চট্টগ্রাম ক্লাবের একটি কক্ষে সাবেক সেনাপ্রধান অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল এম হারুন উর রশীদকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। পরিবার ও পুলিশের ধারণা, তিনি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মারা গেছেন। সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এম হারুন উর রশীদের বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে হলেও তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় বসবাস করছিলেন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মো. আলমগীর হোসেন জানান, সাবেক সেনাপ্রধান হারুন উর রশীদ রোববার বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পৌঁছান। বিকেল ৪টার দিকে তিনি চট্টগ্রাম ক্লাবের একটি ভিআইপি কক্ষে ওঠেন। প্রায় এক ঘণ্টা পর ক্লাব থেকে বের হয়ে রাত পৌনে ১১টায় আবার ফিরে আসেন। কক্ষে প্রবেশের আগে তিনি রিসেপশনে গিয়ে নাশতার সময় জেনে নেন। তবে সকালে ১০টা পর্যন্ত কক্ষের দরজা না খোলায় সন্দেহ হয়। তখন পেছনের জানালা দিয়ে দেখলে দেখা যায়, তিনি বিছানায় নিথর অবস্থায় পড়ে আছেন।
পুলিশ কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, সাবেক সেনাপ্রধান রোববার রাতে কোনো এক দাওয়াত থেকে ফিরে ক্লাবে আসেন। আজ সকালে তাঁর একটি কর্মসূচি ছিল। সকাল ১০টা পর্যন্ত তিনি কক্ষ থেকে না বের হওয়ায় তাঁর সঙ্গে থাকা আর্মি প্রটোকল টিমের সদস্যদের সন্দেহ হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘পরে ক্লাবের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে কক্ষের পেছনের কাচের জানালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাঁরা দেখতে পান, তিনি মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন। আমাদের প্রাথমিক ধারণা, তিনি স্ট্রোক করেছিলেন। আমরা ময়নাতদন্তের পরামর্শ দিয়েছি। এখন তাঁর পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সাবেক সেনাপ্রধানের নিকটাত্মীয় এনাম আহমেদ জানান, ‘আজ তাঁর একটি মামলায় আদালতে হাজিরা ছিল, এজন্যই তিনি ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে এসেছিলেন। চট্টগ্রাম ক্লাবের ভিআইপি রুমে একাই ছিলেন। সম্ভবত স্ট্রোক করেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।’
এম হারুন উর রশীদের বয়স ছিল প্রায় ৭৫ বছর। তিনি বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত এক মুক্তিযোদ্ধা। ২০০০ সালের ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২০০২ সালের ১৬ জুন পর্যন্ত তিনি দেশের দশম সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অবসরে যাওয়ার পর তিনি ডেসটিনি গ্রুপের সঙ্গে ব্যবসায় যুক্ত হন। এ কারণে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয় এবং তিনি সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাভোগও করেন।