সিএনজি বা পেট্রলচালিত অটোরিকশার চালক মিটারের বেশি ভাড়া আদায় করলে চালকের বিরুদ্ধে মামলা দিতে নির্দেশ দিয়েছে বিআরটিএ। সড়ক পরিবহন আইনে এ অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিআরটিএর পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) শীতাংশু শেখর বিশ্বাসের সই করা এক চিঠি থেকে বিষয়টি জানা যায়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনারকে চিঠিটি দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, গ্যাস বা পেট্রলচালিত ফোর-স্ট্রোক থ্রি-হুইলার অটোরিকশার জন্য সরকার নির্ধারিত মিটারের ভাড়ার হারের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগের বিষয়ে মামলা রুজু করার নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮–এর ধারা ৩৫(৩) অনুযায়ী কোনো কন্ট্রাক্ট ক্যারিজের মালিক বা চালক রুট পারমিট এলাকার মধ্যে যেকোনো গন্তব্যে যেতে বাধ্য থাকবেন এবং মিটারে প্রদর্শিত ভাড়ার অতিরিক্ত অর্থ দাবি বা আদায় করতে পারবেন না। এর ব্যত্যয় হলে আইনের ধারা ৮১ অনুযায়ী অনধিক ছয় মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং চালকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হিসাবে দোষসূচক ১ পয়েন্ট কর্তন করার বিধান রয়েছে।
বর্তমানে অটোরিকশার মালিকের জন্য দৈনিক জমা নির্ধারিত ৯০০ টাকা হলেও চালকেরা অভিযোগ করছেন, মালিকেরা দিনে দুই বেলায় ১,৬০০ থেকে ১,৮০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করেন। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরের প্রায় ২৮ হাজার অটোরিকশার জন্য পৃথক নীতিমালা রয়েছে, যেখানে ভাড়া ও দৈনিক জমা নির্ধারিত।
অটোরিকশার মালিকের জন্য দৈনিক জমা ৯০০ টাকা হলেও চালকেরা দাবি করছেন, মালিকেরা ১,৬০০ থেকে ১,৮০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করেন। বর্তমানে অটোরিকশার প্রথম দুই কিলোমিটার ভাড়া ৪০ টাকা, তবে যাত্রীদের অভিযোগ, ১৫০ টাকার নিচে স্বল্প দূরত্বে যাতায়াত সম্ভব নয়। প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ১২ টাকা নির্ধারিত হলেও তা বেশিরভাগ সময় মানা হয় না।
২০০৩ সালে চার–দলীয় জোট সরকার ঢাকা ও চট্টগ্রামে বেবিট্যাক্সি তুলে দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালু করেছিল। মূল শর্ত ছিল মিটারে নির্ধারিত ভাড়া ও যাত্রীদের চাহিদামতো গন্তব্যে চলাচল করা, তবে এসব শর্ত কখনোই মানা হয়নি। ভাড়া নির্ধারিত হয় চালকের ইচ্ছেমতো এবং অনেক সময় চালকরা নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে অনীহা দেখান। নীতিমালা অনুযায়ী, মালিকরা দৈনিক জমা নেন, আর চালকরা মিটারে নির্ধারিত ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করবেন।