নোয়াখালীতে ভারী বৃষ্টিতে জলাবদ্ধ এলাকাগুলোতে আবারও পানি বেড়েছে, ফলে জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষজন চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় অনেকেই বন্যার আশঙ্কায় রয়েছেন। ৭ জুলাই থেকে টানা অতি ভারী বৃষ্টির পর শুক্র ও শনিবার সাময়িক বিরতি মিললেও রোববার রাতে ফের মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ শুরু হয়। সোমবার (১৪ জুলাই) সকালে মাইজদী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় মাইজদী কোর্ট স্টেশনে ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, লঘুচাপের প্রভাবেই এই বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পৌর এলাকা ও আশপাশের কিছু উঁচু জায়গা থেকে আগের বৃষ্টির পানি কিছুটা নামলেও রোববার রাতের বৃষ্টিতে আবারও জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে সদর, কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ ও বেগমগঞ্জ উপজেলার বহু গ্রামীণ সড়ক এখনো কয়েক ফুট পানির নিচে তলিয়ে আছে। অনেক বাড়ির আঙিনায় হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি জমে রয়েছে। দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতার ফলে এসব এলাকার মানুষ কার্যত গৃহবন্দী হয়ে পড়েছেন।
খাল ও ড্রেনের মাধ্যমে সঠিকভাবে পানি অপসারণ না হওয়ায় জলাবদ্ধতা আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ পরিস্থিতিতে জলাবদ্ধতা নিরসনে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। রোববার সদর উপজেলার কালাদরাপ ইউনিয়নের মুন্সীতালুক থেকে চর মটুয়া ইউনিয়নের উদয় সাধুর হাট পর্যন্ত খালের ওপর গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহনেওয়াজ তানভীর। সোমবার সকাল থেকে উচ্ছেদ কার্যক্রমের বাকি অংশে আবারও অভিযান শুরু হয়। এ কাজে সহায়তা করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, আনসার বাহিনী, মৎস্য অধিদপ্তর, এলজিইডি, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বন বিভাগসহ স্থানীয় জনগণ।
এদিকে দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে জামায়াতে ইসলামী নোয়াখালী জেলা শাখা। কর্মসূচি শেষে আন্দোলনকারীরা জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতের আমির ইসহাক খন্দকার।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ জানান, অতিবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে জেলার ৫৭টি ইউনিয়নে প্রায় ৯০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখনো ২৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১ হাজারের বেশি মানুষ এবং শতাধিক গৃহপালিত পশু আশ্রয় নিয়েছে। প্রাথমিক হিসেবে জানা গেছে, অর্ধশতাধিক বাড়িঘর, সাড়ে সাত হাজার একর ফসলি জমি, প্রায় ৯ হাজার গবাদিপশু এবং ৪০ হাজার মাছের খামার ক্ষতির মুখে পড়েছে।
**বাঁধের ১৭ স্থান ভাঙনে ৩০ গ্রাম প্লাবিত, যোগাযোগ বন্ধ
**ভারি বর্ষণ ও জোয়ারে বরিশাল-ভোলা প্লাবিত