ভোজ্য তেলের আমদানি পর্যায়ে বিদ্যমান ৫ শতাংশ শুল্ক এবং উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে আরোপিত মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) অব্যাহতির প্রস্তাব করেছেন ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে ভোজ্য তেল ব্যবসায়ীদের বৈঠকে এ প্রস্তাব করা হয় বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়টির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন।
এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে এনবিআরে প্রস্তাব বা সুপারিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে। পরবর্তীতে এনবিআর করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন, এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মইনুল খানসহ ভোজ্য তেল ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এই বিষয়ে এনবিআরের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আমরা ইতোমধ্যে এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছি। বিশ্লেষণ করে দেখছি, এতে ভোক্তা পর্যায়ে কী প্রভাব ফেলবে এবং এতে কী পরিমাণ রাজস্ব কমবে। যদি ভোক্তার উপকার আমরা দেখি, তাহলে আমরা এটি সমন্বয় করব।সয়াবিন আমদানিতে বিদ্যমান শুল্ক বলতে বর্তমানে আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ অগ্রিম কর ও উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে। এছাড়া আমদানি শুল্ক বলতে যা বোঝায় তথা কাস্টমস ডিউটি তা আগেই এনবিআরের তরফে শূন্য করা হয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বা রেগুলেটরি ডিউটিও নাই। তবে পাম তেলের ক্ষেত্রে কাস্টমস ডিউটি ১০ শতাংশ ছিল, যা এসআরও দিয়ে এক শতাংশে আগেই নামিয়ে আনা হয়েছে।
সূত্রমতে, আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট সবশেষ কমানো হয়েছিল চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি। রমজানকে সামনে রেখে এনবিআর প্রজ্ঞাপন দিয়ে সয়াবিন ও পাম তেলের আমদানিতে ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করেছিল তখন। এ সুবিধা ১৫ এপ্রিল শেষ হলে ভোজ্য তেল ব্যবসায়ীরা পরের দিনই কেজিতে ১০ টাকা করে দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সর্বশেষ গত ১৮ এপ্রিল সয়াবিন তেল ও পাম তেলের মূল্য সমন্বয় হয়েছিল। বিশ্ববাজারে গত কয়েকমাস ধরে ধারাবাহিকভাবে সয়াবিন তেল ও পাম তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের মূল্য ১৪ দশমিক ৮শতাংশ এবং আরবিডি পাম তেলের মূল্য ১৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। স্থানীয় পর্যায়ে মূল্য বৃদ্ধি না করে আমদানি পর্যায়ে বিদ্যমান শুল্ক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা ও স্থানীয় উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে সকল ধরনের শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে।এধরনের শুল্ক অব্যাহতির ফলে ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধি না করে বিদ্যমান মূল্য বহাল থাকবে বলে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে। এর আগে তারা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে মূল্য সমন্বয়ের আবেদন করে।