নাসা গ্রুপকে ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের অন্যতম মালিক নজরুল ইসলাম মজুমদারের কাছ থেকে সম্পত্তি বিক্রির জন্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে সম্পদ বিক্রির ব্যবস্থা করে শ্রমিকদের চলতি মাসের বেতন–ভাতা পরিশোধে উদ্যোগ নিতে হবে। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠান চালু রাখা হবে নাকি বন্ধ করা হবে—সে সিদ্ধান্তও জানাতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এসব নির্দেশ মানা না হলে মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং নাসা গ্রুপের মালিকসহ তার স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ের পাসপোর্ট বাতিল করা হবে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব মো. সাইফুল্লা পান্না, অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার, শ্রমসচিব মো. সানোয়ার জাহান ভুঁইয়া, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক, বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার প্রধান এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ও শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের প্রতিনিধিরা।
নাসা গ্রুপের অধীনে থাকা সম্পত্তি
বিজ্ঞপ্তিতে নাসা গ্রুপের মালিকপক্ষের সম্পদের তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে গুলশান-১–এ দুটি ১২ তলা ভবন, একই এলাকায় দখল করা একটি বাসা (যেখান থেকে নজরুল ইসলাম মজুমদারকে গ্রেপ্তার করা হয়) এবং গুলশানের ৭১ নম্বর প্লটে পারটেক্স গ্রুপের কাছ থেকে ক্রয়কৃত এক বিঘা জমি।
নাসার সম্পদের মধ্যে তেজগাঁও শিল্প এলাকায় মহাখালী বাসস্ট্যান্ডের পাশে ৩ বিঘা জমির ওপর প্রধান কার্যালয়, তেজগাঁও আড়ংয়ের বিপরীতে ৭ বিঘা জমি, আড়ংয়ের পাশে লাগোয়া গাজী গ্রুপ থেকে ক্রয়কৃত ৭ বিঘা জমি, মহাখালী ডিওএইচএসের মসজিদের পাশে ১০ কাঠা জমি, ঢাকার নিকেতনে ১০ বিঘা জমি এবং ঢাকায় মেয়ের নামে একাধিক প্লট রয়েছে। এছাড়া ঢাকার উত্তরায় ১০ বিঘা জমি, উত্তরা মাসকট প্লাজার পশ্চিমে ফার্নিচারের দোকান, উত্তরা–১৩ নম্বর সেক্টরে একটি প্লট এবং দিয়াবাড়িতে ৩ প্লট মিলে ৪.৫ বিঘা জমিতে ৪০০ কোটি টাকার সুইমিংপুল, মসজিদ ও গেস্ট হাউস রয়েছে।
নাসা গ্রুপের সম্পদের মধ্যে পূর্বাচলের কাছাকাছি ৩০০ ফুট এলাকায় ২ বিঘা জমি রয়েছে। এছাড়া আছে আবাসন প্রকল্প জলসিঁড়ি (সেক্টর-১৭) এলাকায় একটি কাঁচা মার্কেট, হাতিরঝিল প্রকল্পে দুটি বড় খেজুরের ডিপো, যেখানে ১০ কোটি টাকার খেজুর রাখা আছে, পূর্বাচলে ২০টি প্লট ও ২.৫ বিঘা জমিতে একটি হাসপাতাল, জলসিঁড়ি সেক্টর-১৭–তে নজরুল ইসলাম মজুমদারের নামে ২.৫ বিঘা জমিতে ১০০ কোটি টাকার মার্কেট, জলসিঁড়ি-২ নম্বর সেক্টরে ৮টি প্লট, জলসিঁড়ি নীলা মার্কেটের সামনে পুলিশ হাউজিংয়ের বিপরীতে ৩০ বিঘা জমি এবং ৩০০ ফুটের কাছে আরও ৩০ বিঘা জমি রয়েছে। এছাড়া মেঘনা ঘাটে ওয়্যারহাউস ও পেট্রলপাম্প, মেঘনা ঘাটে আরও ১০ বিঘা জমি, ঠাকুরগাঁওয়ে ৩০০ বিঘা জমি, চাঁদপুরে একটি বড় মার্কেট, দুবাইয়ে খেজুর বাগান ও রিসোর্ট এবং এক্সিম ব্যাংকে ২৪ কোটি টাকার ভবিষ্য তহবিল রয়েছে।