** বর্তমানে ৫ লাখ টাকা বা তার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে রিটার্ন দাখিলের কপি দিতে হয়
** ১০ লাখ টাকার বেশি টাকার এফডিআর খুলতে রিটার্ন দাখিলের কপি দিতে হয়
** কয়েকটি পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যপত্র নিতে রিটার্ন দাখিলের কপি দিতে হয়
** ২০২৫-২৬ বাজেটে সঞ্চয়পত্র ও এফডিআর খোলাসহ ১০ সেবায় ছাড় পাচ্ছেন করদাতারা
সঞ্চয়পত্রে অনেকেই লাখ লাখ বিনিয়োগ করেন। কিন্তু রিটার্ন দাখিল করেন না। আবার অনেকেই ব্যাংকে লাখ লাখ টাকার এফডিআর করেন। কিন্তু রিটার্ন দাখিল করেন না। রিটার্ন দাখিল না করায় এক অর্থে তারা করজালে আসে না। সঞ্চয়পত্র ক্রয়কারী ও এফডিআরে বিনিয়োগকারীদের করের আওতায় আনতে এই দুই খাতে বিনিয়োগে ‘আয়কর রিটার্ন দাখিলের’ শর্ত বা পিএসআর জমার বাধ্যবাধকতা আরোপ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছর এই শর্ত শিথিল করা হতে পারে। পিএসআর এর পরিবর্তে ই-টিআইএন এর কপি দিতে হবে। এছাড়া কয়েকটি পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যপদ নেয়ার ক্ষেত্রেও পিএসআর এর শর্ত শিথিল করা হতে পারে বলে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে।
একাধিক সূত্রমতে, বর্তমানে পাঁচ লাখ টাকা বা তার বেশি টাকার সঞ্চয়পত্র কিনতে গেলেই আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র বা পিএসআর দাখিলের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আগামী বাজেটে তা থাকছে না। মূলত সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ বাড়াতে এই শর্ত শিথিল করা হচ্ছে। পাশাপাশি ব্যাংকে ১০ লাখ টাকা বা তার বেশি মেয়াদি আমানত খুলতেও রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেওয়ার বাধ্যবাধকতাও উঠে যাচ্ছে। এ ছাড়া চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, হিসাববিদ, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট, ইঞ্জিনিয়ার, স্থপতি, সার্ভেয়ারসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ পেতে এবং তা বহাল রাখতেও এ ধরনের বিধান থাকছে না। তবে পিএসআর এর পরিবর্তে ই-টিআইএন দিলেই হবে।
একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, করসেবা সহজ করতে এবং বিনিয়োগ বাড়াতে যেসব সেবায় পিএসআর দাখিলের প্রয়োজন নেই, সেসব জায়গায় শর্ত শিথিল করা হচ্ছে। এক অর্থে সঞ্চয়পত্র ও এফডিআর থেকে সরকার ট্যাক্স কেটে নেয়।
সূত্রমতে, বর্তমানে দেশে ৪৫টি সরকারি-বেসরকারি সেবা পেতে গেলে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র বা পিএসআর দেখাতে হয়। মূলত রিটার্ন জমার সংখ্যা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে টানা কয়েক বছর ধরে বাড়ানো হয়েছে এর আওতা। এতে আয়কর আদায় না বাড়লেও বহুগুণে বেড়েছিল ভোগান্তি। যেসব ক্ষেত্রে পিএসআর দাখিলের বাধ্যবাধকতা আছে সে ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি পিএসআরের সত্যতা যাচাইয়ে ব্যর্থ হলে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করার বিধান রাখা হয়েছে ২০২৩ সালের প্রণীত আয়কর আইনে। কঠোর বিধান রাখায় বিভিন্ন সেবা পেতে গেলে বাধ্য হয়েই রিটার্ন জমার আওতায় এসেছেন অনেক করদাতা। অবশ্য এতে শূন্য রিটার্নের পরিমাণই বেড়েছে। প্রকৃত করদাতার সংখ্যা বাড়েনি।
বর্তমানে যে ৪৫টি সেবায় রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক সেগুলো হলো-করযোগ্য আয় না থাকলে ২০ লাখের বেশি টাকার ঋণ নিতে, কম্পানি পরিচালক পদ পেতে, আমদানি-রপ্তানি সনদ, ব্যবসা শুরুর ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ ও নবায়নে, সমবায় সমিতির লাইসেন্স নিতে, বীমা কম্পানির সার্ভেয়ার হিসেবে নিবন্ধন পেতে, ১০ লাখ টাকার বেশি মূল্যের জমি-ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রিকালে, ক্রেডিট কার্ড নিতে, পেশাজীবী সংগঠনের সদস্য পদ পেতে, কাজী সনদ গ্রহণ করতে, বাণিজ্য সংগঠনের সদস্য পদ পেতে, ড্রাগ লাইসেন্স, ফায়ার লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র ও বিএসটিআইয়ের সনদ পেতে, বাণিজ্যিক ও শিল্পে ব্যবহৃত গ্যাস সংযোগ অথবা সিটি করপোরেশন এলাকায় আবাসিক গ্যাস সংযোগ পেতে, নৌযানের সার্ভে সনদ নিতে, ইটভাটা চালু করতে, বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে, কম্পানির এজেন্সি বা ডিস্ট্রিবিউটরশিপ পেতে, আগ্নেয়াস্ত্র সনদ পেতে, আমদানির এলসি খুলতে, পাঁচ লাখ টাকার বেশি ডাকঘর সঞ্চয়পত্র ও পাঁচ লাখ টাকার বেশি অন্য সঞ্চয়পত্র কিনতে, ১০ লাখ টাকার বেশি মেয়াদি আমানত খুলতে, উপজেলা, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে, মোটরযানের নিবন্ধন, মালিকানা পরিবর্তন বা ফিটনেস নবায়নে, শেয়ারড ইকোনমিক অ্যাক্টিভিটিজে অংশগ্রহণে, গণকর্মচারীর বেতন-ভাতা প্রাপ্তিতে, বিল অব এন্ট্রি দাখিলে, দলিল লেখক হিসাবে নিবন্ধন ও বাড়ির নকশা অনুমোদনে।
** করমুক্ত আয়সীমা বাড়তে পারে
** বাড়তে পারে সেবা মাশুল, সুদ, টোল ও ইজারামূল্য
** করপোরেট করের শর্ত শিথিল হচ্ছে, মিলবে সুফল
** কমছে বাজেটের আকার, বাড়ছে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা
** ২০২৫-২৬ বাজেটে টাস্কফোর্সের যত সুপারিশ
** বাজেটে জমি-ফ্ল্যাটের নিবন্ধন কর কমেতেছে!
** বাজেটে ফ্রিজ-এসিতে ভ্যাট বাড়ছে