মোংলা কাস্টম হাউস: অর্ধেক দামে আমদানি হচ্ছে সুজুকি, হাভাল, এমজি, মিৎসুবিশি

দেশে আমদানি হচ্ছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দামি সব গাড়ি। এসব গাড়ি আমদানিতে এনবিআরের আদেশ বা নিয়ম কিছুই মানা হচ্ছে না। অস্বাভাবিক কম ইনভয়েস মূল্য ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। এতে হচ্ছে রাজস্ব ফাঁকি। শুধু কম মূল্য ঘোষণাই নয়, গাড়ির মডেল ও সিসির মিথ্যা ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। মডেলের সামান্য পরিবর্তন দেখিয়ে এইচএস কোড পরিবর্তন করা হচ্ছে। ব্র্যান্ড নিউ গাড়ির এসব অনিয়ম নিয়ে তিন পর্বের ধারাবাহিকের শেষ পর্বে আজ থাকছে মোংলা কাস্টম কাস্টম হাউস দিয়ে গাড়ি আমদানির অনিয়মের চিত্র

ভারত থেকে আমদানি করা মারুতি সুজুকি ইরতেজা ব্র্যান্ডের গাড়ি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মোংলা কাস্টম হাউস দিয়ে গাড়িটি আমদানি করে উত্তরা মোটরস লিমিটেড। ১৪৬২ সিসির ব্র্যান্ড নিউ গাড়িটির মূল্য ঘোষণা দেয়া হয়েছে ১২ হাজার ৪১৬ ডলার (ফ্রেইট চার্জসহ), যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৩ লাখ ১৬ হাজার টাকা। আমদানিকারক যে মূল্যে ঘোষণা দিয়েছে, সে মূল্যেই শুল্কায়ন করেছে মোংলা কাস্টম হাউস। অথচ গাড়িটির খুচরা বাজারমূল্য প্রায় ৩৪ লাখ টাকা। আমদানিকারক গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের যে ইনভয়েস দিয়েছে, সেই ইনভয়েস মূল্য ঠিক আছে কি না, তা যাচাই করেনি কাস্টম হাউস। যদিও এনবিআরের আদেশে বলা হয়েছে, মূল্য অস্বাভাবিক কম হলে প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান থেকে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে তা যাচাই করা। আর উত্তরা মোটরস ভারত থেকে এই কাস্টম হাউস দিয়ে আমদানি করা সব সুজুকি মারুতির বিভিন্ন ব্র্যান্ডের গাড়ির ম্যানুফ্যাকচারার ইনভয়েস দাখিল করেছে। কিন্তু এসব গাড়ির শুল্কায়নযোগ্য মূল্যের সঙ্গে বাজারমূল্যের বিশাল পার্থক্য রয়েছে।

একই কাস্টম হাউস দিয়ে ২০২২ সালের আগস্ট মাসে মিৎসুবিশি ইক্লিপস ক্রস জিপ আমদানি হয়েছে। জাপান থেকে ১৪৯৯ সিসির ব্র্যান্ড নিউ গাড়িটি আমদানি করেছে র্যাংকগস লিমিটেড। গাড়িটির মূল্য ঘোষণা দেয়া হয়েছে ২১ হাজার ৩২৫ ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২০ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। শুধু ফ্রেইট চার্জ যোগ করে এই গাড়ি আমদানিকারকের ঘোষিত মূল্যেই শুল্কায়ন করেছে মোংলা কাস্টম হাউস। অথচ এই গাড়ির খুচরা মূল্য প্রায় ৫৩ লাখ টাকা। এনবিআরের আদেশ অনুযায়ী, ব্র্যান্ড গাড়ি শুল্কায়নের ক্ষেত্রে গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান থেকে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বরাবর ম্যানুফ্যাকচারার ইনভয়েস ইস্যুর বাধ্যবাধ্যকতা রয়েছে। ম্যানুফ্যাকচার ইনভয়েস ইস্যু করা হয়নি। এরপরও আমদানিকারকের ঘোষিত মূল্যেই শুল্কায়ন হয়েছে বিলাসবহুল এই গাড়ি। শুধু সুজুকি মারুতি, মিতসুবিশি নয়, হাভাল, এমজি এমসিইসহ ব্র্যান্ড নিউ সব গাড়ি মোংলা কাস্টম হাউস আমদানিকারকের ঘোষিত মূল্য বা বাজারমূল্যের অর্ধেক দামেই শুল্কায়ন হচ্ছে বলে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এই কাস্টম হাউস দিয়ে এক বছরের গাড়ি আমদানির তথ্য পর্যালোচনা করে এই চিত্র পেয়েছে।

