জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেছেন, মোংলা বন্দরের ব্যবহার বাড়াতে পারলে চট্টগ্রাম বন্দরের উপর চাপ কমবে এবং যানজট ও জাহাজজট হ্রাস পাবে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকাল ১১টায় মোংলা কাস্টম হাউসের সুন্দরবন সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকায় কোমলমতি শিশুসহ অন্যান্যদের নিহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যস্ততা অনেক বেশি। এর ফলে সেখানে জানজট ও জাহাজজটও বেশি। কিন্তু মোংলা বন্দরের ব্যবহার তুলনামূলক অনেক কম। মোংলার ব্যবহার বাড়ানো গেলে চট্টগ্রামের উপর চাপ কমবে, জটও কমবে এবং একইসঙ্গে মোংলা বন্দর ও মোংলা কাস্টমস হাউসের আয়ও বাড়বে। এজন্য আমরা নানা উদ্যোগ নিয়েছি।’
চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা মাঠ পর্যায়ের সমস্যাগুলো জানতে চাই। যেমন মোংলা বন্দরের সক্ষমতা কতটুকু, কতটুকু ব্যবহার হচ্ছে, এবং কীভাবে তা আরও বাড়ানো যায়। পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমস্যাও জানার জন্য সরেজমিনে পরিদর্শন করছি। আমাদের এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’
মতবিনিময় সভার আগে চেয়ারম্যান কাস্টম হাউস, মোংলার কন্টেইনার ইয়ার্ডে কায়িক পরীক্ষণ কার্যক্রম, বন্দরের গাড়ি সংরক্ষণ ইয়ার্ড ও নিলামের জন্য নির্বাচিত গাড়ি সংরক্ষণ ইয়ার্ড পরিদর্শন করেন। এরপর কাস্টমস কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক এবং পরে সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় এনবিআর সদস্য (কাস্টমস নীতি ও আইসিটি) মুহাম্মদ মুবিনুল কবীর, সদস্য (কাস্টমস ও ভ্যাট প্রশাসন) মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব আতাউল গনি ওসমানী, মোংলা কাস্টম হাউসের কমিশনার মু. সফিউজ্জামান, খুলনার ভ্যাট কমিশনার, খুলনার কর অঞ্চলের কমিশনার, খুলনা কাস্টমস ও ভ্যাট আপিলের কমিশনার, খুলনা কর আপীল অঞ্চলের কমিশনারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মোংলা কাস্টম হাউসের কমিশনার মু. সফিউজ্জামান জানান, মোংলা কাস্টম হাউসের সরকারি অফিস ও আবাসনের ব্যবস্থা নেই। এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়েছে। লজিস্টিক সাপোর্ট বৃদ্ধির পাশাপাশি বিদ্যমান সমস্যার সমাধান চাওয়া হয়েছে। সফিউজ্জামান বলেন, আমরা ব্যবসায়ীদের বোঝানোর চেষ্টা করছি, মোংলায় দ্রুত মালামাল খালাস হয় ও চট্টগ্রামের তুলনায় পোর্ট ডেমারেজ কম। এনবিআরের পক্ষ থেকে আমদানিকৃত সব গাড়ি মোংলা বন্দর দিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান বন্দর, কাস্টমস ও ব্যবসায়ীদের সমস্যাগুলো সরেজমিনে দেখেছেন এবং সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
অপরদিকে, সভায় আয়কর ও ভ্যাট রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যা বৃদ্ধি, কমপ্লায়েন্ট করদাতাদের পাশাপাশি নন-কমপ্লায়েন্ট করদাতাদের উপর বিশেষ নজরদারি, প্রবৃদ্ধির উপর মনোনিবেশ না করে কর পরিধি বৃদ্ধির উপর মনোনিবেশ, প্রয়োজনে ৫-৬ বছর মেয়াদি প্রকল্প গ্রহণ করে আয়কর ও ভ্যাটদাতা বৃদ্ধি করা, আয়কর জমা প্রদানকারী ব্যতীত শুন্য রিটার্ন প্রদানকারীদেরকে চিহ্নিত করা এবং আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমসের চলমান প্রকল্প দ্রুততার সাথে সম্পন্নের নির্দেশনা প্রদান করেন চেয়ারম্যান।