সোনা চোরাচালান: বাংলাদেশ বিমানের উড়োজাহাজ জব্দ

চোরাচালানের সোনা বহনের অভিযোগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজ জব্দ করা হয়েছে। ওই উড়োজাহাজ থেকে দুই কেজি ৩২০ গ্রাম সোনা জব্দ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজটির একটি আসনের নিচ থেকে ওই সোনা জব্দ করা হয়। এরপরই বিকেলে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা প্রায় হাজার কোটি টাকা মূল্যের উড়োজাহাজটি জব্দ করেন। কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. মিনহাজ উদ্দিন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
Biman CIID
উল্লেখ্য, দেশে যত সোনা চোরাচালান হয়, তার সিংহভাগই হয় উড়োজাহাজের মাধ্যমে। সোনা চোরাচালান প্রতিরোধে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর পদক্ষেপ নেয়। বিশেষ করে ২৭ অক্টোবর ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজে সোনা আটকের পর কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর উদ্যোগ নেন যে, যে উড়োজাহাজে সোনা চোরাচালান হবে, সেই উড়োজাহাজ জব্দ করা হবে। একইসঙ্গে ওই উড়োজাহাজ কোম্পানির এমডি বা সিইও-কে গ্রেফতার করা হবে। উড়োজাহাজে সোনা আটকের ঘটনায় কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে-তা জানাতে ১২ নভেম্বর ইউএস বাংলাকে চিঠি দেওয়া হয়। একইসঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ দেশের সব বিমান কোম্পানিকে এই চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে সোনা চোরাচালানে অভিযুক্ত হলে উড়োজাহাজ জব্দ করা, এমডি-সিইও-কে গ্রেফতারের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ওই উড়োজাহাজ জব্দ করা হয়েছে। এক দশক আগে ঢাকায় চোরাচালানের সোনা বহন করায় দুটি উড়োজাহাজ জব্দ করার নজির রয়েছে।
Gold Biman CIID
মো. মিনহাজ উদ্দিন বলেন, উড়োজাহাজটি আজ সকালে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ সময় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সহযোগিতায় এই উড়োজাহাজের ‘৯জে’ আসনের নিচ থেকে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা মূল্যের ২ কেজি ৩৩০ গ্রাম ওজনের ২০টি সোনার বার জব্দ করেন কাস্টমস গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এই অভিযানে অংশ নেন বিমানবন্দরের নিরাপত্তা শাখার কর্মীরাও। এ ঘটনায় ওই আসনের যাত্রী আতিয়া সামিয়াকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তার বাড়ি রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানা এলাকায়। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। গ্রেপ্তার আতিয়া সামিয়া সংযুক্ত আরব আমিরাতে ‘ওশেন গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ড জুয়েলারি’ নামের একটি দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করেন। দেশেও তিনি অনলাইনে সোনা বিক্রি করেন।

কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, সোনার বারগুলো উড়োজাহাজের আসনের নিচে বিশেষ কায়দায় প্লাস্টিকের টেপ দিয়ে মোড়ানো ছিল। উড়োজাহাজটির কারও সহযোগিতা ছাড়া কোনো যাত্রীর পক্ষে এভাবে সোনার বার লুকানোর কথা নয়। জব্দ করা বোয়িং ৭৭৭-ইআর মডেলের উড়োজাহাজটির মূল্য দেখানো হয়েছে এক হাজার কোটি টাকা। এই ঘটনা বিচারাদেশের জন্য নথি চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছেন কাস্টমস গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। চোরাচালানের পণ্য বহন করা কাস্টমস আইন অনুযায়ী এ উড়োজাহাজটি জব্দ করা হয়েছে। এতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসও জবাবদিহির মধ্যে আসবে।

** বিমানে সোনা মিললে এমডি-সিইও গ্রেফতার হবেন
** শাহজালালে বাংলাদেশ বিমান থেকে ২৩ কেজি স্বর্ণ জব্দশাহজালালে বাংলাদেশ বিমান থেকে ২৩ কেজি স্বর্ণ জব্দ
** যাত্রীর প্যান্ট, জুতা আর পায়ুপথ থেকে ৩২ স্বর্ণবার জব্দ
** দুবাই ফেরত যাত্রীর রেক্টাম, বিমানের সিটে তিন কেজি সোনা
** বিমানের পাইপে মিললো পৌনে দুই কেজি সোনা
** দুবাই ফেরত যাত্রী থেকে ৪০ হাজার শলাকা সিগারেট জব্দ
** বিমানবন্দরে দুই লাখ ৩০ হাজার ডলারসহ দুই যাত্রী আটক
** প্রবাসীর ব্যাগে মিলল ১.২১৬ কেজি সোনার বার-চুড়ি-দুল
** ‘পেস্ট ফেব্রিক্স’ সোনা পাচারের নব কৌশল‘পেস্ট ফেব্রিক্স’ সোনা পাচারের নব কৌশল
** শাহজালালে পৌনে দুই কোটি টাকার স্বর্ণসহ যাত্রী আটক
** যাত্রীর শরীরে মিললো সোয়া কোটি টাকার সোনা
** মহিলা যাত্রীর শরীরের মিলল এক কেজি সোনা

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!