স্বাস্থ্য গবেষণার বাজেট বরাদ্দে প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে। ভারতের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বাজেটের তুলনায় প্রায় ১৯ গুণ বেশি। এমনকি শ্রীলঙ্কার তুলনাতেও বাংলাদেশের বরাদ্দ প্রায় চার গুণ কম। এসব তথ্য শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মহাখালীতে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (বিএমআরসি) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় জানানো হয়। সভায় প্রধান প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএমআরসির সভাপতি অধ্যাপক ডা. সায়েবা আক্তার।
তিনি জানান, ভারতের গবেষণা কাউন্সিল আইসিএমআরের বার্ষিক বাজেট ২৮৩.১৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা জনসংখ্যা অনুযায়ী মাথাপিছু ০.১৯ ডলার। তুলনায়, বিএমআরসির বাজেট মাত্র ১.৮২ মিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ মাথাপিছু মাত্র ০.০১ ডলার। শ্রীলঙ্কার জাতীয় গবেষণা পরিষদ (এনআরসি)-এর বাজেট ০.৮৬ মিলিয়ন ডলার, যা মাথাপিছু ০.০৪ ডলার।
অধ্যাপক সায়েবা আক্তার বলেন, ‘এ ধরনের চরম বৈষম্য বাংলাদেশের গবেষণার সক্ষমতা হ্রাস করছে। পাশাপাশি, বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় দেশের অবস্থান দুর্বল করছে।’ সভায় গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ, নীতিগত অগ্রাধিকার নিশ্চিত করাসহ গবেষণা অবকাঠামো উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
আগ্রহ বাড়লেও অনুদানে চাপ
সভায় জানানো হয়, সাম্প্রতিক সময়ে স্বাস্থ্যখাতের গবেষণায় শিক্ষার্থী ও গবেষকদের আগ্রহ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। চলতি অর্থবছর (২০২৫–২৬) ছাত্র অনুদানের জন্য রেকর্ডসংখ্যক ৫৮২টি আবেদন জমা পড়েছে, যা গত বছরের ১৫০টির তুলনায় প্রায় চার গুণ বেশি। একই ধারা গবেষক অনুদানের ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে। ২০২৫–২৬ অর্থবছরে গবেষক অনুদানের জন্য ৭১১টি আবেদন জমা পড়েছে, যা আগের বছরের ৩০৬টির তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।
ডা. সায়েবা বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গবেষণাবান্ধব পরিবেশ তৈরি, অনুদান প্রাপ্তির প্রক্রিয়া সহজ হওয়া এবং সামগ্রিকভাবে গবেষণার প্রতি আগ্রহ বাড়ার ফলেই এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে আগামীতে দেশে আরও মানসম্মত গবেষণা প্রত্যাশিত।’
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (সচিবের দায়িত্বে) মাহবুব আলম এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন।