১২০০ কোটি পাচার: স্ত্রীসহ জাবেদের বিরুদ্ধে মামলা

সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও তাঁর স্ত্রী রুকমীলা জামানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সিআইডি। মামলাটি গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে দায়ের করা হয়েছে, জানানো হয়েছে সিআইডির মুখপাত্র বিশেষ পুলিশ সুপার জসিম উদ্দীন খানের মাধ্যমে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, পাচার করা অর্থ দিয়ে দুবাইয়ে ২২৬টি ফ্ল্যাট কেনার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা ও ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন তারা। এজাহারে অজ্ঞাতনামা ৬-৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আরব আমিরাত ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে অর্থ পাচার করে সম্পদ কিনেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়া তিনি আরামিট গ্রুপের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেছেন। চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির তিনবারের সভাপতি হিসেবেও তিনি দায়িত্বশীল ছিলেন।

সিআইডির তথ্যানুসারে, অনুসন্ধানের সময় পাওয়া তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১৬ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল বর্ষা দক্ষিণ তৃতীয়, বারশা দক্ষিণ, বারশা দক্ষিণ ৪, থানিয়া পঞ্চম, জাদ্দাফ, হাইবা ষষ্ঠ, উপসাগরীয় বাণিজ্যিক এলাকা, খায়রান, ইয়ালায়েস ২, বুর্জ খলিফা, জাবাল আলী, ওয়ার্ল্ড আইল্যান্ড, জাবেল দ্বিতীয়, মার্সা দুবাই, মে’আইসেম প্রথম, নাদ আল শেবা প্রথম, ওয়াদি আল সাফাসহ বিভিন্ন স্থানে ২২৬টি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন। এসব ফ্ল্যাটের মোট মূল্য ৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৫৭ হাজার ১৬৮ দিরহাম।

এছাড়া তাঁর স্ত্রী রুকমীলা জামানের নামে দুবাইয়ের আল বারশা দক্ষিণ তৃতীয় এলাকায় কিউ গার্ডেনস বুটিক রেসিডেন্সেস- ব্লক বি তে দুটি সম্পত্তির তথ্য পাওয়া গেছে, যেগুলোর মূল্য ২২ লাখ ৫০ হাজার ৩৬৯ দিরহাম। পাশাপাশি, সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তাঁর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে দুবাই ইসলামী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও ফার্স্ট আবুধাবি ব্যাংকে মোট চারটি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়া গেছে। এসব হিসাবের বিভিন্ন লেনদেন দিরহাম ও ডলারে হয়েছে, যা তৎকালীন মুদ্রার বিনিময় হারের ভিত্তিতে প্রায় ৩১১ কোটি ২৬ লাখ ৬ হাজার ৭৯৫ টাকা হিসেবে ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত রেকর্ড পর্যালোচনায় জানা গেছে, বিদেশে কোম্পানি নিবন্ধন, বিনিয়োগ এবং সম্পত্তি অর্জনের জন্য সাইফুজ্জামান চৌধুরীর অনুকূলে সরকার কোনো অনুমতি দেয়নি। তবুও তিনি বিদেশে সম্পত্তি ক্রয়, কোম্পানি নিবন্ধন এবং ব্যাংক হিসাব খোলার মাধ্যমে প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকা সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাচার করেছেন।

** ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের ৩৯ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
** যুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামানের সম্পদ বিক্রি হচ্ছে
** ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের যুক্তরাজ্যের সম্পত্তি জব্দ
** সাইফুজ্জামানের বিশ্বে ৭৫০০ কোটি টাকার সম্পদ
** সাইফুজ্জামান চৌধুরীর জন্য কর্ণফুলী টানেল!
** সাবেক ভূমিমন্ত্রীর ১০২ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ
** যুক্তরাজ্যেই ৩৬০টি বাড়ির মালিক সাবেক ভূমিমন্ত্রীর
** বাংলাদেশি রাজনীতিকের বৈশ্বিক সম্পত্তির সাম্রাজ্য

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!