কোভিড ও ডেঙ্গুর শঙ্কার মধ্যে দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে সাড়ে ১২ লাখ শিক্ষার্থী এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকাল ১০টায় বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষার মাধ্যমে এ বছরের পরীক্ষা শুরু হয়। দেশের ৯ হাজার ৩১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২০২৩ সালের সংক্ষিপ্ত বা পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাস অনুযায়ী এবার পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষা বোর্ডগুলোর আগের ঘোষণা অনুযায়ী, সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময় বরাদ্দ রেখেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
পরীক্ষা শুরুর অন্তত ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে উপস্থিত হতে শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ফলে সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন কেন্দ্রের সামনে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভিড় দেখা যায়। যানজট এড়াতে অনেকে আগেভাগেই কেন্দ্রে পৌঁছান। তবে অনিবার্য কারণে কেউ নির্ধারিত সময়ের পর কেন্দ্রে এলে তার নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময় ও বিলম্বের কারণ লিখিতভাবে লিপিবদ্ধ করে প্রতিদিন কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট বোর্ডে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কোনো কক্ষে পরীক্ষা বিলম্বে শুরু হলে যত মিনিট পরে পরীক্ষা শুরু হবে পরীক্ষার্থীদের ততটুকু সময় দেওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে।
কোভিড ও ডেঙ্গুর সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার নির্দেশনা দিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি। কমিটির আহ্বায়ক ও ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার জানিয়েছেন, পরীক্ষার্থীদের কোভিড-১৯ থেকে সুরক্ষিত রাখতে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশের সময় সবার জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পাশাপাশি, কেন্দ্রের প্রবেশপথে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য পরীক্ষা কেন্দ্রগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং সবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে। মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, গত বছর নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৫২০ জন। এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ১১টি শিক্ষা বোর্ডে অংশ নিচ্ছে মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী, যা গতবারের তুলনায় ৮১ হাজার ৮৮২ জন কম। এবারের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ৬ লাখ ১৮ হাজার ১৫ জন ছাত্র এবং ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬ জন ছাত্রী রয়েছে।
পরীক্ষার কেন্দ্রগুলোকে দেওয়া নির্দেশনাগুলো হলো :-
** পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশের সময় পরীক্ষার্থীসহ পরীক্ষাসংশ্লিষ্ট সকলের মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক।
** পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রবেশ পথে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে।
** ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে কেন্দ্রের অভ্যন্তরে ও আশপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
** পরীক্ষা শুরুর আগে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় কেন্দ্রের ভেতর মশক নিধন ওষুধ ছিটাতে হবে।
** তিন ফুট দুরত্ব রেখে পরীক্ষার্থীদের আসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
** প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্র মেডিকেল টিমকে সক্রিয় রাখতে হবে।
** স্বাস্থ্য বিধি মেনে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া এবং পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে অভিভাবকদের জটলা নিরুৎসাহিত করতে হবে।
এদিকে পরীক্ষা উপলক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ড কন্ট্রোল রুম খুলেছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের কন্ট্রোল রুম টেলিফোন নম্বর: ০২২২৩৩৫৬৭৮০, মোবাইল নম্বর: ০১৭৭৭-৭০৭৭০৫, ০১৭৪৯-৯৩৪৪১২ এবং ই-মেইল: [email protected]।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কন্ট্রোল রুমের টেলিফোন নম্বর: ০২-২২৩৩৬৯৮১৫, ০২-৫৮৬১০০৭১ মোবাইল নম্বর: ০১৭১৪৯৯৪০৭৩, ০১৭৫৬১০৩১৫২ এবং ই-মেইল: [email protected]।