ভারত দেড় মাসের ব্যবধানে আবারও বাংলাদেশ থেকে স্থল বন্দর দিয়ে কিছু পাটপণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করেছে, যা অবিলম্বে কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে এসব পণ্য শুধুমাত্র মুম্বাইয়ের নভসেবা (জওহরলাল নেহরু) সমুদ্রবন্দর হয়ে প্রতিবেশী দেশে প্রবেশ করতে পারবে। দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে চলমান টানাপোড়েনের মাঝে সোমবার নয়া দিল্লি এই নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দেশটির বৈদেশিক বাণিজ্য বিভাগ ডিজিএফটির নির্দেশনায় নতুন করে স্থল বন্দরে নিষিদ্ধ পাটপণ্যের তালিকা প্রকাশ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে পাটের ছালা ও কাপড়, তন্তুজাত আঁশ, সূতা, দড়ি বা রশি, বস্তা ও ব্যাগ। এর আগে, ২৭ জুন ডিজিএফটি নয়টি পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। সেই তালিকায় বিভিন্ন ধরনের বোনা কাপড়ের পাশাপাশি পাটের অপরিশোধিত আঁশ ও পাঁটের সুতা (যেমন ক্যানাফ, হেম্প, রামি ইত্যাদি) অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ডিজিএফটি তখন জানিয়েছিল, এই নিষেধাজ্ঞা ভারতের মধ্য দিয়ে নেপাল ও ভুটানে রফতানি করা পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। তবে বাংলাদেশ থেকে এসব পণ্য নেপাল বা ভুটান হয়ে ভারতে রফতানি করা যাবে না।
সোমবারের আদেশে বলা হয়েছে, গত ২৭ জুনের আদেশের শর্তসহ অন্যান্য বিধি অপরিবর্তিত থাকবে এবং এ ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। পাশাপাশি, বাংলাদেশ থেকে নির্দিষ্ট কিছু পণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।
বিশ্বে পাট এবং পাটজাত আঁশ ও সুতার অন্যতম প্রধান রপ্তানিকারক হিসেবে বাংলাদেশ অন্যতম অবস্থানে রয়েছে, যার বড় অংশ ভারতের বাজারে যায়। অবজারভেটরি অব ইকোনমিক কমপ্লেক্সিটির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বাংলাদেশ ভারতের কাছে পাট ও অন্যান্য টেক্সটাইল ফাইবার রপ্তানি করেছে ৯ কোটি ৩৬ লাখ ডলারের মানের পণ্য। এর মধ্যে জুট ইয়ার্ন রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৬ কোটি ১৮ লাখ ডলার।
গত কয়েক মাসে নয়া দিল্লি চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশি পণ্যে এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর আগে ১৭ মে ভারত বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের আমদানিতে একই ধরনের বন্দর ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছিল। তার আগে ৯ এপ্রিল বাংলাদেশকে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে রপ্তানির জন্য দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করা হয়। তবে নেপাল ও ভুটানের ক্ষেত্রে এই সুবিধা বহাল থাকে।
বস্ত্র খাতে বাংলাদেশকে ভারতের ‘গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগী’ হিসেবে উল্লেখ করে টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ২৯০ কোটি ডলার। এর মধ্যে ভারতের রপ্তানি ছিল প্রায় ১ হাজার ১৪৬ কোটি ডলার এবং আমদানি ছিল প্রায় ২০০ কোটি ডলার।
**বাংলাদেশের ৯ পণ্য আমদানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা
** ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানি বন্ধ
** ভারতের সাথে টাগবোট কেনার চুক্তি বাতিল
** বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞায় ভারতকে বাংলাদেশের চিঠি
** ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যে বড় ঘাটতিতে বাংলাদেশ
** বাংলাদেশি কিছু পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিল ভারত
** বাণিজ্য বিধিনিষেধে বাংলাদেশ নয়, ভারতও ভুগবে
** স্থলবন্দরের মাধ্যমে সুতা আমদানি বন্ধ হচ্ছে
** পেঁয়াজ রপ্তানিতে ২০ % শুল্ক ছাড় দিলো ভারত
** বাজার নিয়ন্ত্রণ: চাল আমদানিতে শুল্ক ছাড় চায় মন্ত্রণালয়
** আখাউড়া দিয়ে এসেছে ৬০০ টন গম