যুক্তরাষ্ট্র থেকে সোমবার (১৬ জুন) পর্যন্ত ১১৮ জন বাংলাদেশি নাগরিককে ফেরত পাঠানো হয়েছে, যাদের মধ্যে ১১১ জন পুরুষ এবং ৭ জন নারী। ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির আওতায় তাদের ফেরত পাঠানো হয়। সর্বশেষ ঈদুল আজহার পরদিন, ৮ জুন একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে ৪২ বাংলাদেশি দেশে ফেরেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) ও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন বিভাগ।
ইমিগ্রেশন পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করেছে সে দেশের কর্তৃপক্ষ। তাদের কাউকেই হাতকড়া পরানো হয়নি। ফেরত পাঠানোর আগে বিভিন্ন পর্যায়ের আলোচনায় বাংলাদেশ মানবিক আচরণের ওপর গুরুত্ব দেয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র সে অনুরোধে সাড়া দেয়।
আরেক ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা জানান, সর্বশেষ ৮ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র থেকে একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে ৪২ জন বাংলাদেশি নাগরিককে ফেরত পাঠানো হয়। ওই ফ্লাইটে নেপালেরও কিছু যাত্রী ছিলেন। ফেরত পাঠানো বাংলাদেশিদের মধ্যে ১৬ জনের পরিচয় নিশ্চিত করার মতো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় গ্রহণে জটিলতা তৈরি হয়। পরে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা কয়েক ঘণ্টা ধরে যাচাই-বাছাই শেষে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করেন এবং বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ তাদের গ্রহণ করে।
গত ফেব্রুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ট্রাম্প প্রশাসন অবৈধ অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করে। ভারত ও ব্রাজিলসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের হাতকড়া পরিয়ে ফেরত পাঠানো হয়, যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বহু মানবাধিকারকর্মী।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আসা নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর বাসিন্দা ইমরান হোসেন বলেন, তাদের টেক্সাস থেকে ফ্লাইটে তোলা হয় এবং ফ্লাইটে কোনো বাংলাদেশিকে হাতকড়া পরানো হয়নি। দেশে ফেরার পর শাহজালাল বিমানবন্দরে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক তাকে সহযোগিতা করে।
ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসী এবং ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী বিদেশি শিক্ষার্থীদের পর্যায়ক্রমে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে। এর মধ্যে অনেক ভারতীয় নাগরিককে হাতকড়া পরিয়ে সামরিক বিমানে তুলে পাঠানোর চিত্র গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র। সর্বশেষ ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসনবিরোধী অভিযান শুরু হলে তা বিক্ষোভে রূপ নেয় এবং কয়েক দিনের মধ্যে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন শহরে।