বার্তা প্রতিবেদক: বিড়ি শিল্প বন্ধে বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানি ও দেশিয় চক্রান্তকারীদের প্রতিহত করা এবং আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে বিড়িতে শুল্ক কমানোসহ পাঁচ দফা দাবিতে বিড়ি শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ মে) সকাল ১১ টায় সিরাজগঞ্জ স্বাধীনতা চত্বর পৌর মুক্তমঞ্চে সিরাজগঞ্জ জেলা বিড়ি শ্রমিক ইউনিয়নের আয়োজনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে আগামী বাজেটে বিড়িতে শুল্ক কমানো, বিড়ির উপর অর্পিত অগ্রিম ১০ শতাংশ আয়কর প্রত্যাহার, সরেজমিনে পরিদর্শন ব্যতিরেকে বিড়ি কারখানার লাইসেন্স প্রদান বন্ধ করা, কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে নকলবাজদের আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহন এবং বিড়ি শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করার দাবি জানান শ্রমিকরা। সমাবেশ শেষে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন শ্রমিক নেতারা।
বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাসনাত লাভলুর সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিরাজগঞ্জ জেলা বিড়ি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হাজী মো. আব্দুর রাজ্জাক। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব এ্যাডভোকেট কে এম হোসেন আলী হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদার, বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এম কে বাঙ্গালী, কার্যকরী সভাপতি আমিন উদ্দিন (বিএসসি), সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল গফুর প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, “দেশের প্রাচীন শ্রমঘন বিড়ি শিল্পে সমাজের অসহায়, হতদরিদ্র, স্বামী পরিত্যক্তা, নদী ভাঙ্গন কবলিত জনগণ, শারীরিক বিকলাঙ্গসহ লক্ষ লক্ষ সুবিধা বঞ্চিত শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। বিগত কয়েক দশক ধরে দেশের প্রাচীন শ্রমঘন এ শিল্পটি ধ্বংসের চক্রান্ত করা হচ্ছে। ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি (বিএটিবি) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা বিড়ি শিল্প ধ্বংসের চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছেন। তারা বিড়ির উপর ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মাত্রাতিরিক্ত করের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। বিড়ি মালিকরা এই মাত্রাতিরিক্ত করের বোঝা সহ্য করতে না পেরে কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে বিড়ি কারখানায় নিয়োজিত শ্রমিকরা কর্ম হারিয়ে পরিবার নিয়ে অনাহারে, অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে। শুল্ক বৃদ্ধি হওয়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা শুল্ক ফাঁকি দিতে জালব্যান্ডরোল ও ব্যান্ডরোলবিহীন নকল বিড়ি তৈরি করে বাজারজাত করছে। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।”
বক্তারা আরো বলেন, “বিড়ি শিল্প দেশীয় শ্রমিকবান্ধব শিল্প। বিড়ি শতভাগ দেশীয় প্রযুক্তি নির্ভর শিল্প। এতে ব্যবহৃত সকল কাঁচামাল দেশেই উৎপাদিত। অন্যদিকে সিগারেটের সবকিছু বিদেশ থেকে আমদাদিকৃত ও প্রযুক্তি নির্ভর। বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানী এদেশের মানুষের ফুসফুস পুড়িয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করছে। ব্রিটিশ বেনিয়াদের দোসর ও নব্য মীরজাফর আত্মা এবং প্রজ্ঞা বিড়ি শিল্প ও শ্রমিক ধ্বংস করতে বিভিন্ন অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি বিড়ি শ্রমিকদের নিয়ে গবেষণার নামে তারা বহুজাতিক কোম্পানির সাজানো নাটকের মঞ্চায়ন করে মনগোড়া ফল প্রকাশের মাধ্যমে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। বিড়ি শিল্প ধ্বংসের চক্রান্ত বন্ধ করা না হলে আমরা শ্রমিকদের নিয়ে সকল চক্রান্ত প্রতিহত করবো।”