রেলের মাফিয়া ম্যাক্সের আলমগীর, দুদকের অভিযান

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের মাফিয়া হিসাবে খ্যাত রেল খাতে ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাগিয়ে নেওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারের মালিক ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধানে রেল ভবনে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (১২ মার্চ) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ, স্বপন কুমার রায়, উপ-সহকারী পরিচালক মিনু আক্তার সুমি ও আনিসুর রহমান রাসেলের সমন্বয়ে টিম এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করছে।দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আখতারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দুদক সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও মির্জা আজমের সহায়তায় রাতারাতি বদলে যায় ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার। তাদের আশীর্বাদ নিয়ে রেলের নির্মাণ খাতে অন্তত ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাগিয়ে নিয়েছে অখ্যাত এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এসব প্রকল্পের বরাদ্দের একটা বড় অংশ লুটপাট হয়েছে সিন্ডিকেট করে। রেল প্রকল্পের টেন্ডার ডন খ্যাত ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড খোঁজ মিলেছে তাদের নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির চিত্র। শেখ হাসিনা সরকারের নির্মাণ খাতের মাফিয়া খ্যাত দুই প্রভাবশালী নেতার সরাসরি হস্তক্ষেপে রেলের একের পর এক বড় বড় প্রকল্পের কাজ পেতে থাকে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার। এই দুই নেতার প্রভাব খাটিয়ে রেলের সব প্রকল্প একাই গিলে খেয়েছে গ্রুপটি। শুধু রেল নয়, গত ১৫ বছরে উন্নয়ন খাতের অন্তত ৬০ হাজার কোটি টাকার কাজ করেছে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার। যা দেশের উন্নয়ন খাতের এক নজিরবিহীন ইতিহাস।

হাসিনা সরকার পতনের পরও রেল সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে রেলের কালো বিড়াল খ্যাত ম্যাক্স গ্রুপ। চিনকি আস্তানার পর কাশিয়ানি-গোপালগঞ্জ রেল প্রকল্পের বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়নের কাজ পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে রেলের দুটি বৃহৎ চলমান প্রকল্পেও তাদের উপস্থিতি রয়েছে।

প্রশ্ন উঠছে, পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই কীভাবে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার ২০৯ কোটি টাকার চিনকি আস্তানা ক্ষয়প্রাপ্ত রেল প্রকল্প, ২০১১ সালে ১,৮০০ কোটি টাকার লাকসাম-চিনকি আস্তানা প্রকল্প, ২০১৫ সালে ৬,০০০ কোটি টাকার আখাউড়া-লাকসাম রেলপথ প্রকল্প এবং ২০১৬ সালে ১৮,০০০ কোটি টাকার দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ পেয়েছে? ৪ নম্বর গ্রেডের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হয়েও কীভাবে তারা রেলের এত বড় বড় প্রকল্প হাতিয়ে নিয়েছে? এটাই এখন বড় প্রশ্ন।

**রেল খাতের মাফিয়া ‘ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!