একইসঙ্গে মিথ্যা ঘোষণায় মদ খালাসে সহযোগিতা করায় শিপিং এজেন্ট ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মাসুদ হাসান বাদি হয়ে এই মামলা দায়ের করেছেন। মূলত ৪ সেপ্টেম্বর রাতে এই মদ আটক করা হয়। পরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি প্রাথমিক তদন্ত শেষে জালিয়াতি করে মদ আমদানির সত্যতা পাওয়ায় ১৩ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বন্দর থানায় এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তবে মদ আমদানির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন আনিসুর রহমান সিনহা। তার দাবি, ঋণের জন্য এক বছর ধরে সুপ্রিম স্মার্টওয়্যার লিমিটেড বন্ধ রয়েছে। কারা তার প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে মদের চালান এনেছে, তা খতিয়ে দেখার দাবি তুলেছেন তিনি। গ্রুপের পক্ষ থেকে এনবিআর ও চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মামলায় আনিসুর রহমান সিনহাসহ মোট আটজনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন-সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মেসার্স হাফিজ ট্রেডিং (প্রা.) লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. খালেদ হোসেন মামুন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাফেজ মো. বাকির হোসেন, পরিচালক মো. আবদুল গফুর ভূঁইয়া, পরিচালক ইউসুফ আফজাল, রাজিব ওরফে আশরাফ হোসেন রাজু, রিপন, মিজানুর রহমান।
আরও বলা হয়েছে, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সুপ্রিম স্মার্টওয়্যার লিমিটেড চীনের জিয়াংশু হাই হোপ ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপ ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশন থেকে শতভাগ রপ্তানিকারক পোশাক শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে বন্ড সুবিধায় এক কনটেইনার ফেব্রিক্স ঘোষণায় পণ্য আমদানি করে। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বরে আমদানিকারকের মনোনীত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট হাফিজ ট্রেডিং (প্রা.) লিমিটেড থেকে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনারের কাছে গোপন তথ্য থাকায় চালানটির খালাস স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে ৪ সেপ্টেম্বর রাতে চালানের সংশ্লিষ্ট কনটেইনার বন্দর কর্তৃপক্ষের সহায়তায় ফোর্সড কিপ ডাউন করে শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করা হয়।
পরীক্ষার সময় কনটেইনারে বিদেশি জ্যাক ড্যানিয়েল, পাসপোর্ট স্কচ, সিভাস রিগ্যাল, ব্ল্যাক লেবেলসহ স্বনামধন্য বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১১ হাজার ৬৭৬ লিটার মদ পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে অসত্য ঘোষণায় মদ আমদানির মাধ্যমে প্রায় ১২ কোটি টাকার শুল্ককর ফাঁকির চেষ্টা করেছে আমদানিকারক। সুপ্রিম স্মার্টওয়্যার লিমিটেড নারায়ণগঞ্জের আদমজী ইপিজেডের একটি প্রতিষ্ঠান। ইপিজেডের প্রতিষ্ঠানের পণ্য আমদানিতে মানতে হয় বিশেষ কিছু নিয়মও। পরে এই ঘটনা তদন্ত করতে কাস্টম হাউস থেকে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। কমিটির প্রাথমিক তদন্তে জালিয়াতি করে মদ আমদানির তথ্য বেরিয়ে আসে।
***