১১ ও ১২ জুলাই শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও দেশের সব কাস্টম হাউস খোলা থাকবে। আমদানি-রপ্তানি গতিশীলতা বৃদ্ধি, আমদানি-রপ্তানিকারকদের ক্ষতি ও রাজস্ব ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শুক্র ও শনিবার কাস্টম হাউস খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) এনবিআরের প্রথম সচিব (কাস্টমস নীতি) মুহম্মদ রইচ উদ্দিন খান সই করা আদেশ জারি করা হয়েছে।
আদেশে বলা হয়েছে, অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের ধীরগতির কারণে গত কয়েকদিন দেশের আমদানি-রপ্তানি পণ্যচালান ছাড় প্রক্রিয়া কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়। দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য নিরবচ্ছিন্ন রাখার উদ্দেশ্যে আগামী ১১ ও ১২ জুলাই সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত কার্যক্রম চলমান রাখার প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য সব কাস্টম হাউসের কশিনারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের আহ্বানে সারাদেশে ৬১ দিন কর্মসূচি চলমান ছিলো। কখনো কলম বিরতি, প্রতিবাদ, কমপ্লিট শাটডাউন ও মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচিও পালন করা হয়েছে। প্রথম অবস্থায় দুই ঘণ্টা, তিন ঘণ্টা, অর্ধ-দিবস ও পূর্ণ দিবস কলম বিরতি চলমান ছিলো। শেষে কমপ্লিট শাটডাউন ও মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি দেওয়া হয়। এতে এনবিআরের আওতাধীন সব ভ্যাট, আয়কর ও কাস্টম হাউসের কার্যক্রম বন্ধ ছিলো। প্রথম দিকে কাস্টম হাউসে কিছু কার্যক্রম চলমান থাকলেও শেষে কমপ্লিট শাটডাউন ও মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচিতে কয়েকদিন আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম একেবারে বন্ধ ছিলো। এতে বন্দরে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের কন্টেইনার জট তৈরি হয়েছে। যার ফলে আমদানি-রপ্তানিতে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। এতে দেশের অর্থনীতি ক্ষতি হয়। ক্ষতির মুখে পড়েন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া রাজস্ব আদায়ে প্রভাব পড়ে। পরে ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় ঐক্য পরিষদ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয়।
সূত্রমতে, কর্মকর্তাদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির কারণে দুদিন দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দরে আমদানি-রফতানির শুল্ককর আদায় কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এতে বিভিন্ন বন্দরে পণ্য নিয়ে আসা গাড়ির জট তৈরি হয়। স্থবির হয়ে পড়ে স্থলবন্দরগুলোর সামগ্রিক কার্যক্রম। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে। তাদের কর্মসূচির কারণে অন্তত হাজার কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে সরকার। পাশাপাশি আমদানি-রফতানি কার্যক্রমেও মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর এবং বেসরকারি ডিপোগুলোতে জমেছে কনটেইনারের জট। এই জট কাটতে এক সপ্তাহ লাগবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার ও রবিবার পুরোপুরি বন্ধ ছিল চট্টগ্রাম কাস্টমের কার্যক্রম। এতে রাজস্ব আসেনি ৬০০ কোটি টাকা। এর বাইরে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা দুই মাসব্যাপী কর্মসূচিতে কখনও দুই ঘণ্টা, কখনও তিন-চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাতে আরও ৪০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় কমেছে। সব মিলিয়ে এই আন্দোলনে হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় থেকে পিছিয়ে গেছে চট্টগ্রাম কাস্টম। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও কাস্টমসের কার্যক্রম সচল রাখা হয়েছে।