ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পর বিশ্ববাজারে তেলের পাশাপাশি সোনার দামও কমে গেছে। সাধারণত বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার সময় নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনার দাম বাড়ে। তবে ১২ দিনব্যাপী এই সংঘাতের সময় সোনার মূল্য তেমন বাড়েনি। মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিশ্ববাজারে স্পট সোনার দাম ১ দশমিক ৪ শতাংশ কমে আউন্সপ্রতি ৩,৩১৯ দশমিক ৯৬ ডলারে নেমে আসে। একপর্যায়ে এই দরপতন ২ শতাংশের বেশি হয়, যা ৯ জুনের পর সোনার সর্বনিম্ন মূল্য। একই দিনে মার্কিন গোল্ড ফিউচারসের দাম ১ দশমিক ৮ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৩,৩৩৩ দশমিক ৯ ডলারে।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা প্রশমিত হওয়ায় সোনার দামে সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়েছে। বিনিয়োগকারীরা এখন নিরাপদ সম্পদের বদলে ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগে ঝুঁকছেন। বিশ্লেষকদের মতে, সোনার দাম যদি আউন্সপ্রতি ৩,৩০০ ডলারের আশপাশে থাকে, তাহলে বাজারে বেচাকেনা বাড়বে। আর যদি তা ৩,২৫০ ডলারে নেমে আসে, তাহলে আরও বেশি বিনিয়োগকারী আগ্রহ দেখাবেন।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রে মোট ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট সুদহার কমতে পারে, যার মধ্যে অক্টোবরেই ২৫ ভিত্তি পয়েন্ট কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে। সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের নীতি সুদহার কমলে সোনার দাম বাড়ে, কারণ সোনা নিজে থেকে কোনো সুদ দেয় না, ফলে সুদের হার কমলে এটি তুলনামূলকভাবে আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।
গতকাল রুপার দামেও পতন দেখা গেছে। স্পট মার্কেটে রুপার দাম ০.৮ শতাংশ কমে আউন্সপ্রতি ৩৫.৮৩ ডলারে নেমে এসেছে, যা ৫ জুনের পর সর্বনিম্ন। অপরদিকে, প্লাটিনামের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,৩১৪.৯১ ডলারে, তবে প্যালাডিয়ামের দাম কমে এসেছে ১,০৬১.৯০ ডলারে।
বিশ্ববাজারের দামের সঙ্গে সমন্বয় করে দেশের বাজারেও সোনার দাম পরিবর্তন করা হয়। বিশ্ববাজারে দরপতনের কারণে গতকাল সোনার দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দেশের সোনা ব্যবসায়ীরা। এতে প্রতি ভরিতে সর্বোচ্চ ১,৬৬৮ টাকা কমানো হয়েছে। ফলে ২২ ক্যারেট মানের প্রতি ভরি সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭২ হাজার ৮৬০ টাকা। এই দাম বুধবার (২৫ জুন) থেকে কার্যকর হয়েছে।