সয়াবিন তেল লিটারে ১৮ টাকা বাড়াতে চান ব্যবসায়ীরা

বোতলজাত সয়াবিনের দাম একলাফে লিটারে ১৮ টাকা বাড়াতে চান ব্যবসায়ীরা; আর খোলা সয়াবিনের দাম বাড়াতে চান লিটারে ১৩ টাকা। ভোজ্যতেলের কর–সুবিধার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরদিন আগামী ১ এপ্রিল থেকে এই দর কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছেন ভোজ্যতেলের ব্যবসায়ীরা।ভোজ্যতেল পরিশোধনের কারখানাগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বৃহস্পতিবার ( ২৭ মার্চ ) তাদের এই সিদ্ধান্তের কথা সরকারকে জানিয়েছে। দাম বাড়ানোর এই সিদ্ধান্তের কথা এদিন সংগঠনটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে লিখিতভাবে জানিয়েছে।

রোজার আগে ভোজ্যতেলের দাম সহনীয় রাখতে সরকার যে শুল্ক-কর রেয়াত সুবিধা দিয়েছিল, তা ৩১ মার্চ শেষ হতে যাচ্ছে। এর ফলে ব্যবসায়ীরা আর মাত্র চার দিন এই সুবিধা পাবেন। তবে সরকার এখনো এই অব্যাহতির মেয়াদ বাড়াবে কি না, সে বিষয়ে কোনো ঘোষণা দেয়নি। এরই মধ্যে ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কারখানার মালিকেরা দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। ব্যবসায়ীদের মতে, যদি ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ বাড়ানো হয়, তবে দাম আগের মতোই থাকবে। কিন্তু শুল্ক-কর ছাড় উঠে গেলে আমদানির খরচ বেড়ে যাবে, ফলে দাম বাড়ানো ছাড়া বিকল্প থাকবে না।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শুল্ক–কর অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় মূল্য সমন্বয়ের কথা বলা হয়েছে সংগঠনটির চিঠিতে। চিঠিতে বলা হয়, আগামী ১ এপ্রিল থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিয়ে সয়াবিন ও পাম তেল বাজারজাত করতে হবে। এ অবস্থায় মূল্য সমন্বয় করে পাম ও সয়াবিনের দাম উল্লেখ করা হয় চিঠিতে।

বোতলজাত সয়াবিনের দাম সর্বশেষ গত ৯ ডিসেম্বর বাড়ানো হয়েছিল। তখন লিটারপ্রতি দাম নির্ধারণ করা হয় ১৭৫ টাকা। আগামী ১ এপ্রিল থেকে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯৩ টাকা। সেই হিসাবে লিটারে দাম বাড়ছে ১৮ টাকা। পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিনের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৩৫ টাকা।একইভাবে খোলা সয়াবিন ও খোলা পাম তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে লিটারপ্রতি ১৭০ টাকা। এখন সরকার–নির্ধারিত দাম লিটারপ্রতি ১৫৭ টাকা। এ হিসাবে খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ছে লিটারপ্রতি ১৩ টাকা।

রোজার আগে দাম সহনীয় রাখতে সরকার গত বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরে কয়েক দফায় ভোজ্যতেল আমদানি, উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট ছাড় দেয়। পরে এই সুবিধার মেয়াদ বাড়িয়ে ৩১ মার্চ পর্যন্ত করা হয়। তবে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন ভোজ্যতেলের দাম নিয়ন্ত্রণে আমদানি পর্যায়ের শুল্ক-কর রেয়াত ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর সুপারিশ করেছিল এবং এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে চিঠিও পাঠায়। কিন্তু এখনো এনবিআর এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। এমন পরিস্থিতিতে ঈদের ছুটির আগে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা সরকারকে জানিয়ে দিয়েছে ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের সংগঠন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে টি কে গ্রুপের পরিচালক শফিউল আতহার বলেন, ১ এপ্রিল থেকে সয়াবিন ও পাম তেল বাজারজাত করার পর থেকে আগের মতোই মূল্য সংযোজন কর দিতে হবে। মূল্য সংযোজন কর বাবদ এই খরচ সমন্বয় করে ভোজ্যেতেলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!