ভোজ্যতেল ও চিনি ব্যবসায় নামছে আবুল খায়ের গ্রুপ

আবুল খায়ের গ্রুপ, যা রড, সিমেন্ট, টেউটিন এবং সিরামিক উৎপাদনে পরিচিত, এখন ভোগ্যপণ্য ব্যবসায় বিনিয়োগ করছে। গত এক বছরে বন্ধ হওয়া দুটি তেল পরিশোধন কারখানা ক্রয় করে ভোজ্যতেল ব্যবসায় প্রবেশ করেছে। এখন তারা আবদুল মোমেন গ্রুপের চিনি পরিশোধন কারখানা কিনে চিনি ব্যবসায়ও বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে। এর আগে তারা চা-পাতা, কনডেন্স মিল্ক ও গুঁড়া দুধে শীর্ষ ব্রান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

এনবিআরের আমদানির তথ্যমতে,এক দশক আগে শীর্ষ পাঁচ শিল্প গ্রুপের কাছে ছিল নিত্যপণ্যের বাজারের ৭৫ শতাংশ অংশীদারি, তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই চিত্র বদলে গেছে। নতুন শিল্প গ্রুপের প্রবেশে বাজারে তীব্র প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে এবং শীর্ষস্থানেও পরিবর্তন এসেছে। ২০২৪ সালে মেঘনা গ্রুপ শীর্ষে উঠে এসেছে, সিটি গ্রুপ দ্বিতীয় অবস্থানে নেমেছে, আর এস আলম ও বসুন্ধরা গ্রুপ শীর্ষ পাঁচের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। এখন বাজারের ৬০ শতাংশ অংশীদারি রয়েছে পাঁচটি শীর্ষ গ্রুপের। এ সময় বড় বিনিয়োগ শুরু করেছে প্রাণ-আরএফএল, আবুল খায়ের গ্রুপের সহযোগী স্মাইল ফুড, আকিজ গ্রুপ, টিকে গ্রুপ ও অন্যান্য নতুন প্রতিষ্ঠিত গ্রুপগুলো।

আবুল খায়ের গ্রুপের প্রতিষ্ঠান স্মাইল ফুড প্রোডাক্টস ভোগ্যপণ্য ব্যবসায় বিনিয়োগ বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রায় দুই দশক ধরে নিত্যপণ্য আমদানিতে যুক্ত ছিল, এবং শুরুর দিকে পরিশোধিত তেল, চিনি, ডাল ও গম আমদানিতে সীমাবদ্ধ ছিল। ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে ভোজ্যতেল বাজারে যুক্ত হওয়ার পর এটি গ্লোব, এমইবি গ্রুপ ও এসএ গ্রুপের পরিশোধন কারখানা ভাড়া করে কাজ শুরু করে। এখন প্রতিষ্ঠানটি নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে ভোজ্যতেল ও চিনি পরিশোধন কারখানায় বিনিয়োগ করছে। স্মাইল ফুড প্রোডাক্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে, প্রতিষ্ঠানটির হিসাব বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা পরিশোধনকৃত ভোজ্যতেল ও চিনির ব্যবসায় বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে এবং বর্তমানে চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জে তাদের চারটি ভোজ্যতেল ও একটি চিনি পরিশোধন কারখানায় বিনিয়োগ চলমান।

ভোক্তা ও বাজার বিশ্লেষকদের মতে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশে উৎপাদন কম হলেও পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকে এবং অতিরিক্ত পণ্যে বাজার সয়লাব থাকে। এ কারণে আমাদের নিত্যপণ্যের বাজারে আমদানিকারক ও উৎপাদক বাড়ানোর প্রয়োজন। এতে বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়বে, সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে এবং ভোক্তারা প্রতিযোগিতামূলক দামে পণ্য কিনতে পারবেন। এছাড়া, প্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকে থাকার জন্য পণ্যের গুণগত মানেও মনোযোগ দিতে হবে। সরকারকে ভোক্তাস্বার্থ ও প্রতিযোগিতামূলক বাজার সৃষ্টির জন্য আইনি কাঠামো সংস্কার করা প্রয়োজন, যাতে আরও বেশি কোম্পানি বাজারে আসতে পারে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!