** আটটি বিল অব এন্ট্রিতে আমদানি করা কাপড়ে শুল্ককর ফাঁকি প্রায় ৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা
আটটি বিল অব এন্ট্রিতে কাপড় আমদানি হয়েছে প্রায় ১৪৫ টন। ৪ থেকে ৯ আগস্ট এসব বিল অব এন্ট্রি দাখিল হয়েছে। শুল্কায়ন শেষে বন্ড সুবিধার এসব কাপড় বন্দর থেকে বেরও হয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের বন্ডেড ওয়্যারহাউজ বা গোডাউনে আসেনি। ধারণা করা হচ্ছে, বন্দর থেকে বের হওয়ার পর তা খোলাবাজারে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। কারণ, প্রতিষ্ঠানের বন্ডেড ওয়্যারহাউজে বন্ড সুবিধায় আমদানি করা এই কাপড় পাওয়া যায়নি। গাজীপুর শ্রীপুরের প্রোস্টার অ্যাপারেলস লিমিটেড নামে বন্ডেড প্রতিষ্ঠানটির ওয়্যারহাউজে প্রিভেন্টিভে গিয়ে ঢাকা উত্তর বন্ড কমিশনারেটের কর্মকর্তারা বন্ড সুবিধায় আমদানি করা এসব কাপড় পাননি। প্রতিষ্ঠানটি মূলত শুল্ককর ফাঁকি দিতে এই বিপুল পরিমাণ কাপড় খোলাবাজারে বিক্রি করে দিয়েছে বলে ধারণা করছেন কর্মকর্তারা।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গাজীপুরের পটকা গোসিঙ্গা শ্রীপুর এলাকার শতভাগ রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান মেসার্স প্রোস্টার অ্যাপারেলস লিমিটেড। ঢাকা উত্তর কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের আওতাধীন প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ‘বন্ড সুবিধার’ কাপড় খোলাবাজারে বিক্রি বা বন্ড সুবিধার অপব্যবহারের তথ্য পায় বন্ড কমিশনারেটের কর্মকর্তারা। এরই প্রেক্ষিতে ১৯ আগস্ট বিকেলে এই কশিনারেটের কর্মকর্তাদের একটি টিম প্রতিষ্ঠানটিতে প্রিভেন্টিভ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এ সময় প্রতিষ্ঠানের রেজিস্টার যাচাই করা হয়। এতে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানটির ওয়্যারহাউজে সম্প্রতি কোনো কাঁচামাল প্রবেশ বা এন্ট্রির তথ্য নেই। তবে বন্ড কমিশনারেটের তথ্য বলছে, প্রতিষ্ঠানটি ৪ থেকে ৯ আগস্ট চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে শুল্কায়ন শেষে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ‘ফ্রি অব কস্ট (এফওসি)’ এর মাধ্যমে আটটি বিল অব এন্ট্রিতে প্রায় ১৪৫ মেট্রিক টন কাঁচামাল বা কাপড় খালাস নিয়েছে। চীন থেকে বিভিন্ন ধরনের কাপড় আমদানি করা হয়েছে, যাতে শুল্ককরের পরিমাণ প্রায় ৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা। আটটি বিল অব এন্ট্রির মধ্যে ৪ আগস্ট তিনটি, ৬ আগস্ট চারটি ও ৯ আগস্ট একটি বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে এসব কাপড় খালাস নেয়া হয়েছে।
প্রিভেন্টিভে অংশ নেয়া কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটির রেজিস্টার আমরা যাচাই করেছি। যাতে দেখা গেছে, আটটি বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে শুল্কমুক্ত সুবিধার যেই ধরনের কাপড় আমদানি করা হয়েছে, সেসব কাপড় প্রতিষ্ঠানের ওয়্যারহাউজে নেই। ওয়্যারহাউসে অন্যান্য কাপড় রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের রেজিস্টার অনুযায়ী, ৪ থেকে ৯ আগস্ট চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাস নেয়া এসব কাপড় ওয়্যারহাউজে ঢুকানো হয়নি। কাপড় ঢুকলে তা রেজিস্টারে এন্ট্রি দেওয়া হতো। ধারণা করা হচ্ছে, বন্দর থেকে বের করে সড়কে এসব কাপড় হাওয়া করে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ খোলাবাজারে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। বন্ড সুবিধার অপব্যবহার করায় প্রতিষ্ঠানটি বিআইএন লকসহ অন্যান্য আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।