** হজে গমনকালে প্রত্যেক হজযাত্রীকে ২ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক ও ফির উপর ৪৩২ টাকা ভ্যাট দিতে হয়
উড়োজাহাজের ভাড়া প্রতিনিয়ত বৃদ্ধির কারণে পবিত্র হজ পালনের ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের জন্য হজ পালন ব্যয়বহুল ও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। বিমান টিকেটের সঙ্গে যুক্ত হয় আবগারি শুল্ক। এছাড়া রয়েছে এম্বারকেশন ফি, যাত্রী নিরাপত্তা ফি ও এয়ারপোর্ট নিরাপত্তা ফি এর উপর ভ্যাট। একজন হজযাত্রীর বিমান ভাড়ার আবগারি শুল্ক ও ভ্যাট হিসেবে মোট ২ হাজার ৪৩২ টাকা দিতে হয়। সরকার হজের ব্যয় কমানোর বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে বিমান টিকেটের উপর আবগারি শুল্ক ও ভ্যাট অব্যাহতি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সোমবার এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান সই করা বিশেষ আদেশ জারি করা হয়েছে। এর আগে ধর্ম মন্ত্রণালয় আবগারি শুল্ক ও ভ্যাট অব্যাহতি দিতে এনবিআরকে চিঠি দিয়েছে। এই নিয়ে ২৫ অক্টোবর দৈনিক শেয়ার বিজে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে এই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বিশেষ আদেশে বলা হয়েছে, সৌদি আরব গমনকারী হজযাত্রীদের বিমান টিকেটের উপর প্রযোজ্য আবগারি শুল্ক এবং এম্বারকেশন ফি (বিডি), যাত্রী নিরাপত্তা ফি (পি৭), এয়ারপোর্ট নিরাপত্তা ফি (পি৮) এর উপর ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
আরও বলা হয়েছে, উড়োজাহাজের ভাড়া প্রতিনিয়ত বৃদ্ধির কারণে পবিত্র হজ পালনের ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের জন্য হজ পালন ব্যয়বহুল ও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। হজ পালন সংক্রান্ত ব্যয়ের ক্ষেত্রে বিমান টিকেটের ভাড়া একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। বিমান টিকেটের উপর প্রযোজ্য আবগারি শুল্ক এবং এম্বারকেশন ফি, যাত্রী নিরাপত্তা ফি ও এয়ারপোর্ট নিরাপত্তা ফি এর উপর ভ্যাট হ্রাস বা অব্যাহতি প্রদান করা হলে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের হজ পালন ব্যয় সাশ্রয়ী ও সহজ হবে। সেজন্য হজ পালনে ব্যয় সাশ্রয়ের বৃহত্তর উদ্দেশ্যে সরকারের গৃহীত অগ্রাধিকার নীতির আলোকে ‘এক্সাইজ এন্ড সল্ট এক্ট, ১৯৪৪’ অনুযায়ী ২০২৫ সালে হজ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব গমনকারী হজযাত্রীদের বিমান টিকেটের উপর প্রযোজ্য আবগারি শুল্ক; মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ অনুযায়ী এম্বারকেশন ফি, যাত্রী নিরাপত্তা ফি ও এয়ারপোর্ট নিরাপত্তা ফি এর উপর প্রযোজ্য ভ্যাট অব্যাহতি প্রদান করা হলো।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, হজযাত্রীরা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে হজে গমন করে থাকেন। হজে গমনকালে প্রত্যেক হজযাত্রীকে এক্সাইজ ডিউটি বাবদ ২ হাজার টাকা এবং ১৫ শতাংশ ভ্যাট (সব ধরনের ব্যয়ের ওপর) বাবদ ৪৩২ টাকাসহ মোট ২ হাজার ৪৩২ টাকা কর দিতে হয়। পূর্ণ কোটায় হজযাত্রী প্রেরণ এবং বর্তমান সরকারের হজের বায় হ্রাসের মহতী উদ্যোগকে সফল করার জন্য এই কর মওকুফ করা প্রয়োজন। সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও সরকারের হজের ব্যয় হ্রাসের অভিপ্রায় বাস্তবায়নের স্বার্থে হজযাত্রীদের বিমানবন্দরে প্রদেয় ২ হাজার ৪৩২ টাকা মওকুফের অনুরোধ করা হলো।
গত বুধবার আগামী বছর যারা সরকারিভাবে হজে যেতে চান, তাদের জন্য দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে সাধারণ প্যাকেজ-১ এর সর্বনিম্ন খরচ ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা। মক্কা থেকে তিন কিলোমিটার দূরে আজিজিয়ায় বাড়ি ভাড়া করে সেখানে রাখা হবে হজ যাত্রীদের। এই প্যাকেজের বাইরে এবার যাত্রীদেরকে ৪০ হাজার টাকা আলাদা নিতে হবে। যারা সাধারণ প্যাকেজ-২ নেবেন, তাদের দিতে হবে সর্বনিম্ন ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা। গত বছর সাধারণ প্যাকেজে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা খরচ হয়েছিল।খাবারের টাকাও প্যাকেজে ধরা ছিল। গত বছর হজে যেতে একটি ষ্পেশাল প্যাকেজ ছিল, সেটি এবার রাখা হয়নি। তবে অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে মক্কা ও মদিনার বাড়ি বা হোটেলে ২, ৩ ও ৪ সিটের রুম এবং শর্ট প্যাকেজের সুবিধা গ্রহণ করা যাবে। ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন গত ৩০ অক্টোবর বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে নির্বাহী কমিটির সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘হজ প্যাকেজ-২০২৫’ ঘোষণা করেন।