চাঁদপুরে অগ্রণী ব্যাংকের ক্যাশ কর্মকর্তা দীপঙ্কর ঘোষ ব্যাংকের ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগে দুদক মামলা করেছে। তিনি মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর বাজার শাখায় কর্মরত ছিলেন।
গত সোমবার দুদক চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আজগর হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ক্যাশ কর্মকর্তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
মামলার বিবরণে বলা হয়, অগ্রণী ব্যাংকের ছেংগারচর বাজার শাখার ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া টাকা আত্মসাতের ঘটনায় মতলব উত্তর থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগের রেকর্ডপত্র থানা থেকে পাঠানো হয় দুদক কার্যালয়ে। অভিযোগের প্রেরিত রেকর্ডপত্র তথ্যাদির আলোকে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়।
মামলার বাদি বলেন, মামলার রেকর্ডপত্র ও তথ্যাদির পর্যালোচনা করে অগ্রণী ব্যাংক ছেংগারচর বাজার শাখার অফিসার (ক্যাশ) দীপঙ্কর ঘোষ কর্তৃক ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে দণ্ডবিধির ৪০৯ ও ৪২০ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
এর আগে, গত বছর ১ সেপ্টেম্বর অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মতলব উত্তর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন, যেখানে উল্লেখ করা হয় যে, ক্যাশ কর্মকর্তা দীপঙ্কর ঘোষ ২৯ আগস্ট ব্যাংকে না আসায় তাকে ফোন করা হয়। তিনি জানান, তার বাবা অসুস্থ, তবে পরে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ওইদিন তার স্ত্রী আঁখি সাহাকে ফোন করলে তিনি জানান, দীপংকর অফিসের উদ্দেশে ঢাকার বাসা থেকে বের হয়ে গেছেন।
সেদিন বিকেলেও দীপংকর ব্যাংকে উপস্থিত হননি। ফলে ব্যাংকের ভল্ট খোলা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে তার আচরণ সন্দেহজনক হলে ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
শাখা ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া জানান, দীপঙ্কর ঘোষের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা ব্যর্থ হলে, ৩০ আগস্ট তিনি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শে মতলব উত্তর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ১ সেপ্টেম্বর থানায় অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও পুলিশের উপস্থিতিতে মিস্ত্রি দ্বারা ভল্টের গ্রিল কাটা হয়। পরে চাঁদপুরের প্রধান শাখায় রক্ষিত ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে ভল্ট খোলা হলে সেখানে ২৭ লাখ ৭৯ হাজার ৬৮ টাকা ৭১ পয়সা পাওয়া যায়।
ব্যাংকের ক্যাশ পজিশন অনুযায়ী এক কোটি দুই লাখ ৯৯ হাজার ৬৮ টাকা ৭১ পয়সা ছিল। হিসেব অনুযায়ী গণনাকালে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা কম পাওয়া যায়।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, দীপঙ্কর ঘোষ গত কয়েক দিন কাঁধে একটি ব্যাগ নিয়ে আসা-যাওয়া করছিলেন এবং ক্যাশ অফিসার হিসেবে ভল্টের একটি চাবি তার কাছে ছিল। কৌশলে তিনি ওই চাবি ব্যবহার করে টাকা আত্মসাৎ করেন।