বক্তব্যে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের বৈধতা ও অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। যদিও অর্থ উপদেষ্টা এই ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিদের সাথেই আলোচনায় বসেছিলেন এবং এর প্রেক্ষিতে ২৫ মে সরকারের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নাম দুই-দুই বার উল্লেখ করা হয়েছে। যে রাজস্ব অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে এতদিন কর্মসূচি চলেছে-তা জারি হওয়ার পর যে বা যারা একে স্বাগত জানিয়ে পত্রিকায় ও ফেসবুকে বক্তব্য দিয়েছিলেন-এমন বিতর্কিত, প্রশ্নবিদ্ধ ও অধ্যাদেশ সংশোধনের বিরোধী-মনোভাবসম্পন্ন এনবিআরের সদস্যদেরকে গঠিত কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আবার এই কমিটিতে অধিকাংশ সাধারণ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে বিলুপ্ত বিসিএস (ট্যাক্সেশন) অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিকে এনবিআরের ছয় সদস্যের মধ্যে দ্বিতীয় কনিষ্ঠতম সদস্য হওয়া সত্ত্বেও কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী হিসাবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। এটি করা হয়েছে, যাতে সব কিছু চেয়ারম্যান তাঁর পছন্দের লোক দিয়ে সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করার চেষ্টা করতে পারেন।
আরো বলা হয়, তিনি (চেয়ারম্যান) সম্প্রতি বদলি নীতিমালার তোয়াক্কা না করে কর বিভাগের সিনিয়র কমিশনারকে প্রতিহিংসামূলকভাবে নিপীড়নমূলক বদলি করেছেন। আবার সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য স্পর্শকাতর দপ্তরে প্রশ্নবিদ্ধ এক কর্মকর্তাকে কর কমিশনারের দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি তাঁর একটি দোসর সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাইরে থেকে লোক জড়ো করে আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে উস্কানিমূলক পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা করেছেন, যার প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে। এছাড়া যৌক্তিক কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদেরকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন, শাস্তি ও বদলির হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। এসব প্রতিহিংসামূলক কর্মকান্ডের কারণে স্বাভাবিক কাজের পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে, যার প্রভাব রাজস্ব আহরণেও পড়তে পারে। ২১ ও ২২ জুন একাধিক আদেশের মাধ্যমে রাজস্ব সংস্কার কর্মসূচির সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরকে প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক বদলি করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি আদেশে অত্যন্ত দক্ষ ও পেশাদারি হিসাবে সুনাম রয়েছে এমন পাঁচজন কর কর্মকর্তাকে ঢাকার বাইরে অপেক্ষাকৃত কম রাজস্ব সম্ভাবনাময় দপ্তরে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। এই আদেশে প্রাপ্য যোগদানকাল না দিয়েই পরবর্তী কর্মদিবসে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগদান করতে বলা হয়েছে, যা চাকরি বিধির সম্পূর্ণ পরিপন্থী ও অবৈধ। এই অবৈধ আদেশ বর্তমান এনবিআর চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত জিঘাংসা চরিতার্থের এক জলজ্যান্ত প্রমাণ। এর মাধ্যমে যৌক্তিক কর্মসূচিতে থাকা কর্মকর্তাদের পুঞ্জিভূত ক্ষোভকে উস্কে দিয়ে তিনি পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চান। তাঁর এহেন কর্মকান্ড অত্যন্ত দুরভিসন্ধিমূলক।
আরো অভিযোগ করা হয়, চেয়ারম্যান ইতোমধ্যে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক সভা ও বক্তব্যে বিভিন্নভাবে বলার চেষ্টা করছেন যে, তিনি এনবিআরকে বিলুপ্ত করবেন এবং রাজস্ব নীতি বিভাগ ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুই বিভাগের মডেলই রাখবেন। অর্থাৎ জারি করা অধ্যাদেশে তেমন কোনো পরিবর্তনই তিনি হতে দিবেন না। সরকারের প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি বা এনবিআরের কমিটি গঠন, এগুলো সবই তাঁর আইওয়াশ। এ থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট, যে ইস্যুকে কেন্দ্র করে এই কর্মসূচি তাকে জিইয়ে রেখে সামগ্রিক পরিস্থিতিকে তিনি অস্থিতিশীল করতে চান। তিনি পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত ও তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী সচিব। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব থাকাকালীন তাঁর সময়েই এস আলমসহ দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক কেলেংকারীর ঘটনা ঘটে।