রাজধানীর কেরানীগঞ্জে রাজউকের ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পে ‘বিশেষ বিবেচনায়’ প্লট বরাদ্দের তালিকায় স্থান পেয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ জন গাড়িচালক। তাঁদের তিন ও পাঁচ কাঠার প্লট বরাদ্দ দিতে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে রাজউককে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। অথচ ‘বিশেষ বিবেচনায়’ প্লট বরাদ্দের নিয়ম অনুযায়ী, এটি শুধু রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ‘অসামান্য অবদান’ রাখা চার শ্রেণির ব্যক্তির জন্য প্রযোজ্য হওয়ার কথা।
রাজউকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালিত একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযানে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গাড়িচালকদের নামে প্লট বরাদ্দের তথ্য প্রকাশ পায়। বুধবার চালানো এই অভিযানের তথ্য বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন সংস্থাটির মহাপরিচালক আক্তার হোসেন। তিনি জানান, ২০২৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় রাজউক চেয়ারম্যানকে পাঠানো এক চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত ১৫ জন গাড়িচালকের নাম উল্লেখ করে তাঁদের মধ্যে তিন ও পাঁচ কাঠার প্লট বরাদ্দের অনুমোদন দেওয়া হয়।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, চিঠিতে স্বাক্ষর করেছিলেন তৎকালীন যুগ্ম সচিব মো. মিজানুর রহমান। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত ১৫ জন গাড়িচালকের আবেদনের প্রেক্ষিতে রাজউকের ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পে প্রতি দুজন চালকের অনুকূলে একটি করে তিন কাঠার প্লট এবং তিনজন চালকের অনুকূলে একটি পাঁচ কাঠার প্লট বরাদ্দের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তালিকায় থাকা চালকদের মধ্যে রয়েছেন ভিভিআইপি ও ভিআইপিদের গাড়িচালক, বিভিন্ন সচিব, প্রটোকল অফিসার এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারীদের চালকেরা।
দুদকের অভিযানে রাজউকের পূর্বাচল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দসংক্রান্ত নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০০৯ সালের নীতিমালা অনুযায়ী সেখানে ৯৩৪টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে প্রাথমিক অনুসন্ধানে নীতিমালার ১৩/এ ধারা যথাযথভাবে মানা হয়নি বলে জানা গেছে। বরাদ্দ প্রক্রিয়ায় একাধিক অনিয়মের প্রাথমিক প্রমাণও পাওয়া গেছে।