শুল্ক পদ্ধতি নিয়ে দেশের ব্যবসায়ীরা যেসব সম্যসায় পড়েন, আগামী বাজেটে সেগুলোয় ‘নজর’ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।আগামী অর্থবছরের (২০২৫-২৬) বাজেট প্রস্তুতের আগে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে এ প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।বৃহস্পতিবার ( ২০ মার্চ ) দুপুরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক শুরু হয়।
সেখানে অর্থ উপদেষ্টার পাশাপাশি অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার, এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানসহ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে ছিলেন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ, বিসিআইসহ অন্যান্য চেম্বারগুলোর প্রতিনিধি ও প্রশাসকরা।
বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে আলাপ হয়েছে। আমরা তাদের বলেছি, ভবিষ্যতে কিছু কিছু লেনদেন অনলাইনে করার উদ্যোগ নেব, যেন হয়রানি ও সময় কমে আসে।‘কাস্টমস প্রসিডিউর নিয়ে যেসব সমস্যা আছে, আমরা সেগুলো দেখব।’
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, ইনকাম ট্যাক্স বা এনবিআরসংক্রান্ত কোনো সমস্যা আছে কিনা, উপদেষ্টা সেগুলো শুনতে চেয়েছিলেন।ওনাকে খুবই ইতিবাচক মনে হয়েছে ব্যবসায়ীদের সমস্যা নিরসনে। ব্যাংকিং সেক্টর বা অন্য বিষয়গুলো নিয়ে কথা হয়নি।
এ ব্যবসায়ী নেতা বলেন উপদেষ্টা চান দেশটা যেন এগিয়ে যায়। ট্যাক্স সিস্টেম যেন শক্তিশালী হয়, কর আদায় যেন বাড়ে, উনি সেটা চেয়েছেন। আমাদের কনসার্ন হল পোশাক খাতের সক্ষমতা কীভাবে বাড়ানো যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকসংক্রান্ত বিষয়গুলো লিখিত আকারে দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।
বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, শুল্কায়ন নিয়ে আমি অনেক দিন ধরেই কথা বলে আসছি। এবার এটার একটা পরিবর্তন হবে বলে আমি আশাবাদী।চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ আগের চেয়ে ভালো সেবা দিচ্ছে। এটার জন্য এনবিআর ও অর্থ মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানিয়েছি।
পোশাক খাতের প্রস্তাব
বৈঠকে একটি লিখিত প্রস্তাব নিয়ে যায় বিকেএমইএ, যেখানে উৎসে করকে চূড়ান্ত কর আদায় হিসাবে বিবেচনা করে আগামী পাঁচ বছরের জন্য দশমিক ৫০ শতাংশ নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে।এছাড়া পোশাক রপ্তানি প্রণোদনায় আয়কর অব্যাহতি; শুল্কায়ন নীতিকে ব্যবসা ও বিনিয়োগ বান্ধব করা এবং করদাতাবান্ধব আয়কর নীতি প্রণয়নের স্বার্থে আইন প্রণয়নকারী ও বাস্তবায়নকারীর অবস্থান আলাদা করার কথাও বলছে বিকেএমইএ।পোশাক শিল্পের ঝুটের ওপর সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট এবং রিসাইকেল ফাইবার থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রস্তাবও দিয়েছে সংগঠনটি।
লিখিত প্রস্তাবে বলা হয়, আমদানি পণ্যের এইচএস কোডে ভুল হলে ২০০ থেকে ৪০০ শতাংশ জরিমানার বিধান প্রত্যাহারের অনুরোধ জানাচ্ছি। পাশাপাশি এইচএস কোড ৮ ডিজিটের পরিবর্তে ৬ ডিজিটে বা সংখ্যায় নিয়ে আসা যায় কিনা সেই প্রস্তাব করছি।২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে জ্বালানি সাশ্রয়ী বাতির ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। বিষয়টি আবার ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছি।
নবায়ণযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে সোলার প্যানেল ও ১০ কিলোওয়াটের বেশি ক্ষমতার সোলার ইনভার্টারে সব ধরনের শুল্ক অব্যাহতিও চায় বিকেএমইএ।কৃত্রিম সুতার ৩ শতাংশ কর প্রত্যাহার এবং কাঁচামালের ওপর থেকে এটি ও এসডি প্রত্যাহারের প্রস্তাবও দিয়েছে সংগঠনটি।