সরকার এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি ও শাটডাউন কর্মসূচির ফলে সৃষ্ট সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে তথ্য চেয়েছে। সে জন্য বুধবার (৬ আগস্ট) অর্থ মন্ত্রণালয় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইকে চিঠি পাঠায়। এরপর এফবিসিসিআই সব ব্যবসায়ী চেম্বার ও সমিতিকে আলাদা করে চিঠি দিয়ে জানাতে বলে, এই কর্মসূচির ফলে কী ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং সেই ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ কত।
চিঠিতে বলা হয়েছে, এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা—এই দুটি বিভাগ গঠনের জন্য জারি করা অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে গত মে ও জুন মাসে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতি ও শাটডাউন কর্মসূচি পালন করেন। এর ফলে শিল্প, বিনিয়োগ, ব্যবসা-বাণিজ্য, বন্দর, আমদানি-রপ্তানি, উৎপাদন, সেবা খাত, লজিস্টিক ও সাপ্লাই চেইনের কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে। বিশেষ করে আমদানিকারকেরা শিল্পের কাঁচামাল ও উপকরণ এবং প্রস্তুত পণ্য সময়মতো বন্দর থেকে খালাস করতে পারেননি, আর রপ্তানিকারকেরা সময়মতো পণ্য রপ্তানি করতে ব্যর্থ হন। এতে সরকারের রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
এর আগে গত মাসে এনবিআর কর্মসূচির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে সরকার একটি কমিটি গঠন করে। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) যুগ্ম সচিব সৈয়দ রবিউল ইসলামকে আহ্বায়ক করে গঠিত ৯ সদস্যের এই কমিটিতে অর্থ বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, এনবিআর, আইআরডি, এফবিসিসিআই এবং বিজিএমইএর প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
কমিটির দায়িত্ব হলো—গত ২৮ ও ২৯ জুন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস বন্ধ থাকার কারণে রাজস্ব কতটা কমেছে, তা নির্ধারণ করা। পাশাপাশি শুল্ক, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুই মাসব্যাপী কর্মসূচির ফলে দেশের সব কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, কাস্টম হাউস, বন্ড কমিশনারেট এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও কর কার্যালয়ে রাজস্ব ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করাও এই কমিটির কাজ। এ ছাড়া কর্মসূচির কারণে শুল্কায়ন কার্যক্রম, স্থলবন্দর ও নৌবন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা নির্ধারণ করাও কমিটির দায়িত্বের মধ্যে পড়ছে।
গত ১২ মে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা—এই দুটি নতুন বিভাগ গঠনের অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এর পর থেকেই যৌক্তিক ও অংশীজনভিত্তিক সংস্কারের দাবিতে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রায় দুই মাস আন্দোলন চালিয়ে যান। ২৮ ও ২৯ জুন তাঁরা দেশজুড়ে সব ধরনের কাজ বন্ধ রাখেন। পরে ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন প্রত্যাহার করেন। এরপর আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
** বদলির আদেশ ছিঁড়ে প্রতিবাদ, ২৫-২৬ কলম বিরতি
** ‘এনবিআর আন্দোলনকে সরকারবিরোধী রূপ দেয়ার ষড়যন্ত্র ছিল’
** এনবিআরের পুরো বোর্ড বাদ দিতে চেয়েছিল সরকার
** এনবিআরের দুই শতাধিক কর্মকর্তা ক্ষমা চেয়েছেন
** এনবিআরের আরও ৫ কর্মকর্তার দুর্নীতি অনুসন্ধানে
** শাটডাউন ও মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি প্রত্যাহার
** এনবিআর সংকট নিরসনে ৫ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি গঠন
** এনবিআর কর্মকর্তাদের দুর্নীতি প্রকাশের পরিকল্পনা
** মার্চ টু এনবিআর স্থগিত
** এনবিআরে দ্বিতীয় দিনেও চলছে শাটডাউন কর্মসূচি
** শাটডাউন ও মার্চ টু এনবিআর চলমান থাকবে
** এনবিআর আন্দোলন, রাতের মধ্যেই সমাধানের আশা
** অবরুদ্ধ এনবিআর, মুখোমুখি অবস্থান
** এনবিআর আন্দোলনে আওয়ামী ঘনিষ্ঠদের ইন্ধনের সন্দেহ
** আলোচনা প্রত্যাখ্যান, মার্চ-টু-এনবিআর ঘোষণা
** এনবিআর ইস্যুতে বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসছে সরকার
** বিএনপির নাম ভাঙিয়ে এনবিআরে আন্দোলন হচ্ছে
** ২৩ জুন কলম বিরতি, ৯-১২টা পর্যন্ত এনবিআরে অবস্থান
** সারা দেশে এনবিআর কর্মকর্তাদের কলমবিরতি
** এনবিআর সংস্কার সমন্বয় করতে ছয় সদস্যের কমিটি
** ভ্যাট-কাস্টমস-করে কমপ্লিট শাটডাউনের হুঁশিয়ারি
** সমঝোতায় এনবিআর, কর্মসূচি স্থগিত হচ্ছে!
** ‘সব কিছু ভুলে গিয়ে আমরা রাষ্ট্রীয় স্বার্থে কাজ করবো’
** ভুয়া স্ক্রিনশট ছড়ানো, ব্যবস্থা নেবে এনবিআর
**কলম বিরতিতে রাজস্ব ক্ষতি ১১ হাজার কোটি
**এনবিআর আন্দোলনে জুনে রাজস্ব আদায়ে বড় ধস