রংধনু গ্রুপের মালিক রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৮৭৮ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে গুলশান থানায় মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মামলার অংশ হিসেবে তাঁর ১৩টি ব্যাংক হিসাবের প্রায় ১৭ কোটি টাকা এবং যমুনা ফিউচার পার্কের লেভেল-২–এ অবস্থিত এক লাখ বর্গফুট কমার্শিয়াল স্পেস ক্রোক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০২২ সালের ৮ মার্চ রফিকুল ইসলামের দুই ছেলে—কাউসার আহমেদ অপু ও মেহেদী হাসান দিপু—বাংলাদেশ পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির কাছে বিভিন্ন দলিলের মাধ্যমে ৭.৫৭৫১ একর জমি বিক্রি করেন। এরপর ওই তফসিলভুক্ত জমির মধ্যে ৬.৩৩৭৫ একর জমি একই বছরের ১ জুন আবারও বিভিন্ন দলিলের মাধ্যমে বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইস্ট ওয়েস্ট প্রোপার্টি লিমিটেডের কাছে বিক্রি করেন। এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে ৫ কোটি ৭৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা অর্জন করেন তারা।
এছাড়া, বালু ভরাটের ভুয়া কার্যাদেশ দেখিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির নামে জালিয়াতির মাধ্যমে ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ২৭০ কোটি টাকা এবং ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে ২০০ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করে প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়। পাশাপাশি, ইসলামী ব্যাংকের বারিধারা শাখা থেকে ভুয়া মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করে অজ্ঞাতনামা আসামিদের সহযোগিতায় সম্পত্তির মূল্য বাড়িয়ে দেখিয়ে আরও ৪০০ কোটি টাকার ঋণ নেওয়া হয়। এসব প্রতারণার পাশাপাশি, বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের অর্থ পরিশোধ না করে তা বিদেশে পাচার করে ২০ লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের দেশ অ্যান্টিগা অ্যান্ড বারবুডার নাগরিকত্বও গ্রহণ করা হয়।
এসব প্রতারণা, জালিয়াতি ও অর্থপাচার মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫)-এর ২-এর শাখা (৫)(৬)(১৪) ধারার অপরাধ হিসেবে গণ্য হওয়ায় রফিকুল ইসলাম ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করেছে সিআইডি। একই সঙ্গে তাঁর ১৩টি ব্যাংক হিসাবের প্রায় ১৭ কোটি টাকা এবং যমুনা ফিউচার পার্কের লেভেল-২-এ থাকা এক লাখ বর্গফুট কমার্শিয়াল স্পেস বিজ্ঞ আদালতের আদেশক্রমে ক্রোক করা হয়েছে।