২০২৫ সালে বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের বসবাস যে দেশে

বৈশ্বিক সম্পদ বণ্টনে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বের মোট মিলিয়নিয়ারের এক-তৃতীয়াংশের বেশি এবং প্রায় ৪০ শতাংশ সেন্টি-মিলিয়নিয়ার বসবাস করেন দেশটিতে। চীন ধনী ব্যক্তির সংখ্যায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকলেও, যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় চীনে অতিধনীর—বিশেষ করে বিলিয়নিয়ারের—সংখ্যা অনেক কম।

বিশ্বজুড়ে সম্পদের বণ্টন এখনও বেশ কেন্দ্রীভূত এবং কিছু নির্দিষ্ট দেশের মধ্যেই বিপুল ধনসম্পদ সঞ্চিত—এমন তথ্য উঠে এসেছে হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে। ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্টের প্রকাশিত গ্রাফিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বের সর্বাধিক ধনী ব্যক্তিদের বসবাস হবে যুক্তরাষ্ট্রেই।

এই তালিকায় বিশ্বের সবচেয়ে ধনী জনগোষ্ঠী বসবাস করে এমন দেশগুলোকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করে উপস্থাপন করা হয়েছে—

মিলিয়নিয়ার: যাদের কাছে কমপক্ষে এক মিলিয়ন মার্কিন ডলার (১০ লাখ ডলার) সমমূল্যের লিকুইড ও বিনিয়োগযোগ্য সম্পদ রয়েছে।

সেন্টি-মিলিয়নিয়ার: যাদের সম্পদের পরিমাণ ১০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি।

বিলিয়নিয়ার: যাদের মোট সম্পদ এক বিলিয়ন ডলার (১০০ কোটি ডলার) ছাড়িয়ে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষে রয়েছে বিশাল ব্যবধানে

২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে মিলিয়নিয়ারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬০ লাখ ৪১ হাজার ৬০০। এছাড়া দেশটিতে সেন্টি-মিলিয়নিয়ার আছেন ১০ হাজার ৮৩৫ জন এবং বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা ৮৬৭ জন। অর্থাৎ, বিশ্বের মোট মিলিয়নিয়ারের এক-তৃতীয়াংশের বেশি এবং প্রায় ৪০ শতাংশ সেন্টি-মিলিয়নিয়ার বসবাস করেন যুক্তরাষ্ট্রে।

দ্বিতীয় হলেও ব্যবধানে পিছিয়ে চীন

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চীন, যেখানে মিলিয়নিয়ারের সংখ্যা ৮ লাখ ২৭ হাজার ৯০০, সেন্টি-মিলিয়নিয়ার ২ হাজার ২৫৮ এবং বিলিয়নিয়ার ২৭৮ জন। যদিও চীন প্রতিটি স্তরে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকলেও, জনসংখ্যার পরিমাণ আমেরিকার তুলনায় অনেক বেশি, ফলে অতি ধনী ব্যক্তিদের অনুপাত আমেরিকার চেয়ে কম। এর পেছনে মূলধন নিয়ন্ত্রণ, বৈশ্বিক কোম্পানির সংখ্যা কম থাকা এবং সম্পদ আহরণের ওপর সাম্প্রতিক কঠোর নীতিমালা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

ইউরোপ ও এশিয়া তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে।

জার্মানি, জাপান এবং যুক্তরাজ্যে প্রায় ৫ লাখ থেকে ৮ লাখ মিলিয়নিয়ার বাস করেন। তবে সেগুলোর তুলনায় সেখানকার সেন্টি-মিলিয়নিয়ার ও বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা অনেক কম। সুইজারল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার ধনী জনগোষ্ঠী তাদের মোট জনসংখ্যার তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি, যা তাদের উন্নত অর্থনীতি ও উচ্চ জীবনমানের প্রতিফলন। সার্বিকভাবে, ২০২৫ সালে বিশ্বজুড়ে মিলিয়নিয়ারের সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ১ কোটি ৬৫ লাখ ৫ হাজার, সেন্টি-মিলিয়নিয়ার হবেন ৩০ হাজার ৪৫০ জন এবং বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা থাকবে ২ হাজার ৬৫৬ জন। বিশ্লেষকদের মতে, এই একচেটিয়া সম্পদের বিতরণ বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক বৈষম্যের চিত্র স্পষ্টভাবে তুলে ধরে।