গরীব শ্রমজীবী মানুষের খাবার পাউরুটি ও বিস্কুটের বাড়তি ভ্যাট না কমালে প্যাকেট ছোট করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এই খাতের ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, বাড়তি ভ্যাটের কারণে বাধ্য হয়ে তাদের রুটি ও বিস্কুটের প্যাকেট ছোট করতে হচ্ছে। কিন্তু প্যাকেট ছোট করার জায়গা আর নেই। এভাবে ভ্যাট চাপিয়ে দিতে থাকলে একদিন দেখা যাবে, প্যাকেট আছে, ভেতরে বিস্কুট নেই। সেজন্য দ্রুত বাড়তি ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে।
শনিবার (২৩ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএবিবিএমএ) ‘গরীবের নিত্য খাদ্য রুটি-বিস্কুটে বাড়তি ভ্যাটের প্রভাব ও প্রতিবাদ’-শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা এই দাবি জানানো হয়েছে।
সংগঠনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভূঁইয়া গরীবের খাবার রুটি ও বিস্কুটের ওপর বাজেটে বাড়তি ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত বৈষম্যমূলক ও লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করে বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের রিপোর্ট, গবেষণা প্রতিবেদন, গণমাধ্যমের খবর ও অর্থনীতিবিদদের মতামত উপেক্ষা করেই সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় এই খাবারে ভ্যাট বহাল রেখেছে। বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে কাঁচামালের দাম বেড়েছে। এর ফলে উৎপাদন খরচও বেড়েছে। তাই ভ্যাট না কমালে রুটি ও বিস্কুটের প্যাকেট ছোট করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে রুটি-বিস্কুটে ৫ শতাংশ ভ্যাট ছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তা বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করেছে। অথচ এই সময়ের মধ্যে প্যাকেট ছোট করা হয়নি, দামও বাড়ানো হয়নি। প্রত্যাশা করা হয়েছিল, নিত্যপ্রয়োজনীয় এই খাবারে ভ্যাট কমবে। তবে এবারের বাজেটে এর কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি। এতে রুটি বিস্কুটের প্যাকেট ছোট করতে হচ্ছে। কিন্তু প্যাকেট ছোট করার জায়গা আর নেই। এভাবে ভ্যাট চাপিয়ে দিতে থাকলে একদিন দেখা যাবে, প্যাকেট আছে, ভেতরে বিস্কুট নেই।
ভ্যাট না কমালে ভবিষ্যতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করে শফিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘সরকার আমাদের পণ্য ভ্যাট কমানোর দাবি না মেনে নিলে পণ্যের দাম বাড়াতে ও ওজন কমাতে বাধ্য হব। ফলে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে। তার দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সহসভাপতি শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমাদের দেশে ধনীরা কেনাকাটার জন্য সুপারশপে যায়। এবারের বাজেটে সুপারশপ থেকে ভ্যাটে ছাড় দেওয়া হলেও গরিবের খাবারে ভ্যাট বহাল রাখা হয়েছে। বিস্কুট আমাদের চাল ও ডালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। বিস্কুট হলো “কমপ্লিট ফুড”—এতে ডিম, চিনি, প্রোটিন সব আছে। এমন খাদ্যে ভ্যাট মেনে নেওয়া যায় না। ভ্যাট পুরোপুরি প্রত্যাহার করে শূন্য করতে হবে। সরকার আসলে বিস্কুট-রুটি কোম্পানিকে ব্যবহার করছে গরিব শোষণের হাতিয়ার হিসেবে। আমরা এই ভূমিকা পালন করতে চাই না।’ সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহকারী সহসভাপতি ইন্দ্রজিৎ সরকার ও কিষোয়ান ফুড ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আবদুর রহমান প্রমুখ।
** বিস্কুট, তেল, আটা-ময়দা, এলপি গ্যাসে ভ্যাট অব্যাহতি
** বিস্কুট-কেকের ভ্যাট অর্ধেক করেছে এনবিআর
** কর-ভ্যাট অপরিবর্তিত, বাড়তে পারে বিস্কুট-কেকের দাম
** ভ্যাট নিবন্ধনে রেকর্ড ১,৭২৩ নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
** ভ্যাট বাড়লেও মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব পড়বে না: এনবিআর
** শতাধিক পণ্য ও সেবায় ভ্যাট-সম্পূরক বেড়েছে
** ভুয়া সিলে পণ্য বিপণন, ‘স্বপ্নকে’ জরিমানা
** ইফাদ মাল্টির ১২৫ কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকি