প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেছেন, দেশে যেদিকেই তাকানো যায়, সেখানে কোনো না কোনো ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট সক্রিয় দেখা যায়। কাঠামোগত পরিবর্তন ব্যাহত হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, অনেক ব্যবসায়ী নিজেদের স্বার্থে সরকারের সঙ্গে গোপনে সমঝোতায় যান। শনিবার (১০ মে) রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ ২০৩০: অংশীদারত্বমূলক অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআরআই) ও নিমফিয়া পাবলিকেশন।
সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে লুৎফে সিদ্দিকী আরও বলেন, অনেকে সেমিনারে এসে বড় বড় কথা বলেন, বলেন কীভাবে কাঠামোগত পরিবর্তন দরকার। অথচ পরে দেখা যায়, তাঁরা নিজেরাই কোনো মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে গোপনে চুক্তিতে গেছেন, যা পুরো পরিবর্তনের প্রয়াসকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে।
অনুষ্ঠানে বইটি নিয়ে আলোচনা করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান, এমসিসিআই সভাপতি কামরান টি রহমান, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর এবং আইএফসি’র বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপাল অঞ্চলের কান্ট্রি ম্যানেজার মার্টিন হল্টম্যান। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন পিআরআই চেয়ারম্যান জাইদী সাত্তার।
এর আগে পিআরআই ভাইস চেয়ারম্যান সাদিক আহমেদ বইটি পরিচয় করিয়ে দেন। তিনি জানান, এই বইয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাব্য পথ নিয়ে বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, কয়েক মাস আগে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে অর্থনীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শ্বেতপত্রের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, শ্বেতপত্র প্রকাশের পর অনেকের মনে হতে পারে, এর সুপারিশগুলো হারিয়ে গেছে বা থেমে গেছে। তবে তিনি নিশ্চিত করে জানান, তিনি নিজে এবং তাঁর সহকর্মীরা প্রতিদিনের কাজ ও সিদ্ধান্তে এসব সুপারিশ বিবেচনায় রাখছেন। প্রধান উপদেষ্টাও তা অনুসরণ করছেন। তিনি আরও বলেন, জনসমক্ষে অগ্রগতি কম দেখা গেলেও শ্বেতপত্র বাস্তবায়নে কাজ চলমান রয়েছে। কীভাবে সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা যায়, সেটাই এখন মূল লক্ষ্য।