প্রবল বর্ষণ ও জোয়ারের প্রভাবে বরিশালের উপকূলীয় অঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তীরবর্তী বিচ্ছিন্ন চরগুলো পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ভোলার মনপুরা উপজেলার প্রায় পুরো এলাকা পানিতে ডুবে গেছে। এছাড়াও তজুমদ্দিন ও দৌলতখান উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ভোলা জেলা প্রশাসন।
ভোলায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) পরিদর্শক মো. জসিম উদ্দিন জানান, উপকূলীয় এলাকায় চলাচলকারী সব লঞ্চ চলা বন্ধ রয়েছে। বিশেষ করে হাতিয়া, লক্ষ্মীপুর, দৌলতখান ও বেতুয়াসহ ১০টি রুটের ১৩টি সি-ট্রাক বন্ধ রয়েছে।
ভোলার জেলা প্রশাসক আজাদ জাহান জানিয়েছেন, জেলার নিম্নাঞ্চল, বিশেষ করে বোরহানউদ্দিন, তজুমদ্দিন ও মনপুরা উপজেলার অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ভাটার জন্য অপেক্ষা করছি। আশা করছি, অধিকাংশ পানি নেমে যাবে। এখনো পরিস্থিতি মারাত্মক নয়, তবে আমরা নিয়মিত পর্যবেক্ষণে আছি।’
মনপুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিখন বণিক জানান, উপজেলার তিনটি স্থানে পুরোনো ভাঙা বাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি সরানোর জন্য তিনটি পাম্প বসানো হয়েছে। এদিকে, প্রবল বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে ভোলা সদরের ৯ নম্বর চরনাবাদ মাঝি বাড়ি এলাকার বেশিরভাগ ঘরবাড়ি ডুবে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
বরিশাল নগরীর অধিকাংশ নিচু এলাকা দুই থেকে তিন ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, বিশেষ করে বটতলা রোড, গোরস্থান রোড, কলেজ অ্যাভিনিউ ও আমানতগঞ্জ এলাকা পানির নিচে রয়েছে। নগরীর প্রধান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রবল বর্ষণে সরকারি বিএম কলেজ সম্পূর্ণ ডুবে গেছে। এছাড়াও, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ আরও বেশ কয়েকটি বিদ্যালয় পানিতে তলিয়ে রয়েছে।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিভাগের নদ-নদীর পানি আগের চেয়ে বেড়েছে। প্রবল বর্ষণের পাশাপাশি জোয়ার ও পূর্ণিমার প্রভাবেই এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তিনি জানান, মেঘনা নদী তজুমদ্দিন পয়েন্টে বিপৎসীমার চেয়ে চার সেন্টিমিটার বেশি পানি প্রবাহিত হচ্ছে।