এনবিআর সূত্রমতে, কিছু আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে আন্ডার ইনভয়েসিং করছে। অর্থাৎ গাড়ির দাম অস্বাভাবিক কম ইনভয়েস মূল্য দেখিয়ে আসছে। কিন্তু বিক্রির ক্ষেত্রে আমদানির চেয়ে অধিক মূল্য বিক্রি করছে। এক্ষেত্রে একদিকে কম মূল্য দেখিয়ে টাকা পাচার করা হচ্ছে, অন্যদিকে শুল্ককর ফাঁকি দেয়া হচ্ছে। ব্র্যান্ড গাড়ি আমদানিতে আন্ডার ইনভয়েসিং, শুল্ককর ফাঁকি রোধে ব্র্যান্ড নিউ গাড়ির শুল্কায়নে ২০২০ সালে একটি আদেশ জারি করে এনবিআর। কিন্তু আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান, কাস্টম হাউস কেউ-ই এই আদেশ মানছে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর একটি কমিটি গঠন করে। কমিটি চট্টগ্রাম, আইসিডি কমলাপুর ও মোংলা কাস্টম হাউসের এক বছরের ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি আমদানির তথ্য যাচাই করে, যাতে শুল্ককর ফাঁকি ও কম মূল্যে গাড়ি আমদানি করে বেশি মূল্যে বিক্রির তথ্য পায়। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন দেয় কমিটি।

মোংলা কাস্টম হাউস দিয়ে আমদানি করা মিতসুবিশি ইক্লিপস ক্রস জিপ গাড়ির তথ্য পর্যালোচনা করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৪৯৯ সিসির এই মডেলের গাড়ি র‌্যাংস লিমিটেড মোংলা কাস্টম হাউস দিয়ে ২০১৯ সাল থেকে অব্যাহতভাবে আমদানি করে আসছে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটি ১৩ লাখ পাঁচ হাজার ইয়েন (বাংলাদেশি প্রায় ৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকা) মূল্যে জাপান থেকে এই বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি করা হচ্ছে, কিন্তু ইনভয়েস মূল্য বৃদ্ধি পায়নি। মিতসুবিশি ইক্লিপস ক্রস জিপের সম ইঞ্জিন ক্যাপাসিটির চীনের তৈরি হাভেল এইচ৬ ১২ হাজার ৪৭৫ ডলার, এমজি জেডএস ১২ হাজার ৯৭২ ডলারের শুল্কায়ন করেছে মোংলা কাস্টম হাউস। আবার একই সিসির জাপানি ব্র্যান্ডের থাইল্যান্ডে তৈরি হোন্ডা সিআর-ভি মোংলা কাস্টম হাউস শুল্কায়নযোগ্য নির্ধারণ করে ১৭ হাজার ১৪৪ ডলার। অথচ একই সিসির থাইল্যান্ড থেকে অস্ট্রেলিয়া ও অস্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশি আমদানি করা হোন্ডা সিআর-ভি গাড়ির শুল্কায়ন ২১ হাজার ১৪৪ ডলারে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস দিয়ে খালাস নিয়েছে। এক্ষেত্রে র্যাংিগস লিমিটেড মিতসুবিশির গাড়িগুলো তৃতীয় কোনো দেশ থেকে আমদানি করেনি, বরং উৎপাদনকারী দেশ জাপান থেকে আমদানি করেছে বলে থাইল্যান্ড অরিজিন গাড়ি থেকে জাপানি অরিজিন গাড়ির মূল্য বেশি হওয়া উচিত। তৃতীয় দেশ থেকে গাড়ি আমদানি করেও যেসব খরচ আমদানিকারক যোগ করে, তা নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। তিন বছর ধরে একই গাড়ির মানের পরিবর্তন হয়েছে।

মোংলা কাস্টম হাউস দিয়ে হাভাল গাড়ি আমদানিতে অনিয়মের বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমদানিকারক এসিই অটো (প্রা.) লিমিটেড ২০২২ সালের আগস্ট মাসে চীন থেকে হাভাল জুলিয়ন সুপ্রিম ১.৫ এল ব্র্যান্ডের গাড়ি আমদানি করে। চীনের তৈরি এই গাড়ির মূল্য ঘোষণা দেয়া হয় ৯ হাজার ৮০০ ডলার বা প্রায় ৯ লাখ ৪৯ হাজার টাকা। এই গাড়ির কোনো ম্যানুফ্যাকচারার ইনভয়েস নেই। শুল্কায়ন বিধিমালা অনুযায়ী শুল্কায়নযোগ্য মূল্য নির্ধারণ করা হয় ১১ হাজার ৬৯১ ডলার বা প্রায় ১১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। অথচ এই মডেলের গাড়ি খুচরা বাজারমূল্য প্রায় ৩৪ থেকে ৩৬ লাখ টাকা। প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস দিয়েও গাড়ি আমদানি করে।

