স্বর্ণ চোরাচালান রোধে কড়া নজরদারির দাবি ব্যবসায়ীদের

মো: বিপ্লব বেপারী: দেশের স্বর্ণ তথা জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। চোরাই স্বর্ণের চালানসহ স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা কখনোই আটক হননি। চোরাচালানে কোনো ব্যবসায়ীর সংশ্লিষ্টতার তথ্য পেলে আইনের হাতে তুলে দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ব্যবসায়ীরা।

সীমান্তে চোরাচালান রোধে কড়া নজরদারিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া, অন্যান্য মামলার রহস্য উদঘাটনের মতো আটক চোরাকারবারিদের পেছনে কারা আছে, তাদের খুঁজে বের করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

শুক্রবার রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরার (আইসিসিবি) নবরাত্রি হলে বাজুস ফেয়ারের আয়োজিত এক সেমিনারে ব্যবসায়ীরা এসব কথা বলেন। সোনা চোরাচালান বন্ধে করণীয়- শীর্ষক সেমিনারটির আয়োজন করে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।
বাজুসের সহ-সভাপতি রিপনুল হাসান বলেন, যে স্মাগলিং করছে, সে স্বর্ণ নিয়ে আসছে শর্ট টাইমে। আর আমার বৈধভাবে স্বর্ণ আনতে সময় লাগছে ১৫ দিন। আমাকে সে সুবিধাটা করে দিন, দেখুন চোরাকারবারি থাকে কি না। খুনসহ অন্যান্য মামলার রহস্য উদঘাটন করা হয়, ঘটনার পেছনের গডফাদারদের বের করা হয়। কিন্তু এ পর্যন্ত যত চোরাকারবারি ধরা পড়ছে, তার পেছনে কে আছে, তা কেউ বের করছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য যারা আছেন, আপনারা বের করে দেখুন তারা কেউ বাজুসের সদস্য নয়।

বাজুসের সাবেক সভাপতি দীলিপ কুমার রায় বলেন, চোরাচালানে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের জড়িত থাকার অপবাদ নিয়ে আমরা যুগের পর যুগ ভুগছি। যুগের পর যুগ ধরে চলা এ দায় থেকে আমরা মুক্তি চাই। পার্শ্ববর্তী দেশসহ অনেক দেশ আছে, যাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্বর্ণ বিক্রি করে। আমাদের দেশেও এমন ব্যবস্থা চালু হোক, আমরা চালান জমা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে স্বর্ণ কিনব। বসুন্ধরা গ্রুপ গোল্ড রিফাইনারি চালু করছে, আমরা তাদের কাছ থেকে সাপ্লাই পেলেও চোরাকারবারি থাকবে না।

যে দেশের সীমান্ত নিরাপত্তা যত দুর্বল, সে দেশে চোরাকারবারিদের রুট ততো বেশি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের বর্ডার সিল করতে পারলে, বাংলাদেশ হয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে যে পরিমাণ স্বর্ণ যায়, প্রতি বছর সেসব আটকাতে পারলে স্বর্ণ দিয়ে পদ্মা সেতুর পিলারের মতো এক একটা পিলার বানানো সম্ভব। এ ছাড়া যে পরিমাণ স্বর্ণ আটক হয়, সে পরিমাণ ব্যাংকে জমা পড়ে না। দেখা যায়, ১০০ ভরি আটক হয়, আর জমা হয় ২৫ ভরি। আবার দেখা যায় ২৪ ক্যারেটের স্বর্ণ ধরা পড়ছে, কিন্তু আমরা নিলামে কিনতে গেলে পাই ১৪-১৫ ক্যারেটের।

উত্তম বণিক বাজুসের কোষাধ্যক্ষ বলেন, চোরাচালানের সঙ্গে কোনো ব্যবসায়ী জড়িত নন। যদি কোনো ব্যবসায়ীর জড়িত থাকার খবর বাজুস জানে, তাহলে তাকে বাজুস থেকে বহিষ্কার করে আইনের হাতে তুলে দেবে। কিন্তু এ পর্যন্ত চোরাচালানে আটক একজনের সঙ্গে কি ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ততা আছে? চোরাচালান বন্ধ আমাদের করার কথা নয়। কারণ, কারা করছে সেটা খুঁজবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আমরা চোরাচালান করি না।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!