মোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মামলা

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ‘অর্থ আত্মসাতের’ অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কোম্পানিটির চেয়ারম্যান মোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) এর কাছে ‘তথ্য গোপন করে বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে ভাইয়ের জমি কেনার মাধ্যমে এই অর্থ আত্মসাতের’ অভিযোগ করা হয়েছে।

রোববার (৪ মে) দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বুধবার দুদকের উপপরিচালক শেখ গোলাম মাওলা মামলাটি দায়ের করেছেন।মামলায় তার ছেলে সাইফুল আলম ও ভাই মো. জসিম উদ্দিনও আসামি। ঘটনার সময় তারা দুজন যথাক্রমে মোরশেদ আলমের বেঙ্গল গ্রুপের অন্যতম প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল কনসেপ্ট অ্যান্ড হোল্ডিংস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালক।

দুদকের অভিযোগ, ২০১৬ সালে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার গণিপুর মৌজায় শূন্য দশমিক ৮৯৬ একর জমি ও একটি নির্মাণাধীন ১৫ তলা ভবনের চতুর্থ তলায় বাণিজ্যিক জায়গা কিনে। জমিটির মালিক ছিলেন জসিম উদ্দিন। সাইফুল আলম ছিলেন জমি বিক্রির দায়িত্বপ্রাপ্ত। ন্যাশনাল লাইফের জন্য জমি কেনার ক্ষেত্রে এমন আত্মীয়-সম্পর্ক থাকায় ‘স্বার্থের দ্বন্দ্ব’ তৈরি হয়, যা তারা ইচ্ছাকৃতভাবে গোপন করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আইডিআরএ-এর কাছে জমি কেনার পূর্বানুমোদনের সময় ‘আত্মীয়তার সম্পর্ক অস্বীকার করে মিথ্যা’ প্রত্যয়ন দেওয়া হয়, যাতে বলা হয়েছিল, কোম্পানিটির সঙ্গে কোনো পরিচালক বা উদ্যোক্তার সম্পৃক্ততা নেই।

জমির প্রকৃত বাজারমূল্য ছিল ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৯৩ হাজার ৮৫৫ টাকা। অথচ, তা মূল্যায়ন প্রতিবেদনে ৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা দেখানো হয়। এই মিথ্যা মূল্যায়নের ভিত্তিতে ন্যাশনাল লাইফ বেঙ্গল কনসেপ্টের অনুকূলে চেক দিয়ে পুরো অর্থ পরিশোধ করে। এভাবে ২ কোটি ৮৬ লাখ ৬ হাজার ১৪৪ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ দুদকের। এ ঘটনায় আইডিআরএ-কে ‘মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য সরবরাহ, সরকারি মূল্যায়ন প্রতিবেদন উপেক্ষা ও জালিয়াতির’ মাধ্যমে প্রতারণার অভিযোগও আনা হয়েছে।

শিল্পগোষ্ঠী বেঙ্গল গ্রুপের চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম আওয়ামী লীগের টিকেটে নোয়াখালী-২ আসন থেকে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। ৯ এপ্রিল তাকে ঢাকার গুলশান থেকে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ৫ অগাস্ট অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী-এমপি, দলের নেতাদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা, হত্যা ও হত্যাচেষ্টার’ অভিযোগে মামলা হয়েছে।

এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশনও বিগত সরকারের সময় সুবিধা পাওয়া শিল্প গ্রুপ, মন্ত্রী-এমপি ও নেতাদের বিরুদ্ধে ‘অর্থ পাচার ও অবৈধভাবে’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে। ইতোমধ্যে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যসহ কয়েকজন বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!