** বর্তমানে ব্যাংকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত জমা রাখলে কোন আবগারি শুল্ক দিতে হয় না
বর্তমানে এক লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংক জমায় আবগারি শুল্ক দিতে হয় না। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে এক লাখ টাকার পরিবর্তে এই হার তিন লাখ টাকা করা হচ্ছে। ফলে কোন গ্রাহকের ব্যাংকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত গচ্ছিত থাকলে তার উপর কোন আবগারি শুল্ক দিতে হবে না। তবে আবগারি শুল্কের অন্যান্য স্তর ও হারের আর কোনো পরিবর্তন হবে না। এনবিআর কর্মকর্তারা বলছেন, মূলত ছোট আমানতকারীদের সুরক্ষা দিতে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত আবগারি শুল্ক শূন্য করা হচ্ছে। বর্তমান লাখ লাখ ক্ষুদ্র বা ছোট আমানতকারী অন্য কোথাও টাকা না রেখে ব্যাংকে রাখে। ব্যাংক নির্ভরতা বাড়ানো ও মানুষের মধ্যে সঞ্চয়ের মনোভাব তৈরি করার অংশ হিসেবে সরকার আগামী অর্থবছর এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
সূত্রমতে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছর ব্যাংকে জমা টাকার ওপর আবগারি শুল্কের স্তর ও হারে পরিবর্তন আনা হয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছর ছয়টি স্তরে আবগারি শুল্ক আদায় করা হতো। সর্বশেষ ২০২৪-২৫ অর্থবছর আটটি স্তর করা হয়। সে অনুযায়ী, বর্তমানে এক লাখ পর্যন্ত ব্যাংক হিসাবের স্থিতিতে কোনো আবগারি শুল্ক দিতে হয় না। আবার ১ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ১৫০ টাকা এবং ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ৫০০ টাকা আবগারি শুল্ক দিতে হয়।
১০ লাখ টাকা থেকে ১ কোটি টাকার যে স্তর রয়েছে, সেটি ভেঙে দুটি স্তর করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ১০ থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত গচ্ছিত টাকায় আগের মতোই ৩ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক নির্ধারণ করা হয়। আর ৫০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত আমানতে ৩ হাজার টাকার পরিবর্তে ৫ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক বসানো হয়েছে। এ ছাড়া ১ থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত বিদ্যমান স্তরটিও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ১ থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত ১০ হাজার টাকা এবং ২ কোটি টাকা থেকে ৫ কোটি পর্যন্ত ২০ হাজার টাকা শুল্ক বসানো হয়েছে। এর আগে ১ কোটি টাকা থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত আমানতে ১৫ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক দিতে হতো।
এই বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের একজন কর্মকর্তা বিজনেস বার্তাকে বলেন, গত কয়েক বছরে ব্যাংক একচেঞ্জ রেট বা ডলারের দাম ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে এলসি খোলার হার কমে যাচ্ছে। ফলে ব্যাংকিং খাতের রাজস্ব প্রবৃদ্ধি আশানুরূপ হচ্ছে না। ব্যাংকিং খাতের প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির জন্য আবগারি শুল্কহার বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। ২০২২, ২০২০, ২০১৭, ২০১৫ ও ২০১০ সালে ব্যাংক ডিপোজিট ও বিমান টিকেটে আবগারি শুল্কহার পরিবর্তন বা সংশোধন করা হয়েছিলো। অপেক্ষাকৃত কম টাকার হিসাবধারীদের কিছুটা স্বস্তি দেওয়ার জন্য এবার তিন লাখ টাকা পর্যন্ত আবগারি শুল্ক শূন্য করা হচ্ছে। আবগারি শুল্কের এই সীমা বাড়ানো ছাড়া অন্য কোন স্তরে পরিবর্তন আসছে না।
প্রতিবছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে কোনো ব্যাংক হিসাবে আমানতের পরিমাণ যদি একবার এক লাখ টাকা বা তার ওপরের স্তরগুলোর সীমা স্পর্শ করে-তাহলে নির্দিষ্ট হারে আবগারি শুল্ক দিতে হয়। একাধিকবার স্পর্শ করলেও একবারই আবগারি শুল্ক কাটা হয়। কোনো হিসাবে এক লাখ টাকার কম থাকলে কোনো আবগারি শুল্ক কাটা হয় না। এখন তিন লাখ টাকা বা তার ওপরের স্তরগুলোর সীমা স্পর্শ করলে আবগারি শুল্ক দিতে হবে।
** কাস্টমসে মিথ্যা-ভুল ঘোষণার জরিমানা অর্ধেক হচ্ছে
** আসন্ন বাজেটে যেসব পরিবর্তন আসতে পারে