আগামীকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) থেকে কাস্টমসের মাধ্যমে আমদানি ও রপ্তানি পণ্যের ছাড়ের সব ধরনের সনদ অনলাইনে জমা দেওয়া বাধ্যতমূলক করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সোমবার (৩০ জুন) এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আল-আমিন শেখ সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, আগামীকাল থেকে দেশের ১৯টি নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বা রেগুলেটরি অথরিটির ইস্যু করা ছাড়পত্র, সার্টিফিকেট কিংবা পারমিট অনলাইনে বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো (বিএসডব্লিউ) প্ল্যাটফর্মে ইনপুট না থাকলে, সেসব আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না। ম্যানুয়াল বা কাগজপত্রভিত্তিক কোনো ছাড়পত্র এই সময়ের পর আর কার্যকর বিবেচিত হবে না। বিজ্ঞপ্তিতে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে যুক্ত অংশীজনদের বিএসডব্লিউ বাস্তবায়নে সহযোগিতার অনুরোধও জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এনবিআর বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের আওতায় বিএসডব্লিউ সিস্টেম ইতোমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিএসডব্লিউ মূলত একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, যা ব্যবহার করে একজন আমদানিকারক-রপ্তানিকারক পণ্য খালাসের জন্য প্রযোজ্য সব ধরনের সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিটের (সিএলপি) জন্য অনলাইনে আবেদন করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সিএলপি সংগ্রহ করতে পারেন। সিএলপি গ্রহণের আগে ব্যবসা শনাক্তকরণ নম্বর (বিআইএন) ব্যবহার করে বিএসডব্লিউ সিস্টেমে নিবন্ধন করতে হবে।
সিএলপি গ্রহণের পূর্বে বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (বিআইএন) ব্যবহার বিএসডব্লিউ নিবন্ধন করতে হবে। এই সিস্টেম ব্যবহারের ফলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে যে সকল সুবিধা পাওয়া যাবে সেগুলো হলো-একটি কমন প্লাটফর্মে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের জন্য প্রযোজ্য সার্টিফিকেট, লাইসেন্স এবং পারমিট সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থা কর্তৃক যুগপৎভাবে অনলাইনে সম্পন্ন করা হবে; সরকারি কাজে ব্যক্তিগত যোগাযোগ (হিউম্যান ইন্টারেকশন) না থাকায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে; পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে সময় ও ব্যয় হ্রাস পাবে; দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থা সৃষ্টির মাধ্যমে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে।
এনবিআর সূত্রমতে, এনবিআর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন বিএসডব্লিউ সিস্টেম হতে ৩০ জুন পর্যন্ত স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইস্যুকৃত সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট (সিএলপি) এর সংখ্যা ৩ লাখ ৮৯ হাজার ১৫ অতিক্রম করেছে। সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট (সিএলপি) সমূহের ৮৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ এক ঘণ্টার কম সময়ে এবং ৯৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ একদিনের কম সময়ে স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় ইস্যু করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট ইস্যুকারী ১৯টি সংস্থার (ডিজিডিএ, ইপিবি, ডিওইএক্স, বিএনএসিডব্লিউসি, বেজা, বেপজা, ডিওই, বিএসটিআই, বিএইআরএ, বিএইসি, সিএএবি, বিটিআরসি, ডিওএফ, ডিএলএস, পিকিউডব্লিউ, বিডা, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, সিসিআই অ্যান্ড ই) ক্ষেত্রে ইস্যু করা সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো সিস্টেমের মাধ্যমে দাখিল করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ৩০ জুনের পর হতে আমদানি ও রপ্তানির পণ্যচালান শুল্কায়নের ক্ষেত্রে এই ১৯টি সংস্থার ইস্যু করা সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট বাংলাদেশ সিঙ্গে উইন্ডো সিস্টেমের মাধ্যমে দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ৩০ জুনের পর পণ্য চালান শুল্কায়নের ক্ষেত্রে কোন ধরনের ম্যানুয়াল সার্টিফিকেট লাইসেন্স ও পারমিট গ্রহণ করা হবে না। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে যুক্ত সকল অংশীজনকে বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো বাস্তবায়নে এনবিআরকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
** জুলাই থেকে পণ্য শুল্কায়নে ম্যানুয়াল সনদ বাতিল
** মার্চ থেকে পেপারলেস আমদানি-রপ্তানি: অর্থ উপদেষ্টা
** বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো আংশিকভাবে চালু
** এইও সিস্টেম চালু, ১০ প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে সনদ
** দেড় মাসে বিএসডব্লিউ থেকে এক লাখ সনদ
** এক প্ল্যাটফর্মেই আমদানি-রফতানির অনুমতি
** আমদানি–রপ্তানির পণ্য খালাসে নতুন শর্ত