দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জানিয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নামে যুক্তরাষ্ট্রে সাতটি বিলাসবহুল গাড়ির খোঁজ পাওয়া গেছে। প্রায় ৬০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা মামলার তদন্তে এ তথ্য উদঘাটিত হয়েছে বলে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
দুদকের দাবি, শেখ হাসিনা সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা থাকার সময় সজীব ওয়াজেদ জয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে হুন্ডি ও অন্যান্য অবৈধ মাধ্যমে অর্থ পাচার করেছিলেন। পরে সেই অর্থ দিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে উক্ত বিলাসবহুল গাড়িগুলো কিনে মালিকানা নেন।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, সজীব ওয়াজেদ জয়ের নামে যুক্তরাষ্ট্রে যেসব গাড়ি শনাক্ত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে— ২০১৫ সালের মার্সিডিজ-বেঞ্জ এস-ক্লাস, ২০১৬ সালের মার্সিডিজ-বেঞ্জ এসএল-ক্লাস, ২০১৫ সালের লেক্সাস জিএক্স ৪৬০, ২০১৬ সালের ল্যান্ড রোভার, ২০১৮ সালের ম্যাকলারেন ৭২০এস, ২০১৮ সালের মার্সিডিজ-বেঞ্জ এমজি জিটি এবং ২০০৩ ও ২০০১ সালের দুটি জিপ গ্র্যান্ড চেরোকি। এর মধ্যে লেক্সাস জিএক্স ৪৬০ গাড়িটি তাঁর সাবেক স্ত্রী ক্রিস্টিনা ওভারমায়ারের নামে নিবন্ধিত। গাড়িগুলোর আনুমানিক বাজারমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ৪২ হাজার ৯২৪ মার্কিন ডলার।
দুদকের দাবি, সজীব ওয়াজেদ জয় হুন্ডি বা অন্যান্য অবৈধ মাধ্যমে অর্থ পাচার করে যুক্তরাষ্ট্রে দুটি বাড়ি ক্রয় করেছেন। এসব বাড়ি কিনতে খরচ হয়েছে মোট ৫৪ কোটি ৪ লাখ ৩২ হাজার ২৫৮ টাকা।
দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের মামলার তদন্ত চলছে। তদন্ত কর্মকর্তা প্রয়োজনে অভিযুক্তের যে কোনো সম্পদ জব্দ করতে পারেন। সে অনুযায়ী আদালতে আবেদন জানানো হবে এবং মামলার বিচার চলাকালে জব্দকৃত সম্পদ আলামত হিসেবে উপস্থাপন করা হবে।
গত ১৪ আগস্ট সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের’ অভিযোগে মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় বলা হয়, তিনি প্রায় ৬০ কোটি টাকার বেশি অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে ‘সন্দেহজনক লেনদেন, দুর্নীতি ও ঘুষ গ্রহণের’ অভিযোগও আনা হয়েছে। দুদকের দাবি, ২০০০ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে জয় এসব সম্পদ অর্জন করে বিদেশে পাচার করেছেন। এদিকে গণঅভ্যুত্থানের পর ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে।
** প্লট দুর্নীতি মামলা: হাসিনা, জয়-পুতুলের বিচার শুরু
** পুতুল ও জয়ের দুই প্রতিষ্ঠানের কর নথি চায় দুদক
** এটুআই প্রকল্পে দুর্নীতি, তদন্তে জয়-পলকের নাম
** বন্ধ হচ্ছে হাসিনার পুত্র জয়ের ‘বিনিময়’
** জয়, পুতুল ও ববির ব্যাংক হিসাব জব্দ
** ‘বিনিময়’ প্লাটফর্ম ছিল শেখ হাসিনার ছেলের শেল কোম্পানি