ভোটকেন্দ্র স্থাপনে আর জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নেতৃত্বাধীন কমিটি থাকবে না—এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বুধবার (২১ মে) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত ইসির পঞ্চম কমিশন সভা শেষে এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
সভা শেষে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানান, সভায় ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০২৫’, ‘সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ২০২৫’ এবং ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ২০২৫’-এর নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এসব বিধিমালা ও নীতিমালা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে এবং খসড়াগুলো নীতিগতভাবে অনুমোদন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কমিটি এ বিষয়ে কাজ করে কমিশনের কাছে চূড়ান্ত প্রস্তাব উপস্থাপন করবে। তবে সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও অন্যান্য সংশোধনীর বিষয় থাকায়, চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য কিছুটা সময় লাগতে পারে।
সভার আলোচনা নিয়ে ব্রিফিংয়ে নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন আনা হয়েছে—যেখানে পূর্বের কমিটি বিলুপ্ত করে পুরো বিষয়টি কমিশনের অধীনে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ইভিএম ব্যবহার না থাকায়, ইভিএম সংক্রান্ত সব বিষয়ও বাতিল করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশন নিজের ক্ষমতা বাড়ানোর পরিবর্তে বিভিন্ন সময় উল্টো তা সীমিত করেছে। আগে জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের দায়িত্বে থাকতেন ইসির নিজস্ব কর্মকর্তারা। তবে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আউয়াল কমিশন এ দায়িত্বে পরিবর্তন এনে আলাদা কমিটি গঠন করে। মহানগর ও জেলা পর্যায়ে গঠিত কমিটির নেতৃত্বে রাখা হয় ডিসিকে এবং উপজেলা ও থানায় ইউএনওকে আহ্বায়ক করা হয়। যদিও ইসি কর্মকর্তারা এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন, তবুও তৎকালীন ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে ডিসি, ইউএনও ও পুলিশকে যুক্ত করে দুটি পৃথক কমিটি গঠন করেন। তখন উপজেলা ও থানা ভোটকেন্দ্র স্থাপন কমিটিতে ইউএনওকে আহ্বায়ক ও উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তাকে সদস্যসচিব করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি করা হয়।