মোংলা কাস্টম হাউস দিয়ে গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে যত অনিয়ম প্রতিবেদনে দেখা গেছে, উত্তরা মোটরস লিমিটেড ব্র্যান্ড নিউ সুজুকি মারুতির বিভিন্ন মডেলের গাড়ি আমদানি করে আসছে। এতে ম্যানুফ্যাকচারার ইনভয়েস দাখিল করলেও এসব গাড়ির বাজারমূল্যের সঙ্গে অনেক পার্থক্য রয়েছে। অর্থাৎ ঘোষিত মূল্যের প্রায় অর্ধেক দামে আমদানি হচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির আমদানি পর্যায়ে শুল্ক পরিহার বা ব্যবসায়ী পর্যায়ে প্রযোজ্য ভ্যাট আদায় হচ্ছে কি না, তা ভ্যাট অফিস যাচাই করতে পারে। আবার র্যা নকন ব্রিটিশ মোটরস লিমিটেড ব্র্যান্ড নিউ এমজি এমসিই ট্রফি ভ্যারিয়েন্ট গাড়ি আমদানি করে। পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ট্রফি ভ্যারিয়েন্ট নামে কোনো গাড়ির মূল্য তথ্য ডেটাবেইজ পাওয়া যায়নি। ফলে সমজাতীয় মডেলের গাড়ির মূল্যের সঙ্গে পাঁচ শতাংশ লোড দিয়ে শুল্কায়নযোগ্য মূল্য নির্ধারণ করা হয়। এক্ষেত্রে গাড়ির বিভিন্ন ফিচার বা অপশনগুলো বিবেচনা করার সুযোগ ছিল। যেসব মডেলের (একই মডেল, সিসি, তৈরি সাল) গাড়ির মূল্য ডেটাবেইজ পাওয়া গেছে, সে ক্ষেত্রে ডেটাবেইজপ্রাপ্ত মূল্যকে শুল্কায়নযোগ্য মূল্য হিসেবে নেয়া হয়েছে। এমজি এমসিই জেএস ১.৫এল সিভিটি ডেল মডেলের ঘোষিত মূল্য আট হাজার ৯০০ ডলার। শুল্কায়ন করা হয়েছে ৯ হাজার ডলার। নামমাত্র ১০০ ডলার লোড দিলেও মূলত ইনভয়েস ভ্যালুতে শুল্কায়ন করা হয়েছে, যা এনবিআরের আদেশের পরিপন্থি। তবে বাংলাদেশের বাজারমূল্য যাচাই করে এই গাড়ি শুল্কায়ন করা যৌক্তিক ছিল।

অনিয়মের বিষয়ে মোংলা কাস্টম হাউসের এক কর্মকর্তা বলেন, সুকুকি মারুতির গাড়িগুলো সুকুতি মারুতি থেকে সরাসরি ম্যানুফ্যাকচারার ইনভয়েস ইস্যু করা। আর এলসি সরাসরি সুজুকি মারুতির নামে। ফলে আমাদের কিছুই করার নেই। তবে বাজারে ডিমান্ড থাকায় কম মূল্যে আমদানি করা হলেও বেশি দামে আমদানিকারকরা বিক্রি করছেন। হাভাল ও এমজির গাড়িগুলোয় আন্ডার ইনভয়েসিং হয়। কারণ এসব গাড়ি থার্ড কান্ট্রি থেকে আমদানি করা। এসব গাড়ির ক্ষেত্রে আমরা মূল্য যাচাই করি। এছাড়া ২০১৮ ও ২০১৯ সালে যেসব গাড়ি আমদানি হয়েছে, আমরা সেসব গাড়ির তথ্য যাচাই করে ডিমান্ড করেছি। আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখাই এই কাস্টম হাউস দিয়ে এখন আর ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি আমদানি হয় না বলে জানান তিনি।

ব্র্যান্ড নিউ গাড়িতে অনিয়মের বিষয় অস্বীকার করেছেন একাধিক আমদানিকারক। তারা বলছেন, শুল্কায়নের আগে সব কাগজপত্র দেয়া হয়। কাস্টমস তা যাচাই করেই গাড়ি খালাস দেয়। এনবিআরের আদেশ মেনেই গাড়ি আমদানি করা হয় বলে দাবি করেন তারা।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস, মোংলা কাস্টম হাউস ও আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউস দিয়ে ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি আমদানিতে নথি পর্যালোচনা করে প্রতিবেদনে ছয়টি সুপারিশ করা হয়েছে। এতে ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি আমদানিতে আন্ডার ইনভয়েসিং, শুল্ককর ফাঁকি রোধ হবে। ছয়টি সুপারিশের মধ্যে প্রথমে বলা হয়েছে, এনবিআর সম্পূর্ণ নতুন গাড়ির শুল্কায়নযোগ্য মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি-সংক্রান্ত ২০২০ সালের ১৬ নভেম্বর একটি আদেশ জারি করেছে। আদেশের অনুচ্ছেদ-২-এ প্রস্তুতকারক ব্যতীত তৃতীয় কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে আমদানি করলে ইনভয়েসে প্রদর্শিত মূল্য, স্থানীয় বাজারে ওই পণ্যের বিক্রয় মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, তা বিবেচনার জন্য শুল্কায়নের আগে সংশ্লিষ্ট দেশে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাসে চিঠি দিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা পরিপালন নিশ্চিত করা জরুরি। যেহেতু শুল্কায়নের আগে মূল্যের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন, সেহেতু সরাসরি ই-মেইলে পত্র আদান-প্রদানের নির্দেশনা প্রদান করা যেতে পারে।

দ্বিতীয়ত, শুল্কায়নকালে দাখিল করা ম্যানুফ্যাকচারার ইনভয়েস যথাযথ রয়েছে কি না, তা ইস্যুকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যাচাই করা জরুরি। তৃতীয়ত, ব্র্যান্ড নিউ গাড়ির মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে ম্যানুফ্যাকচারার ইনভয়েস ভ্যালু যদি না থাকে, সেক্ষেত্রে প্রস্তুতকারক দেশের ওয়েবসাইট মূল্য এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বাজারমূল্য বিবেচনায় নিয়ে শুল্কায়নযোগ্য মূল্য নির্ধারণ করা যেতে পারে, যার মাধ্যমে আমদানি পর্যায়ে সঠিক শুল্ক কর আদায় বা স্থানীয় পর্যায়ে প্রযোজ্য ভ্যাট আদায় সম্ভব হবে। চতুর্থত, শুল্কায়নযোগ্য মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে কাস্টম হাউসের ডেটাবেজ মূল্যের পাশাপাশি অন্যান্য কাস্টম হাউসের মূল্য পর্যালোচনা করে শুল্কায়নযোগ্য মূল্য নির্ধারণ করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা যেতে পারে। পঞ্চমত, ইউরোপ বা আমেরিকা থেকে আমদানি করা উচ্চ মূল্যের ব্র্যান্ড নিউ গাড়ির মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ছাড়াও গ্লাসগাইড ভ্যালু বিবেচনায় নিলে প্রকৃত রপ্তানি মূল্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। উচ্চ মূল্যের এরূপ গাড়ির ক্ষেত্রে বেসিক ভ্যালুর সঙ্গে আলোচ্য যেসব অপশন সংযোজন করে কাস্টমাইডজ গাড়ি রপ্তানি করা হয়, তা মূল্যের সঙ্গে যোগ করে শুল্কায়নযোগ্য মূল্য নির্ধারণ করা যৌক্তিক।

ষষ্ঠত, উচ্চ মূল্যের গাড়ির ক্ষেত্রে অপশন থেকে মূল্য পার্থক্য সুস্পষ্ট। যেমন-র্যা নকন মটরসের একটি বি/ই-তে মার্সিডিজ বেঞ্জ জিএলএস-৪৫০ একটির মূল্য ৬০ হাজার ২৮৭ ইউরো, একই বি/ই-তে ভিন্ন চেসিসের জিএলএস-৪৫০-এর ঘোষিত মূল্য ৬৫ হাজার ৬১২ ইউরো। অর্থাৎ উচ্চ মূল্যের ঘোষিত চেসিসের গাড়িটি নিম্নমূল্যের চেসিসের অপশনের তুলনায় বেশি অপশন সংযোজন করে কাস্টমাইজড করা হয়েছে। এক্ষেত্রে অ্যাসাইকুডার ইন্সপেকশন অ্যাক্টে পরীক্ষণ কর্মকর্তাকে সুনির্দিষ্টভাবে তথ্যাদি লিপিবদ্ধ না করলে তা আলাদা করা সম্ভব নয়। তাছাড়া এ-জাতীয় উচ্চ মূল্যের গাড়ির একটি নির্দিষ্ট ভিআইএন (ভেহিকল আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) বা চেসিস নম্বরের বিপরীতে প্রস্তুতকারকের ডেটাবেজ গাড়ির প্রকৃত অপশনসহ অন্যান্য তথ্যাদি সংরক্ষিত থাকে, যা ওয়েবসাইট বা ভিন্নভাবে সংগ্রহ করা সম্ভব হলে মূল্য নির্ধারণে সহায়ক হবে।

***

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!